ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক হোক ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের মতো: আহমদ হাসান

- আপডেট : ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, শনিবার
- / 9
জাহির হোসেন, বারাসত: ভারত ও বাংলাদেশের মানুষের সাহিত্য-সংস্কৃতি ব্যবসা-বাণিজ্য প্রভৃতি বিভিন্ন ক্ষেত্রে মেলবন্ধনের জন্য বেশি করে ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে মৈত্রী উৎসব হওয়া উচিত।
শুক্রবার বারাসতের রবীন্দ্রভবনে আয়োজিত ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী উৎসবে একথা বলেন পুবের কলম পত্রিকার সম্পাদক তথা রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ আহমদ হাসান ইমরান। তিনি বলেন, সাংসদ থাকাকালীন আমি দেখেছি, তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদরা বরাবরই ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কের সার্বিক বিকাশের জন্য সচেষ্ট থেকেছেন।
ইমরান জোর দিয়ে বলেন, আমাদের দুই দেশকেও ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের মডেল অনুসরণ করতে হবে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ নিজেদের মধ্যে ভিসা ব্যবস্থা তুলে দিয়েছে কিংবা সহজ করেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ, সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন সবক্ষেত্রে তারা বাস্তব ক্ষেত্রে ফেডারেল রাষ্ট্রের মতো কাজ করছে। আমাদেরও বাণিজ্য ক্ষেত্রে শুল্ক কমিয়ে আনতে হবে। সাংস্কতিক বিনিময় বাড়াতে হবে।
শুক্রবার ‘আমার আশা ফাউন্ডেশন’ এবং ভারত-বাংলাদেশ কালচারাল কাউন্সিলের যৌথ উদ্যোগে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী উৎসব, ২০২৩ অনুষ্ঠিত হয় বারাসতের রবীন্দ্রভবনে। দুই বাংলার বিশিষ্ট গুণীজন এবং ছাত্র-ছাত্রীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয় উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে।
এদিন বাংলাদেশ থেকে আগত বিশিষ্ট ব্যক্তিরা ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী উৎসবের মঞ্চ আলোকিত করেছিলেন। ছিলেন রাজশাহীর মুনডুমালা পৌরসভার চেয়ারম্যান মুহাম্মদ সাইদুর রহমান, কুমিল্লার নাঙ্গলকোট পৌরসভার চেয়ারম্যান আবদুল মালেক, ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী উৎসব কমিটির সহ-সভাপতি মনজুর হোসেন ইশা, এটিএন বাংলা লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহফুজুর রহমান, বাংলাদেশের বিশিষ্ট শিল্পপতি মুহাম্মদ আজিজুল ইসলাম, রয়্যাল ইউনিভার্সিটি অফ ঢাকার উপাচার্য সুভাষচন্দ্র শীল, ঢাকার বাংলাদেশ ইসলামি ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. মুহাম্মদ আমিনুল হক ভুঁইয়া সহ অন্যান্যরা। এছাড়াও ছিলেন বাংলাদেশের কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাও।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য এদিন দুই বাংলার বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
এদিনের এই অনুষ্ঠানে বিশিষ্টদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এপার বাংলার ‘পুবের কলম’ পত্রিকার সম্পাদক তথা রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ আহমদ হাসান ইমরান, বঙ্গীয় সংখ্যালঘু বুদ্ধিজীবী মঞ্চের সভাপতি অধ্যাপক ওয়ায়েজুল হক, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ আবু সিদ্দিক খান, ইমাম মোয়াজ্জেম সমিতির রাজ্য সম্পাদক আলহাজ্ব হাফেজ আজিজউদ্দিন, তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের রাজ্য সম্পাদক এহতেশামুল হক সিদ্দিকী, মেট্রো রেলের প্রাক্তন ডিজিএম প্রত্যুষ ঘোষ, ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী উৎসব কমিটির সদস্য ও ‘আমার আশা ফাউন্ডেশন-এর চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মোল্লা, ভারত-বাংলাদেশ কালচারাল কাউন্সিলের কর্মকর্তা আরকে রিপন প্রমুখ।
প্রাক্তন সাংসদ আহমদ হাসান বলেন, ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কের উন্নয়নে, সংস্কৃতি ও মেলবন্ধনের লক্ষ্যে বাংলাদেশের বিশিষ্ট ব্যক্তি, শিল্পী, ব্যবসায়ী, শিক্ষাবিদরা এখানে এসেছেন। এটা আমাদের জন্য খুবই আনন্দের। তাঁদেরকে আমরা স্বাগত জানাই। আর এই ধরনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই সেই যোগাযোগ তৈরি হয়। সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন ঘটে। ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন, সংস্কৃতি উন্নয়নের ক্ষেত্রে আপনারা ভূমিকা রাখছেন।
ভাষা শহিদদদের স্মরণ করে তিনি আরও বলেন, এখন ফেব্রুয়ারি মাস চলছে। এই মাসে ভাষা শহীদরা প্রাণ দিয়েছিলেন। ভাষার জন্য প্রাণ কুরবানি দেওয়ার নজির পৃথিবীর খুব কম দেশেই রয়েছে। আর বাংলাদেশের জন্যই রাষ্ট্রসংঘ ১৯৯৯ সালে ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। এজন্য বাংলাদেশের অভিনন্দন প্রাপ্য।
ওয়ায়েজুল হক বলেন, আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে রয়েছি। একে অপরকে বাদ দিয়ে উন্নয়ন সম্ভব নয়। এটা আমাদের ভাতৃত্বের বন্ধন। ঐক্যবদ্ধ হয়েই আমরা ভারত-বাংলাদেশ কাজ করি। কিন্তু বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যে মৈত্রী ভালবাসা আছে কিছু অশুভ শক্তি সেই ভালোবাসাকে নষ্ট করার চক্রান্ত করছে। তিনি বাংলাদেশের প্রতিনিধিবর্গকে উষ্ণ ধন্যবাদ জানান। এদিন সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রসেনজিৎ রাহা এবং মনজুর হোসেন ইশা।