০৪ নভেম্বর ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নাটকে সন্ত্রাসী দেখানো হয় বোরকা পরা মেয়েদের, চাপে পড়ে ভুল স্বীকার স্কুল কর্তৃপক্ষের

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ২৪ অগাস্ট ২০২৫, রবিবার
  • / 118

পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক : অভিভাবকদের তীব্র প্রতিবাদের জেরে অবশেষে ভুল স্বীকার স্কুল কর্তৃপক্ষের।  স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুসলিম ছাত্রীদের বোরকা পরিয়ে হাতে বন্দুক দিয়ে জঙ্গি সাজানো হয়েছিল। তা নিয়েই আপত্তি জানায় অভিভাবকরা। তাদের দাবি, মুসলিম মানেই জঙ্গি এটাই বোঝানোর চেষ্টা হয়েছিল ওই অনুষ্ঠানে। সমস্ত মুসলিম সম্প্রদায়কে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা হয়েছে। অভিভাবকদের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের মুখে পড়ে অবশেষে স্কুল কর্তৃপক্ষ ভুল স্বীকার করে নিয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাতের ভাবনগরের এপিজে আবদুল কালাম বালিকা বিদ্যালয়ে। মেয়েদের এই স্কুলে এবার ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে বিশেষ থিম রাখা হয়েছিল অপারেশন সিঁদুরের উপর। অনুষ্ঠানে মঞ্চে তখন উপস্থিত শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্তৃপক্ষ। দর্শক আসনে অভিভাবকরা। স্বাধীনতা দিবসের এই বিশেষ অনুষ্ঠান শুরু হতেই ছাত্রীদের মুখে ‘পাহেলগাঁও’, ‘সন্ত্রাসী’, ‘হিন্দু’, ‘মুসলিম’ এর মতো শধগুলি প্রতিধ্বনিত হতে শুরু করে। ছোট ছোট মেয়েদের মুখে এসব কি শব্দ! এসব কি শেখানো হয়েছে খুদে ছাত্রীদের? হকচকিয়ে যান অভিভাবকরা।

 

আরও পড়ুন: নাটক-সিনেমায় পিএইচডি করছে চিনের রোবট 

পহেলগাঁও-কাণ্ড নিয়ে হওয়া এই নাটকে নাটকে অভিনয় করা ছাত্রছাত্রীদের পোশাকে স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল কারা কোন পক্ষের। নাটকে যারা জঙ্গি হামলায় নিহত হওয়ার ভূমিকায় অভিনয় করেছিল তাদের পোশাক ছিল সাদা ও গেরুয়া। আর কপালে ছিল গেরুয়া টিপ। অন্যদিকে সন্ত্রাসীদের ভূমিকায় অভিনয় করা ছাত্রীরা ছিল বোরকা পরা এবং বন্দুক। এই নাটক মঞ্চস্থ হতে থাকায় স্থানীয় মুসলিমদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

আরও পড়ুন: Operation Sindoor: অপারেশন সিঁদুরের পর এই প্রথমবার প্রকাশ্যে ভাষণ প্রধানমন্ত্রীর

 

আরও পড়ুন: আফগান মহিলাদের বোরকা পরার নির্দেশ

ছাত্রীদের অভিভাবকরা ও স্থানীয় মুসলিমরা প্রতিবাদ জানাতে শুরু করে। প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ দাবি করে স্কুল চত্বরে জমায়েত করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। এক অভিভাবক বলেন, তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে বোরকা পরেন। তাঁরাও কি তাহলে জঙ্গি? যদিও চাপের মুখে পড়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ সব দায় ছাত্রীদের ঘাড়েই চাপিয়েছে।

 

স্কুল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, তাদের নাকি কোনও ধারণা ছিল না যে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত নাটকে কি ধরণের পোশাক ব্যবহার করা হচ্ছে এবং কোন বিষয়ের উপর নাটক হচ্ছে। সন্ত্রাসীদের চিত্রিত করার জন্য বোরকা কেন বেছে নেওয়া হয়েছিল, সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল রাজুভাই দাভে স্বীকার করে নেন তাঁরা ভুল করেছেন। দাভের কথায়, ‘‘আমরা ভুল করেছি, আমাদের এটি ঘটতে দেওয়া উচিত হয়নি।’’

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

নাটকে সন্ত্রাসী দেখানো হয় বোরকা পরা মেয়েদের, চাপে পড়ে ভুল স্বীকার স্কুল কর্তৃপক্ষের

আপডেট : ২৪ অগাস্ট ২০২৫, রবিবার

পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক : অভিভাবকদের তীব্র প্রতিবাদের জেরে অবশেষে ভুল স্বীকার স্কুল কর্তৃপক্ষের।  স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুসলিম ছাত্রীদের বোরকা পরিয়ে হাতে বন্দুক দিয়ে জঙ্গি সাজানো হয়েছিল। তা নিয়েই আপত্তি জানায় অভিভাবকরা। তাদের দাবি, মুসলিম মানেই জঙ্গি এটাই বোঝানোর চেষ্টা হয়েছিল ওই অনুষ্ঠানে। সমস্ত মুসলিম সম্প্রদায়কে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা হয়েছে। অভিভাবকদের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের মুখে পড়ে অবশেষে স্কুল কর্তৃপক্ষ ভুল স্বীকার করে নিয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাতের ভাবনগরের এপিজে আবদুল কালাম বালিকা বিদ্যালয়ে। মেয়েদের এই স্কুলে এবার ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে বিশেষ থিম রাখা হয়েছিল অপারেশন সিঁদুরের উপর। অনুষ্ঠানে মঞ্চে তখন উপস্থিত শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্তৃপক্ষ। দর্শক আসনে অভিভাবকরা। স্বাধীনতা দিবসের এই বিশেষ অনুষ্ঠান শুরু হতেই ছাত্রীদের মুখে ‘পাহেলগাঁও’, ‘সন্ত্রাসী’, ‘হিন্দু’, ‘মুসলিম’ এর মতো শধগুলি প্রতিধ্বনিত হতে শুরু করে। ছোট ছোট মেয়েদের মুখে এসব কি শব্দ! এসব কি শেখানো হয়েছে খুদে ছাত্রীদের? হকচকিয়ে যান অভিভাবকরা।

 

আরও পড়ুন: নাটক-সিনেমায় পিএইচডি করছে চিনের রোবট 

পহেলগাঁও-কাণ্ড নিয়ে হওয়া এই নাটকে নাটকে অভিনয় করা ছাত্রছাত্রীদের পোশাকে স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল কারা কোন পক্ষের। নাটকে যারা জঙ্গি হামলায় নিহত হওয়ার ভূমিকায় অভিনয় করেছিল তাদের পোশাক ছিল সাদা ও গেরুয়া। আর কপালে ছিল গেরুয়া টিপ। অন্যদিকে সন্ত্রাসীদের ভূমিকায় অভিনয় করা ছাত্রীরা ছিল বোরকা পরা এবং বন্দুক। এই নাটক মঞ্চস্থ হতে থাকায় স্থানীয় মুসলিমদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

আরও পড়ুন: Operation Sindoor: অপারেশন সিঁদুরের পর এই প্রথমবার প্রকাশ্যে ভাষণ প্রধানমন্ত্রীর

 

আরও পড়ুন: আফগান মহিলাদের বোরকা পরার নির্দেশ

ছাত্রীদের অভিভাবকরা ও স্থানীয় মুসলিমরা প্রতিবাদ জানাতে শুরু করে। প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ দাবি করে স্কুল চত্বরে জমায়েত করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। এক অভিভাবক বলেন, তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে বোরকা পরেন। তাঁরাও কি তাহলে জঙ্গি? যদিও চাপের মুখে পড়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ সব দায় ছাত্রীদের ঘাড়েই চাপিয়েছে।

 

স্কুল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, তাদের নাকি কোনও ধারণা ছিল না যে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত নাটকে কি ধরণের পোশাক ব্যবহার করা হচ্ছে এবং কোন বিষয়ের উপর নাটক হচ্ছে। সন্ত্রাসীদের চিত্রিত করার জন্য বোরকা কেন বেছে নেওয়া হয়েছিল, সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল রাজুভাই দাভে স্বীকার করে নেন তাঁরা ভুল করেছেন। দাভের কথায়, ‘‘আমরা ভুল করেছি, আমাদের এটি ঘটতে দেওয়া উচিত হয়নি।’’