আফগানিস্তানে নারী সাংবাদিকরাও আছেন এবং তারা মিডিয়া প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন, বিতর্কের জবাব দিল তালেবান

- আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০২৫, রবিবার
- / 262
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমীর খান মুত্তাকী ভারত সফরে এসেছেন। ভারত সরকারের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ছাড়াও ব্যবসায়িক ও অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যাক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করছেন তালেবান মন্ত্রী। এই সফরে দিল্লিতে আফগানিস্থানের দূতাবাসে সাংবাদিক সম্মেলন করেন মুত্তাকী।
অভিযোগ, এই সাংবাদিক সম্মেলনে নাকি মহিলা সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষত বিরোধী দলগুলো সরব হয়েছে। তবে সকলের প্রশ্ন, আসলে কী ঘটেছিল সাংবাদিক সম্মেলনে? সত্যিই কি মহিলাদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি? দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবার আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকীর সংবাদ সম্মেলন থেকে নারী সাংবাদিকদের বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় দিল্লিতে সফররত তালেবান প্রতিনিধি দলই — যদিও এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দূতাবাসের বর্তমান কর্মীরা তীব্র আপত্তি জানিয়েছিলেন।
বর্তমানে দূতাবাসটিতে প্রায় ২৩ জন কর্মী আছেন, যাদের মধ্যে ছয়জন আফগান নাগরিক। তারা সবাই তালেবান-পূর্ব আমলের সরকার অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির নেতৃত্বাধীন ইসলামিক রিপাবলিক অব আফগানিস্তান-এর প্রতিনিধি। ঘানি ২০২১ সালের আগস্টে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এক বিশেষ সূত্র বলেন, “আমরা জানতাম তারা এই দূতাবাসটিকে ‘এমিরেট’ ঘোষণা করতে চাইবে (তালেবানরা তাদের সরকারকে ‘এমিরেট’ বলে, ‘রিপাবলিক’ নয়), আমাদের পতাকা নামিয়ে নিজেদেরটা তুলবে, এবং নারী সাংবাদিকদের বাদ দেবে… তাই আমরা অনুষ্ঠানটি দূতাবাসে না করে, বরং তারা যেখানে থাকছে সেই পাঁচতারা হোটেলে করার পরামর্শ দিয়েছিলাম।”
জানা গেছে, সাংবাদিক সম্মেলনে বাছাইকৃত ১৬ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল যারা বিদেশের খবর করেন। যাদের আমন্ত্রণ করা হয়েছিল তারাই এসেছেন। তবে কিছু সাংবাদিক খবর পেয়ে দূতাবাসে এলে তাদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি, কেননা তাদের কাছে আমন্ত্রণপত্র ছিল না। বিবিসি লিখেছে, ‘দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে উচ্চস্তরের বৈঠকের পর শুক্রবারই দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন মি. মুত্তাকি। যেখানে বাছাই করা সংবাদিকদের ডাকা হয়েছিল।’
তালিবান সরকারের রাজনৈতিক প্রধান সুহেল শাহি মিডিয়ার কাছে দাবি করেছেন, দিল্লির ওই সংবাদ সম্মেলনের সময় তিনি নারীদের বাইরে থাকার কোনও নির্দেশ দেননি। তিনি বলেন, ‘আমাদের সম্পর্কে যা বলা হচ্ছে তা মোটেও সত্য নয়। আফগানিস্তানে নারী সাংবাদিকরাও আছেন এবং তারা মিডিয়া প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। কাবুলে মুত্তাকি নিজে নিয়মিত নারী সাংবাদিকদের সাথে দেখা করেন এবং তাদের প্রশ্নের উত্তর দেন। এখানে কোনও বিধিনিষেধ নেই।’
এদিকে নারী সাংবাদিক বিতর্কে মুখ খুলেছে ইসলামিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলূম দেওবন্দ। শনিবার প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, নারী সাংবাদিকদের উপস্থিতি রোধে কোনও নির্দেশ বা নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি।
দেওবন্দের জনসংযোগ কর্মকর্তা আশরাফ উসমানি সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে বলেন,’নারী সাংবাদিকদের উপস্থিতি নিয়ে আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দপ্তর বা আমাদের পক্ষ থেকে কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’