২৮ জুলাই ২০২৫, সোমবার, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্নাতকে অনার্স ডিগ্রি এবার চার বছরের

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১৯ মার্চ ২০২৩, রবিবার
  • / 128

পুবের কলম প্রতিবেদক: জাতীয় শিক্ষানীতি কার্যকর করতে রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র সরকার। শিক্ষা যেহেতু যুগ্ম তালিকায়,  সেই জন্য মতামত দেওয়া ও  সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের। সেই অনুসারে রাজ্য সরকারও একটি শিক্ষানীতির আলাদা ‘খসড়া’ তৈরি করতে পৃথক কমিটি গঠন করেছে। জাতীয় শিক্ষা নীতিতে দেশের অনেক রাজ্যে ইতিমধ্যে চার বছরের স্নাতক কোর্স চালু হয়েছে। এবার কেন্দ্রীয় নীতি মেনে রাজ্যেও চালু হচ্ছে চার বছরের স্নাতক কোর্স।  দেশের প্রতিটি রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে চার বছরের স্নাতক কোর্স চালু করার নির্দেশিকাও জারি হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রক।

ইউনিভার্সিটি গ্রান্ট কমিশনের নির্দেশ মেনে উচ্চশিক্ষা দফতর এই সংক্রান্ত একটি  একটি নির্দেশিকা সম্প্রতি জারি করেছে। রাজ্যের সবকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: স্নাতকে চার বছর কার্যকর এখনই নয়: শিক্ষামন্ত্রী

চার বছরের স্নাতক কোর্স সংক্রান্ত উচ্চশিক্ষা দফতরের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, আসন্ন শিক্ষাবর্ষ থেকেই এই নিয়ম চালু করতে হবে। এবছর উচ্চমাধ্যমিকে পাশ করে যে পড়ুয়ারা কলেজে ভর্তি হবেন, তাঁরা চারবছরের স্নাতক কোর্সে ভর্তি হবেন। এই ব্যবস্থায় একাধিক এন্ট্রি ও এক্সিটের বিকল্প থাকবে। তা ছাড়া আন্ডারগ্র্যাজুয়েট স্তরে পড়াশোনায় ভোকেশনাল ট্রেনিং, স্কিল ডেভেলপমেন্ট, ইন্টার্নশিপ ইত্যাদিও সংযুক্ত করা হচ্ছে চার বছরের এই কোর্সের সঙ্গে।

আরও পড়ুন: ৩ বছর নয়, এবার স্নাতক ৪ বছরে , শিক্ষায় পরিবর্তন আনছে ইউজিসি

চলতি শিক্ষাবর্ষেই এই নিয়ম কার্যকর হবে। তবে পাশ কোর্সের মেয়াদ থাকছে ৩ বছরই। এবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে স্নাতকোত্তর পাঠক্রমের সময়সীমা ২ বছর থেকে কমিয়ে ১ বছর করা হবে। যদিও রাজ্য সরকার সেই বিষয়ে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি।

আরও পড়ুন: স্নাতকে আসন পূরণে ফের খুলছে পোর্টাল

জানা গিয়েছে, চলতি বছরের জুলাই মাস থেকেই রাজ্যের সমস্ত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকের অনার্স কোর্সে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে।

কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অবশ্য কয়েক বছর আগে থেকেই এই ব্যবস্থা চালু রয়েছে। রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরের চিঠিতে বলে দেওয়া হয়েছে, জুলাই মাসে যারা কলেজে ও বিশ্ববিদ্যালয়ে  অনার্সে ভর্তি হবেন, তাঁদের কোর্সের মেয়াদ ৪ বছরের হবে। আর পাশ কোর্সে ৩ বছরের মেয়াদই থাকছে।

এতদিন যারা পাশ কোর্সে ভর্তি হতেন, তাঁদের শংসাপত্র হাতে আসত দুই দফায়। কলেজে ভর্তি হওয়ার ২ বছরের মাথায় পরীক্ষা দিয়ে পাশ করলে তাঁরা পেতেন পাশ করার মার্কশিট যা সার্টিফিকেট।  সেই পরীক্ষা পাশের ১ বছর বাদে দিতে হত পার্ট -২ পরীক্ষা। সেই পরীক্ষা পাশ করলে মিলত মার্কশিট এবং স্নাতকের সার্টিফিকেট। অর্থাৎ পার্ট ২  পরীক্ষা পাশ না করলে কাউকেই এতদিন স্নাতক বলে গ্রাহ্য করা হত না।  কলেজে পড়তে পড়তে কেউ পড়া ছেড়ে দিলে বা  পার্ট-২ পরীক্ষায় পাশ না করলে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসাবে দ্বাদশ বা উচ্চমাধ্যমিক পাশ হিসাবেই থেকে যেত। ৩ বছরের বা তার কম পড়াশোনার কোনও দামই কার্যত থাকত না। এই জায়গাতেই এবারে বড়সড় পরিবর্তন আসছে।

নয়া নীতি মেনে এবার থেকে যারা পাশ কোর্স দু’টি সেমিস্টার বা প্রথম বর্ষ উত্তীর্ণ করবে, তাঁরা হাতে পাবে  সার্টিফিকেট কোর্সের মার্কশিট।  যারা চারটি সেমিস্টার বা  দ্বিতীয় বর্ষ উত্তীর্ণ হবে, তারা হাতে পাবে ডিপ্লোমা কোর্সের মার্কশিট ও সার্টিফিকেট। যারা ছয়টি সেমিস্টার বা তৃতীয় বর্ষ উত্তীর্ণ হবে, তারা হাতে পাবে গ্র্যাজুয়েশন পাশ সার্টিফিকেট ও মার্কশিট। সেই সঙ্গে যারা ৪ বছরের অনার্স ডিগ্রি কোর্স করবে, তাদের পাঠক্রম হবে গবেষণাভিত্তিক। সেক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা  হিসেবে পরীক্ষায় ৭৫ শতাংশ বা তার বেশি নম্বর পেলে সরাসরি পিএইচডি’র কোর্স ওয়ার্ক শুরু করে দিতে পারবে। সে ক্ষেত্রে মাস্টার ডিগ্রির নির্ধারিত এক বছরের কোর্সটি শেষ করলেই হবে।

 

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

স্নাতকে অনার্স ডিগ্রি এবার চার বছরের

আপডেট : ১৯ মার্চ ২০২৩, রবিবার

পুবের কলম প্রতিবেদক: জাতীয় শিক্ষানীতি কার্যকর করতে রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র সরকার। শিক্ষা যেহেতু যুগ্ম তালিকায়,  সেই জন্য মতামত দেওয়া ও  সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের। সেই অনুসারে রাজ্য সরকারও একটি শিক্ষানীতির আলাদা ‘খসড়া’ তৈরি করতে পৃথক কমিটি গঠন করেছে। জাতীয় শিক্ষা নীতিতে দেশের অনেক রাজ্যে ইতিমধ্যে চার বছরের স্নাতক কোর্স চালু হয়েছে। এবার কেন্দ্রীয় নীতি মেনে রাজ্যেও চালু হচ্ছে চার বছরের স্নাতক কোর্স।  দেশের প্রতিটি রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে চার বছরের স্নাতক কোর্স চালু করার নির্দেশিকাও জারি হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রক।

ইউনিভার্সিটি গ্রান্ট কমিশনের নির্দেশ মেনে উচ্চশিক্ষা দফতর এই সংক্রান্ত একটি  একটি নির্দেশিকা সম্প্রতি জারি করেছে। রাজ্যের সবকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: স্নাতকে চার বছর কার্যকর এখনই নয়: শিক্ষামন্ত্রী

চার বছরের স্নাতক কোর্স সংক্রান্ত উচ্চশিক্ষা দফতরের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, আসন্ন শিক্ষাবর্ষ থেকেই এই নিয়ম চালু করতে হবে। এবছর উচ্চমাধ্যমিকে পাশ করে যে পড়ুয়ারা কলেজে ভর্তি হবেন, তাঁরা চারবছরের স্নাতক কোর্সে ভর্তি হবেন। এই ব্যবস্থায় একাধিক এন্ট্রি ও এক্সিটের বিকল্প থাকবে। তা ছাড়া আন্ডারগ্র্যাজুয়েট স্তরে পড়াশোনায় ভোকেশনাল ট্রেনিং, স্কিল ডেভেলপমেন্ট, ইন্টার্নশিপ ইত্যাদিও সংযুক্ত করা হচ্ছে চার বছরের এই কোর্সের সঙ্গে।

আরও পড়ুন: ৩ বছর নয়, এবার স্নাতক ৪ বছরে , শিক্ষায় পরিবর্তন আনছে ইউজিসি

চলতি শিক্ষাবর্ষেই এই নিয়ম কার্যকর হবে। তবে পাশ কোর্সের মেয়াদ থাকছে ৩ বছরই। এবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে স্নাতকোত্তর পাঠক্রমের সময়সীমা ২ বছর থেকে কমিয়ে ১ বছর করা হবে। যদিও রাজ্য সরকার সেই বিষয়ে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি।

আরও পড়ুন: স্নাতকে আসন পূরণে ফের খুলছে পোর্টাল

জানা গিয়েছে, চলতি বছরের জুলাই মাস থেকেই রাজ্যের সমস্ত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকের অনার্স কোর্সে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে।

কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অবশ্য কয়েক বছর আগে থেকেই এই ব্যবস্থা চালু রয়েছে। রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরের চিঠিতে বলে দেওয়া হয়েছে, জুলাই মাসে যারা কলেজে ও বিশ্ববিদ্যালয়ে  অনার্সে ভর্তি হবেন, তাঁদের কোর্সের মেয়াদ ৪ বছরের হবে। আর পাশ কোর্সে ৩ বছরের মেয়াদই থাকছে।

এতদিন যারা পাশ কোর্সে ভর্তি হতেন, তাঁদের শংসাপত্র হাতে আসত দুই দফায়। কলেজে ভর্তি হওয়ার ২ বছরের মাথায় পরীক্ষা দিয়ে পাশ করলে তাঁরা পেতেন পাশ করার মার্কশিট যা সার্টিফিকেট।  সেই পরীক্ষা পাশের ১ বছর বাদে দিতে হত পার্ট -২ পরীক্ষা। সেই পরীক্ষা পাশ করলে মিলত মার্কশিট এবং স্নাতকের সার্টিফিকেট। অর্থাৎ পার্ট ২  পরীক্ষা পাশ না করলে কাউকেই এতদিন স্নাতক বলে গ্রাহ্য করা হত না।  কলেজে পড়তে পড়তে কেউ পড়া ছেড়ে দিলে বা  পার্ট-২ পরীক্ষায় পাশ না করলে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসাবে দ্বাদশ বা উচ্চমাধ্যমিক পাশ হিসাবেই থেকে যেত। ৩ বছরের বা তার কম পড়াশোনার কোনও দামই কার্যত থাকত না। এই জায়গাতেই এবারে বড়সড় পরিবর্তন আসছে।

নয়া নীতি মেনে এবার থেকে যারা পাশ কোর্স দু’টি সেমিস্টার বা প্রথম বর্ষ উত্তীর্ণ করবে, তাঁরা হাতে পাবে  সার্টিফিকেট কোর্সের মার্কশিট।  যারা চারটি সেমিস্টার বা  দ্বিতীয় বর্ষ উত্তীর্ণ হবে, তারা হাতে পাবে ডিপ্লোমা কোর্সের মার্কশিট ও সার্টিফিকেট। যারা ছয়টি সেমিস্টার বা তৃতীয় বর্ষ উত্তীর্ণ হবে, তারা হাতে পাবে গ্র্যাজুয়েশন পাশ সার্টিফিকেট ও মার্কশিট। সেই সঙ্গে যারা ৪ বছরের অনার্স ডিগ্রি কোর্স করবে, তাদের পাঠক্রম হবে গবেষণাভিত্তিক। সেক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা  হিসেবে পরীক্ষায় ৭৫ শতাংশ বা তার বেশি নম্বর পেলে সরাসরি পিএইচডি’র কোর্স ওয়ার্ক শুরু করে দিতে পারবে। সে ক্ষেত্রে মাস্টার ডিগ্রির নির্ধারিত এক বছরের কোর্সটি শেষ করলেই হবে।