০৮ নভেম্বর ২০২৫, শনিবার, ২১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইলন মাস্ক এতো টাকা দিয়ে কী করেন? এক ধনকুবেরের সাধারণ জীবনের গল্প

মোক্তার হোসেন মন্ডল
  • আপডেট : ৮ নভেম্বর ২০২৫, শনিবার
  • / 68

 

বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্কের সম্পদের পরিমাণ প্রায় অর্ধ ট্রিলিয়ন ডলার, অর্থাৎ ৫০০ বিলিয়নেরও বেশি। টেসলা, স্পেসএক্স, নিউরালিঙ্ক ও এক্স (সাবেক টুইটার)-এর মতো প্রতিষ্ঠানের মালিক এই ধনকুবেরের জীবনযাপন কিন্তু আশ্চর্যভাবে সরল।

২০২১ সালে মাস্ক জানান, তিনি টেক্সাসে মাত্র ৫০ হাজার ডলারের একটি ছোট ঘরে থাকেন, যা স্পেসএক্সের লঞ্চ সাইট স্টারবেসের কাছেই। সাবেক সঙ্গিনী গায়িকা গ্রাইমস বলেছিলেন, বিলাসবহুল জীবন নয়, বরং প্রায় দারিদ্র্যসীমার নিচে জীবনযাপন করেন মাস্ক। এমনকি ম্যাট্রেস ছেঁড়া হলেও তিনি নতুনটি কেনেননি।

তবে গাড়ির প্রতি মাস্কের ভালোবাসা প্রবল। তার সংগ্রহে আছে ফোর্ড মডেল টি, জাগুয়ার ই-টাইপ রোডস্টার, ম্যাকল্যারেন এফ-ওয়ান, এবং টেসলা রোডস্টার, যেটি তিনি মহাকাশে পাঠিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনায় আসেন। এছাড়া তার রয়েছে ১৯৭৬ সালের লোটাস এসপ্রিট সাবমেরিন কার, যা জেমস বন্ডের সিনেমায় ব্যবহৃত হয়েছিল।

রিয়েল এস্টেটের প্রতি আগ্রহ একসময় ছিল প্রবল। ক্যালিফোর্নিয়ার বেল-এয়ার এলাকায় সাতটি বাড়ি কিনেছিলেন মাস্ক, যেগুলিতে ছিল সুইমিং পুল থেকে ব্যক্তিগত লাইব্রেরি পর্যন্ত সবই। কিন্তু ২০২০ সালে তিনি ঘোষণা দেন—সব সম্পত্তি বিক্রি করে দেবেন, কারণ “সম্পত্তি মানুষকে ভারাক্রান্ত করে তোলে।” তিনি শেষ পর্যন্ত বাড়িগুলো বিক্রি করেন, এমনকি অভিনেতা জিন ওয়াইল্ডারের বাড়িও।

মাস্ক প্রায়ই বন্ধুদের বাড়িতে থাকেন। “আমি যদি বে এরিয়ায় যাই, বন্ধুদের অতিরিক্ত ঘরে থাকি,”—বলেছিলেন তিনি। এমনকি গুগলের প্রাক্তন সিইও ল্যারি পেজ একবার তাকে ‘বাস্তুহীন’ বলেও উল্লেখ করেছিলেন।

যদিও স্থাবর সম্পত্তিতে আগ্রহ হারালেও আকাশে উড়তে মাস্ক আগ্রহী। তার কাছে আছে কয়েকটি গালফস্ট্রিম জেট, যেগুলোর প্রতিটির দাম কয়েক কোটি ডলার। মাস্কের দাবি, এগুলো তার সময় বাঁচায় এবং কাজের দক্ষতা বাড়ায়।

সম্প্রতি মাস্কের জন্য ১ ট্রিলিয়ন ডলারের পারিশ্রমিক প্যাকেজ অনুমোদন পায় টেসলার শেয়ারহোল্ডারদের সভায়,যা ইতিহাসে নজিরবিহীন। তবে এই প্যাকেজ পেতে হলে আগামী ১০ বছরে টেসলার বাজারমূল্য বিপুলভাবে বাড়াতে হবে তাকে।

দানশীলতার ক্ষেত্রেও বিতর্ক রয়েছে। তিনি তার মাস্ক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও মানবকল্যাণে অনুদান দেন, তবে সমালোচকরা বলেন, তার অনেক অনুদানই এমন সংস্থায় গেছে যেগুলোর সঙ্গে তার ব্যবসায়িক স্বার্থ জড়িত।

মাস্কের নিজের ভাষায়, “টেসলা নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসার ঘটাচ্ছে, স্পেসএক্স মানবজাতির টিকে থাকার নিশ্চয়তা দিচ্ছে, আর নিউরালিঙ্ক মানুষের মস্তিষ্কের সক্ষমতা বাড়াচ্ছে,এই উদ্যোগগুলোই আমার প্রকৃত দান।”

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ইলন মাস্ক এতো টাকা দিয়ে কী করেন? এক ধনকুবেরের সাধারণ জীবনের গল্প

আপডেট : ৮ নভেম্বর ২০২৫, শনিবার

 

বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্কের সম্পদের পরিমাণ প্রায় অর্ধ ট্রিলিয়ন ডলার, অর্থাৎ ৫০০ বিলিয়নেরও বেশি। টেসলা, স্পেসএক্স, নিউরালিঙ্ক ও এক্স (সাবেক টুইটার)-এর মতো প্রতিষ্ঠানের মালিক এই ধনকুবেরের জীবনযাপন কিন্তু আশ্চর্যভাবে সরল।

২০২১ সালে মাস্ক জানান, তিনি টেক্সাসে মাত্র ৫০ হাজার ডলারের একটি ছোট ঘরে থাকেন, যা স্পেসএক্সের লঞ্চ সাইট স্টারবেসের কাছেই। সাবেক সঙ্গিনী গায়িকা গ্রাইমস বলেছিলেন, বিলাসবহুল জীবন নয়, বরং প্রায় দারিদ্র্যসীমার নিচে জীবনযাপন করেন মাস্ক। এমনকি ম্যাট্রেস ছেঁড়া হলেও তিনি নতুনটি কেনেননি।

তবে গাড়ির প্রতি মাস্কের ভালোবাসা প্রবল। তার সংগ্রহে আছে ফোর্ড মডেল টি, জাগুয়ার ই-টাইপ রোডস্টার, ম্যাকল্যারেন এফ-ওয়ান, এবং টেসলা রোডস্টার, যেটি তিনি মহাকাশে পাঠিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনায় আসেন। এছাড়া তার রয়েছে ১৯৭৬ সালের লোটাস এসপ্রিট সাবমেরিন কার, যা জেমস বন্ডের সিনেমায় ব্যবহৃত হয়েছিল।

রিয়েল এস্টেটের প্রতি আগ্রহ একসময় ছিল প্রবল। ক্যালিফোর্নিয়ার বেল-এয়ার এলাকায় সাতটি বাড়ি কিনেছিলেন মাস্ক, যেগুলিতে ছিল সুইমিং পুল থেকে ব্যক্তিগত লাইব্রেরি পর্যন্ত সবই। কিন্তু ২০২০ সালে তিনি ঘোষণা দেন—সব সম্পত্তি বিক্রি করে দেবেন, কারণ “সম্পত্তি মানুষকে ভারাক্রান্ত করে তোলে।” তিনি শেষ পর্যন্ত বাড়িগুলো বিক্রি করেন, এমনকি অভিনেতা জিন ওয়াইল্ডারের বাড়িও।

মাস্ক প্রায়ই বন্ধুদের বাড়িতে থাকেন। “আমি যদি বে এরিয়ায় যাই, বন্ধুদের অতিরিক্ত ঘরে থাকি,”—বলেছিলেন তিনি। এমনকি গুগলের প্রাক্তন সিইও ল্যারি পেজ একবার তাকে ‘বাস্তুহীন’ বলেও উল্লেখ করেছিলেন।

যদিও স্থাবর সম্পত্তিতে আগ্রহ হারালেও আকাশে উড়তে মাস্ক আগ্রহী। তার কাছে আছে কয়েকটি গালফস্ট্রিম জেট, যেগুলোর প্রতিটির দাম কয়েক কোটি ডলার। মাস্কের দাবি, এগুলো তার সময় বাঁচায় এবং কাজের দক্ষতা বাড়ায়।

সম্প্রতি মাস্কের জন্য ১ ট্রিলিয়ন ডলারের পারিশ্রমিক প্যাকেজ অনুমোদন পায় টেসলার শেয়ারহোল্ডারদের সভায়,যা ইতিহাসে নজিরবিহীন। তবে এই প্যাকেজ পেতে হলে আগামী ১০ বছরে টেসলার বাজারমূল্য বিপুলভাবে বাড়াতে হবে তাকে।

দানশীলতার ক্ষেত্রেও বিতর্ক রয়েছে। তিনি তার মাস্ক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও মানবকল্যাণে অনুদান দেন, তবে সমালোচকরা বলেন, তার অনেক অনুদানই এমন সংস্থায় গেছে যেগুলোর সঙ্গে তার ব্যবসায়িক স্বার্থ জড়িত।

মাস্কের নিজের ভাষায়, “টেসলা নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসার ঘটাচ্ছে, স্পেসএক্স মানবজাতির টিকে থাকার নিশ্চয়তা দিচ্ছে, আর নিউরালিঙ্ক মানুষের মস্তিষ্কের সক্ষমতা বাড়াচ্ছে,এই উদ্যোগগুলোই আমার প্রকৃত দান।”