০৩ অগাস্ট ২০২৫, রবিবার, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দক্ষিণ ২৪ পরগনার গণধর্ষণ মামলায় পুলিশের ভূমিকাতে ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, মঙ্গলবার
  • / 22

পারিজাত মোল্লা:    মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থার এর সিঙ্গেল বেঞ্চে উঠে এক পুলিশি নিস্ক্রিয়তা বিষয়ক মামলা।  দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক গণধর্ষণের মামলায় ফের পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠল।  পুলিশের ভূমিকায় চরম  অসন্তোষ প্রকাশ করলেন বিচারপতি রাজশেখর মান্থার। অভিযোগ পাওয়ার পর ১০ দিন কেটে গেছে,  তাও নির্যাতিতার কোনও গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়নি কেন, এদিন সওয়াল-জবাবে  প্রশ্ন করেন বিচারপতি। পুলিশের জবাবে সন্তুষ্ট হতে পারেননি তিনি।  বিচারপতি নির্দেশ দেন মঙ্গলবার দুপুর ৩টের মধ্যেই গোপন জবানবন্দি নেওয়ার কাজ শেষ করতে হবে পুলিশকে।

প্রসঙ্গত,  গত ১৭ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর থানার বাঁকরাহাট আউটপোস্টে এক মহিলা গণধর্ষণের অভিযোগ জানাতে আসেন। কিন্তু সেদিন তাঁর কোনও কথা শোনা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। ঘটনাটি গড়ায় হাইকোর্ট পর্যন্ত। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি মান্থার অভিযোগ না নেওয়ার কারণ জানতে চান পুলিশের কাছে।

আরও পড়ুন: পাথরপ্রতিমায় লোকালয়ে পুকুরে আবার কুমির

পুলিশ হাইকোর্টকে জানিয়েছে, সেদিন বাঁকরা আউটপোস্টে কোনও লেডি কনস্টেবল ছিল না। তাই এফআইআর নেওয়া যায়নি। যা শুনে বিচারপতি বলেন, ‘৩৭৬ ধারায় অভিযোগ। কিন্তু কোনও লেডি কনস্টেবল নেই?

আরও পড়ুন: ফাঁসি নয় যাবজ্জীবন, ৪০ বছর জেল প্রেমিক সুশান্ত চৌধুরীর

এর অর্থ কী? ১০ দিন হয়ে গেছে এখনও লেডি কনস্টেবল নেই।’ তারপরই বিচারপতি পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘এটা কী চলছে? আপনারা পুরো সিস্টেমকে ভেঙে দিচ্ছেন।’ এই মামলায় তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি মান্থার। ১০ দিন কেটে গেলেও নির্যাতিতার পরনের পোশাক বা মোবাইল কিছুই বাজেয়াপ্ত করা হয়নি কেন প্রশ্ন করেন তিনি।

আরও পড়ুন: কৃষকদের বিকাশে গঙ্গাসাগরে কৃষি অভিযান

অবিলম্বে নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দি নেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। এদিন বিচারপতি এই মামলায় জানান , -‘ পুলিশের এমন গা ছাড়া ব্যবহার দেখে যন্ত্রণা পাচ্ছে কোর্ট”। এতদিনে কেন কোনও গ্রেফতার নেই, তাও প্রশ্ন ওঠে আদালতে।

বিষ্ণুপুর থানা ও বাঁকরাহাট আউট পোস্টের ভূমিকা ডায়মন্ড হারবারের পুলিশ সুপারকে খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিলেন বিচারপতি। এছাড়াও ঘটনাক্রম খতিয়ে দেখে সুপারকে আদালতে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।, সিঙ্গেল বেঞ্চে  নির্যাতিতাকে এফআইআর তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আগামী শুনানির আগে এই ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে হবে।

এছাড়াও তদন্তে আইওকে সাহায্য করার জন্য একজন সিনিয়র অফিসারকে নিয়োগ করতে হবে। শুধু তাই নয়, আজ থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নির্যাতিতার নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে হবে বলেও জানান বিচারপতি মান্থার।

কেন্দ্রের তরফ থেকে জানানো হয়, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় কোনও সিআরপিএফ বা সিআইএসএফের বাহিনী নেই। আদালতের কাছে কিছুটা সময় চাওয়া হয়।

বিচারপতি  বলেন, ‘কোর্ট জরুরি ভিত্তিতে কোনও কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইলে সেটা কেন্দ্র দিতে পারবে না, সেটা হয়?’  কেন্দ্রের আবেদনে কর্ণপাত করেননি বিচারপতি। জবানবন্দি নেওয়া ও কেন্দ্রীয় নিরাপত্তার নির্দেশ বহাল রেখেছেন তিনি

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

দক্ষিণ ২৪ পরগনার গণধর্ষণ মামলায় পুলিশের ভূমিকাতে ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট

আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, মঙ্গলবার

পারিজাত মোল্লা:    মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থার এর সিঙ্গেল বেঞ্চে উঠে এক পুলিশি নিস্ক্রিয়তা বিষয়ক মামলা।  দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক গণধর্ষণের মামলায় ফের পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠল।  পুলিশের ভূমিকায় চরম  অসন্তোষ প্রকাশ করলেন বিচারপতি রাজশেখর মান্থার। অভিযোগ পাওয়ার পর ১০ দিন কেটে গেছে,  তাও নির্যাতিতার কোনও গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়নি কেন, এদিন সওয়াল-জবাবে  প্রশ্ন করেন বিচারপতি। পুলিশের জবাবে সন্তুষ্ট হতে পারেননি তিনি।  বিচারপতি নির্দেশ দেন মঙ্গলবার দুপুর ৩টের মধ্যেই গোপন জবানবন্দি নেওয়ার কাজ শেষ করতে হবে পুলিশকে।

প্রসঙ্গত,  গত ১৭ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর থানার বাঁকরাহাট আউটপোস্টে এক মহিলা গণধর্ষণের অভিযোগ জানাতে আসেন। কিন্তু সেদিন তাঁর কোনও কথা শোনা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। ঘটনাটি গড়ায় হাইকোর্ট পর্যন্ত। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি মান্থার অভিযোগ না নেওয়ার কারণ জানতে চান পুলিশের কাছে।

আরও পড়ুন: পাথরপ্রতিমায় লোকালয়ে পুকুরে আবার কুমির

পুলিশ হাইকোর্টকে জানিয়েছে, সেদিন বাঁকরা আউটপোস্টে কোনও লেডি কনস্টেবল ছিল না। তাই এফআইআর নেওয়া যায়নি। যা শুনে বিচারপতি বলেন, ‘৩৭৬ ধারায় অভিযোগ। কিন্তু কোনও লেডি কনস্টেবল নেই?

আরও পড়ুন: ফাঁসি নয় যাবজ্জীবন, ৪০ বছর জেল প্রেমিক সুশান্ত চৌধুরীর

এর অর্থ কী? ১০ দিন হয়ে গেছে এখনও লেডি কনস্টেবল নেই।’ তারপরই বিচারপতি পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘এটা কী চলছে? আপনারা পুরো সিস্টেমকে ভেঙে দিচ্ছেন।’ এই মামলায় তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি মান্থার। ১০ দিন কেটে গেলেও নির্যাতিতার পরনের পোশাক বা মোবাইল কিছুই বাজেয়াপ্ত করা হয়নি কেন প্রশ্ন করেন তিনি।

আরও পড়ুন: কৃষকদের বিকাশে গঙ্গাসাগরে কৃষি অভিযান

অবিলম্বে নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দি নেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। এদিন বিচারপতি এই মামলায় জানান , -‘ পুলিশের এমন গা ছাড়া ব্যবহার দেখে যন্ত্রণা পাচ্ছে কোর্ট”। এতদিনে কেন কোনও গ্রেফতার নেই, তাও প্রশ্ন ওঠে আদালতে।

বিষ্ণুপুর থানা ও বাঁকরাহাট আউট পোস্টের ভূমিকা ডায়মন্ড হারবারের পুলিশ সুপারকে খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিলেন বিচারপতি। এছাড়াও ঘটনাক্রম খতিয়ে দেখে সুপারকে আদালতে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।, সিঙ্গেল বেঞ্চে  নির্যাতিতাকে এফআইআর তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আগামী শুনানির আগে এই ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে হবে।

এছাড়াও তদন্তে আইওকে সাহায্য করার জন্য একজন সিনিয়র অফিসারকে নিয়োগ করতে হবে। শুধু তাই নয়, আজ থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নির্যাতিতার নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে হবে বলেও জানান বিচারপতি মান্থার।

কেন্দ্রের তরফ থেকে জানানো হয়, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় কোনও সিআরপিএফ বা সিআইএসএফের বাহিনী নেই। আদালতের কাছে কিছুটা সময় চাওয়া হয়।

বিচারপতি  বলেন, ‘কোর্ট জরুরি ভিত্তিতে কোনও কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইলে সেটা কেন্দ্র দিতে পারবে না, সেটা হয়?’  কেন্দ্রের আবেদনে কর্ণপাত করেননি বিচারপতি। জবানবন্দি নেওয়া ও কেন্দ্রীয় নিরাপত্তার নির্দেশ বহাল রেখেছেন তিনি