০৬ নভেম্বর ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিয়াম ইবাদাতের প্রতি ইখলাস সৃষ্টি করে

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ২ মে ২০২২, সোমবার
  • / 95

মাওলানা আবদুল মান্নান : মানুষ যখন কোনও কাজ বা আমল করে, তখন সে মনে মনে একটা উদ্দেশ্য স্থির করে সে কাজের দিকে অগ্রসর হয়। এটা মানুষের জন্মগত স্বভাব। এই উদ্দেশ্যের পরিপ্রেক্ষিতে মানুষ তার কাজের ফলাফল আল্লাহর কাছে পাবে। কাজের আগে উদ্দেশ্য স্থির করা, আর উদ্দেশ্য স্থির হওয়ার পর তা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল সা.-এর নির্ধারিত কষ্টিপাথরে ঘষে দেখা যে, এতে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল সন্তুষ্ট না অসন্তুষ্ট? পক্ষান্তরে যদি আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল সা.-কে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্য ব্যতিরেকে পার্থিব উদ্দেশ্যে কোনও আমল করা হয়, তাহলে এতে আল্লাহর কাছ থেকে বিনিময় পাওয়া দূরের কথা, বরং শাস্তি হিসেবে সে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে।

হযরত তামীম আদ-দারী রা. বর্ণনা করেন, নবী করীম সা. বলেন, ‘ধর্ম হল আন্তরিকতা ও শুভকামনা।’ ওই কথা শুনে আমরা বললাম, ‘কার জন্য?’ নবী করীম সা. বললেন, ‘আল্লাহর জন্য, তাঁর কিতাব, তাঁর নবী, নেতাসমূহ ও সাধারণ মুসলমানের জন্য।’ (মুসলিম)
রোযা আমাদের অন্তরে আল্লাহর প্রতি আন্তরিকতা ও মুসলমানের জন্য শুভকামনা করতে শেখায়। অন্তরকে হিংসা-বিদ্বেষ মুক্ত করে পবিত্র করে তোলে, যা পরকালে আল্লাহর রহমত ও নবী করীম সা.-র সুপারিশ লাভ করার সৌভাগ্য দান করে।

আরও পড়ুন: পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে বিশাল গ্রহাণু!

রোযাদারের অন্তর হিংসা-বিদ্বেষ থেকে মুক্ত থাকে। বিপদে-আপদে রোযাদার ধৈর্যধারণ করে, আমানতের খেয়ানত করে না। তাঁর অন্তরে ইখলাস তথা এক নিষ্ঠায় পূর্ণ থাকে। সিয়াম সাধকের অন্তর হয় কপটতা থেকে মুক্ত।

আরও পড়ুন: ইবাদাতের মৌসুম এই মাস

রোযা মানুষকে রাগ-ক্রোধ প্রভৃতি চারিত্রিক দূর্বলতার উপর নিয়ন্ত্রণ করার শিক্ষা দেয়। হযরত আবু হুরায়রা রা. বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি নবী করীম সা.-কে বলল, ‘‘আমাকে আপনি উপদেশ দিন!’ ওই ব্যক্তি একই কথা বার বার বলছিল, আর নবী করীম সা. প্রতিবারেই বলছিলেন, ‘রেগে যেও না’ আর ক্রোধোন্মত্ত হয়ো না’।’’ (বুখারী)

আরও পড়ুন: আরাফাতের ময়দানে ইবাদত-বন্দেগি হাজিদের

দুনিয়ার যাবতীয় কাজকর্ম, ইবাদাত-বন্দেগী আল্লাহর প্রতি আন্তরিকতায় পরিপূর্ণ থাকলে তবেই আমরা আল্লাহর মাগফিরাত ও নাজাত লাভে ধন্য হব। পবিত্র রমযানের শেষলগ্ন থেকে আসুন, আমরা প্রার্থনা করি, যেভাবে রাসূল সা. প্রায়ই প্রার্থনা করতেনঃ ‘হে আল্লাহ্! আমি তোমার কাছে স্বাস্থ্য, ক্ষমা, বিশ্বাস ও সৎ-স্বভাব কামনা করি। আর কামনা করি আমার তাক্দীর নিয়ে সন্তুষ্টি।’ (হাদিস)

‘যে ব্যক্তি উভয় ঈদের রাতে সাওয়াবের আশায় জাগ্রত থাকে ইবাদাতের মাধ্যমে, কিয়ামতের দিন তার অন্তর জাগ্রত থাকবে যেদিন সকল অন্তর মৃত থাকবে সেদিন।’ (আবু দাউদ)

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

সিয়াম ইবাদাতের প্রতি ইখলাস সৃষ্টি করে

আপডেট : ২ মে ২০২২, সোমবার

মাওলানা আবদুল মান্নান : মানুষ যখন কোনও কাজ বা আমল করে, তখন সে মনে মনে একটা উদ্দেশ্য স্থির করে সে কাজের দিকে অগ্রসর হয়। এটা মানুষের জন্মগত স্বভাব। এই উদ্দেশ্যের পরিপ্রেক্ষিতে মানুষ তার কাজের ফলাফল আল্লাহর কাছে পাবে। কাজের আগে উদ্দেশ্য স্থির করা, আর উদ্দেশ্য স্থির হওয়ার পর তা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল সা.-এর নির্ধারিত কষ্টিপাথরে ঘষে দেখা যে, এতে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল সন্তুষ্ট না অসন্তুষ্ট? পক্ষান্তরে যদি আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল সা.-কে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্য ব্যতিরেকে পার্থিব উদ্দেশ্যে কোনও আমল করা হয়, তাহলে এতে আল্লাহর কাছ থেকে বিনিময় পাওয়া দূরের কথা, বরং শাস্তি হিসেবে সে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে।

হযরত তামীম আদ-দারী রা. বর্ণনা করেন, নবী করীম সা. বলেন, ‘ধর্ম হল আন্তরিকতা ও শুভকামনা।’ ওই কথা শুনে আমরা বললাম, ‘কার জন্য?’ নবী করীম সা. বললেন, ‘আল্লাহর জন্য, তাঁর কিতাব, তাঁর নবী, নেতাসমূহ ও সাধারণ মুসলমানের জন্য।’ (মুসলিম)
রোযা আমাদের অন্তরে আল্লাহর প্রতি আন্তরিকতা ও মুসলমানের জন্য শুভকামনা করতে শেখায়। অন্তরকে হিংসা-বিদ্বেষ মুক্ত করে পবিত্র করে তোলে, যা পরকালে আল্লাহর রহমত ও নবী করীম সা.-র সুপারিশ লাভ করার সৌভাগ্য দান করে।

আরও পড়ুন: পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে বিশাল গ্রহাণু!

রোযাদারের অন্তর হিংসা-বিদ্বেষ থেকে মুক্ত থাকে। বিপদে-আপদে রোযাদার ধৈর্যধারণ করে, আমানতের খেয়ানত করে না। তাঁর অন্তরে ইখলাস তথা এক নিষ্ঠায় পূর্ণ থাকে। সিয়াম সাধকের অন্তর হয় কপটতা থেকে মুক্ত।

আরও পড়ুন: ইবাদাতের মৌসুম এই মাস

রোযা মানুষকে রাগ-ক্রোধ প্রভৃতি চারিত্রিক দূর্বলতার উপর নিয়ন্ত্রণ করার শিক্ষা দেয়। হযরত আবু হুরায়রা রা. বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি নবী করীম সা.-কে বলল, ‘‘আমাকে আপনি উপদেশ দিন!’ ওই ব্যক্তি একই কথা বার বার বলছিল, আর নবী করীম সা. প্রতিবারেই বলছিলেন, ‘রেগে যেও না’ আর ক্রোধোন্মত্ত হয়ো না’।’’ (বুখারী)

আরও পড়ুন: আরাফাতের ময়দানে ইবাদত-বন্দেগি হাজিদের

দুনিয়ার যাবতীয় কাজকর্ম, ইবাদাত-বন্দেগী আল্লাহর প্রতি আন্তরিকতায় পরিপূর্ণ থাকলে তবেই আমরা আল্লাহর মাগফিরাত ও নাজাত লাভে ধন্য হব। পবিত্র রমযানের শেষলগ্ন থেকে আসুন, আমরা প্রার্থনা করি, যেভাবে রাসূল সা. প্রায়ই প্রার্থনা করতেনঃ ‘হে আল্লাহ্! আমি তোমার কাছে স্বাস্থ্য, ক্ষমা, বিশ্বাস ও সৎ-স্বভাব কামনা করি। আর কামনা করি আমার তাক্দীর নিয়ে সন্তুষ্টি।’ (হাদিস)

‘যে ব্যক্তি উভয় ঈদের রাতে সাওয়াবের আশায় জাগ্রত থাকে ইবাদাতের মাধ্যমে, কিয়ামতের দিন তার অন্তর জাগ্রত থাকবে যেদিন সকল অন্তর মৃত থাকবে সেদিন।’ (আবু দাউদ)