০৫ নভেম্বর ২০২৫, বুধবার, ১৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জান্নাতের রাস্তা দেখায় সিয়াম

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২২, বুধবার
  • / 30

REPRESENTATIVE IMAGE

মাওলানা আবদুল মান্নানঃ ‘মুমিন’ কথাটি কয়েকটি গুণের সমন্বয়ে গঠিত। আল্লাহ্র কাছ থেকে পাওয়া এক মহামূল্যবান শংসাপত্র। যার দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য পাওয়া যায়, কিন্তু জান্নাত সুনিশ্চিত করা যায় না। সিয়াম বা রোযা আমাদের জান্নাতের রাস্তা সুগম করে। মহান আল্লাহ্ ঘোষণা করেছেনঃ ‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা পরিপূর্ণ রুপে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করো এবং শয়তানের (কুমন্ত্রণা দানকারীর) পদাঙ্ক অনুসরণ করে না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু (সূরা বাকারাহ্, আয়াতঃ ২০৮).

পরিপূর্ণ রুপে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার অর্থ হচ্ছে, ইসলাম ধর্মের প্রত্যেকটি বিষয়গুলোকে গভীরভাবে জানা এবং বাহ্যিক জীবনে সেগুলোকে বাস্তবায়িত করা। প্রকৃতপক্ষে ইসলাম, ঈমান, আমল ও এহসানের সমষ্টির নাম। এগুলির অন্যতম হল, নামায, রোযা, হজ ও যাকাত। আমরা কেবল ইবাদাতের উক্ত চারটি বিষয়ের প্রতি আমল করে নিজেকে একজন দ্বীনদার ভাবতে শুরু করি, এটাই হল শয়তানের কুমন্ত্রণা বা চক্রান্ত। নামায পড়ার সঙ্গে আমরা দাড়ি রাখি এবং ক্রমশ বাড়াতে থাকি, মাথায় টুপি পরি এবং তা সর্বক্ষণ মাথায় রাখতে থাকি এবং মনে করি আমরা সুন্নাতের অনুসরণ করছি। শয়তানের সাফল্য এখানেই যে, সে আমাদের বোঝাতে সক্ষম হয় যে আমরা যথেষ্ট পরহেজগার এবং ধার্মিক হয়ে গিয়েছি। ইবাদাতের অন্যান্য বিষয়গুলির প্রতি আমরা অমনোযোগী থেকে যায়। অথচ ইসলাম ধর্ম শুধু নামায, রোযা, হজ ও যাকাতের নাম নয়, ইসলাম হচ্ছে একটি পরিপূর্ণ জীবন-বিধান এবং অন্যের সঙ্গে লেনদেন, আচার-আচরণের ও বিষয়। নবী করীম সা. বলেনঃ ‘আসল সর্বহারা ও রিক্ত মানুষ হচ্ছে তারা, সারা কেয়ামতের দিন নামায, রোযা, হজ ও যাকাত এবং বহু দান-খয়রাত নিয়ে উপস্থিত হবে, কিন্তু দুর্নীতি করে সম্পদ দখল, অন্যদের হক না-দেওয়া, মানুষের উপর অত্যাচারের কারণে জাহান্নামে যাবে। রোযা আমাদের লেনদেন বা মু’আমালাতের ক্ষেত্রে আমানতদারী বা সততার শিক্ষা দেয় বলে, রমযান মাসে আমরা এগুলোর প্রতিও মনোযোগী হয়ে উঠি। সামাজিক জীবনের আচার-আচরণ, শিষ্ঠাচার, দরিদ্রদের প্রতি সহমর্মিতা ইত্যাদি বিষয়গুলো যথাযথ বাস্তবায়ন করে ইসলামী আদর্শে আদর্শবান হওয়ার অনুপ্রেরণা লাভ করি। এই রকম মানুষই জান্নাত লাভের প্রত্যাশা করতে পারে।

আল্লাহর জাহান্নাম থেকে নাজাত পাওয়ার আর এক মাধ্যম হল, সকলের সঙ্গে হাসি-মুখে মিলিত হওয়া এবং আত্মীয়তার অধিকারকে রক্ষা করা। হাদীসে কুদসীতে বর্ণিত, আল্লাহ্তায়ালা বলেনঃ ‘যে ব্যক্তি আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে, আমিও তার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখি।’

Tag :

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

জান্নাতের রাস্তা দেখায় সিয়াম

আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২২, বুধবার

মাওলানা আবদুল মান্নানঃ ‘মুমিন’ কথাটি কয়েকটি গুণের সমন্বয়ে গঠিত। আল্লাহ্র কাছ থেকে পাওয়া এক মহামূল্যবান শংসাপত্র। যার দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য পাওয়া যায়, কিন্তু জান্নাত সুনিশ্চিত করা যায় না। সিয়াম বা রোযা আমাদের জান্নাতের রাস্তা সুগম করে। মহান আল্লাহ্ ঘোষণা করেছেনঃ ‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা পরিপূর্ণ রুপে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করো এবং শয়তানের (কুমন্ত্রণা দানকারীর) পদাঙ্ক অনুসরণ করে না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু (সূরা বাকারাহ্, আয়াতঃ ২০৮).

পরিপূর্ণ রুপে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার অর্থ হচ্ছে, ইসলাম ধর্মের প্রত্যেকটি বিষয়গুলোকে গভীরভাবে জানা এবং বাহ্যিক জীবনে সেগুলোকে বাস্তবায়িত করা। প্রকৃতপক্ষে ইসলাম, ঈমান, আমল ও এহসানের সমষ্টির নাম। এগুলির অন্যতম হল, নামায, রোযা, হজ ও যাকাত। আমরা কেবল ইবাদাতের উক্ত চারটি বিষয়ের প্রতি আমল করে নিজেকে একজন দ্বীনদার ভাবতে শুরু করি, এটাই হল শয়তানের কুমন্ত্রণা বা চক্রান্ত। নামায পড়ার সঙ্গে আমরা দাড়ি রাখি এবং ক্রমশ বাড়াতে থাকি, মাথায় টুপি পরি এবং তা সর্বক্ষণ মাথায় রাখতে থাকি এবং মনে করি আমরা সুন্নাতের অনুসরণ করছি। শয়তানের সাফল্য এখানেই যে, সে আমাদের বোঝাতে সক্ষম হয় যে আমরা যথেষ্ট পরহেজগার এবং ধার্মিক হয়ে গিয়েছি। ইবাদাতের অন্যান্য বিষয়গুলির প্রতি আমরা অমনোযোগী থেকে যায়। অথচ ইসলাম ধর্ম শুধু নামায, রোযা, হজ ও যাকাতের নাম নয়, ইসলাম হচ্ছে একটি পরিপূর্ণ জীবন-বিধান এবং অন্যের সঙ্গে লেনদেন, আচার-আচরণের ও বিষয়। নবী করীম সা. বলেনঃ ‘আসল সর্বহারা ও রিক্ত মানুষ হচ্ছে তারা, সারা কেয়ামতের দিন নামায, রোযা, হজ ও যাকাত এবং বহু দান-খয়রাত নিয়ে উপস্থিত হবে, কিন্তু দুর্নীতি করে সম্পদ দখল, অন্যদের হক না-দেওয়া, মানুষের উপর অত্যাচারের কারণে জাহান্নামে যাবে। রোযা আমাদের লেনদেন বা মু’আমালাতের ক্ষেত্রে আমানতদারী বা সততার শিক্ষা দেয় বলে, রমযান মাসে আমরা এগুলোর প্রতিও মনোযোগী হয়ে উঠি। সামাজিক জীবনের আচার-আচরণ, শিষ্ঠাচার, দরিদ্রদের প্রতি সহমর্মিতা ইত্যাদি বিষয়গুলো যথাযথ বাস্তবায়ন করে ইসলামী আদর্শে আদর্শবান হওয়ার অনুপ্রেরণা লাভ করি। এই রকম মানুষই জান্নাত লাভের প্রত্যাশা করতে পারে।

আল্লাহর জাহান্নাম থেকে নাজাত পাওয়ার আর এক মাধ্যম হল, সকলের সঙ্গে হাসি-মুখে মিলিত হওয়া এবং আত্মীয়তার অধিকারকে রক্ষা করা। হাদীসে কুদসীতে বর্ণিত, আল্লাহ্তায়ালা বলেনঃ ‘যে ব্যক্তি আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে, আমিও তার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখি।’