বাংলার বেকারি শিল্পের ২৫তম বার্ষিক অধিবেশন
বেকারি শিল্পের সমস্যাগুলিরও সমাধান করা জরুরি : ইমরান

- আপডেট : ৪ অগাস্ট ২০২৫, সোমবার
- / 19
পুবের কলম প্রতিবেদক : রবিবার সায়েন্স সিটি সংলগ্ন বিশ্ববাংলা মেলা প্রাঙ্গনে চলছে ‘ফুড টেক এক্সিবিশন’। এদিন ওয়েস্ট বেঙ্গল বেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে ‘২৫তম বাৎসরিক বেকার্স মিট-২০২৫’ অনুষ্ঠিত হল বিশ্ববাংলা মেলা প্রাঙ্গনের অডিটোরিয়ামে। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ৫০০-র বেশি বেকারির মালিক ও পরিচালক।
এছাড়াও অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান, প্রাক্তন সাংসদ ও পুবের কলম-এর সম্পাদক আহমদ হাসান ইমরান, ভারত চেম্বার অব কমার্সের অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি রুদ্রানি মিত্র, নিউ হাওড়া বেকারির (বাপুজি কেক) কর্ণধার অমিতাভ জানা ও অনিমেষ জানা। এছাড়া ছিলেন আইনজীবী শঙ্কর কুমার স্যানাল, আইনজীবী সমীর বসু রায়চৌধুরি, মুকেশ ভাষা, ওয়েস্ট বেঙ্গল বেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিইও আরিফুল ইসলাম, সহ-সভাপতি আবদুল মোতালেব খান (মোতি), সেখ আবু জাফর, নূর হোসেন মল্লিক-সহ বিভিন্ন জেলার সংগঠনের নেতৃত্বরা।
এদিনের সম্মেলনে আহমদ হাসান ইমরান বেকারি শিল্পের গুরুত্ব তুলে ধরেন। এ রাজ্যের বেকারি শিল্প ব্রিটিশ আমল থেকেই দেশে সুনাম অর্জন করেছে, সেকথা উল্লেখ করে ইমরান বলেন, হুগলির বেকারি মালিক ও কারিগররা বহুকাল ধরে সুনাম অর্জন করে এসেছে। পশ্চিমবঙ্গের বেকারি পূর্ব ভারতে ছড়িয়ে রয়েছে। বেকারি শিল্পের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ইমরান বলেন, মানসম্মত জিনিস তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি মার্কেটিং-ভাল করতে হবে।
প্যাকেজিংয়ের গুণমানের উপর আরও জোর দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, বাংলার পাশাপাশি গুয়াহাটি, শিলচরের বেকারি শিল্পেরও সুনাম রয়েছে। আগে বাংলাদেশের বেকারি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষরাও এই বছর এই সম্মেলনে আসতে পারেননি। কিন্তু বাংলাদেশ বেকারি শিল্পের নানা প্রোডাক্টের উন্নতি ঘটছে। বর্তমান পরিস্থিতির কারণে তারা আর আসতে পারেননি। একইসঙ্গে বেকারি শিল্পের মেশিনারিরও একটি প্রদর্শনি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
ওয়েস্ট বেঙ্গল বেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিইও আরিফুল ইসলাম বলেন, বেকারির ‘প্রোডাক্ট’ উন্নত মানের করার জন্য সংস্থার কর্মকর্তাদের পরামর্শ দেন। একইসঙ্গে বিভিন্ন সংস্থার পোডাক্ট-এর প্রশংসাও করেন। তিনি বলেন, কর্পোরেট-সংস্থাগুলি যেভাবে প্রোডাক্ট উৎপন্ন করছে, সেদিকেও লক্ষ রাখতে হবে। ভারত চেম্বার অব কমার্সের অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি রুদ্রানি মিত্র বলেন, বেকারি সংস্থাগুলিকে গুণমানের উপর গুরুত্ব দিতে হবে। সেই সঙ্গে বেকারি শিল্পের সমস্যাগুলি আলোচনার মাধ্যমে নিরসন ঘটাতে হবে।
এ বছর নিউ হাওড়া বেকারি (বাপুজি কেক) সংস্থার ৫০ বছর পূর্ণ হল। এই সংস্থাকে সকলেই অভিনন্দন জানান। সংস্থার কর্ণধার অমিতাভ জানা বলেন, বেকারি শিল্পের উপর জোর দিতে গুণমানে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি। এদিন তিনি বলেন, ১৯৭৩ সাল থেকে বাপুজি কেক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। হাওড়ার বল্লব পুকুর অঞ্চলের এই সংস্থা সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেয় মানবিকতা, গ্রহণযোগ্যতা ও বিবেকের উপর। সংস্থা টিকিয়ে রাখতে হলে এগুলির উপর জোর দিতেই হবে।
মোতি কনফেকশনারির কর্নধার আবদুল মোতালেব খান বলেন, বেকারি শিল্পের সমস্যা রয়েছে। কেন্দ্র সরকারের জিএসটির জন্য সমস্যায় পড়ছেন বেকারি শিল্প। তাছাড়া দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি হচ্ছে এটাও সমস্যা। এছাড়া ছিলেন ফয়জান মল্লিক, সেখ মুহাম্মদ ইলিয়াস, গৌতম মজুমদার, ড. এম হক, হাজি আজাদ বক্স মল্লিক, মুহাম্মদ মুজিবুল মিদ্দা সহ শত শত বেকারির কর্ণধারগণ।
ওয়েস্ট বেঙ্গল বেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বদের দাবি, কেন্দ্রের জিএসটিতে নাজেহাল অবস্থা ছোট বেকারি শিল্পের কর্মকর্তাদের। তাঁদের দাবি, ছোট বেকারিদের জন্য জিএসটি কমাতে হবে। পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিল হ্রাস করতে হবে। ১০০ দিনের কাজের জন্য বেকারি শিল্পে কর্মীর অভাব দেখা দিচ্ছে। সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে এই সমস্যা সমাধানের প্রস্তাব দেন সংগঠনের নেতৃত্বরা।
এদিন দার্জিলিং, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার থেকে শুরু করে দক্ষিণবঙ্গের আসানসোল, বর্ধমান, কলকাতা, হাওড়া সহ বিভিন্ন জেলার শতশত বেকারি শিল্পের সঙ্গে জড়িত উদ্যোগপতিদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত।