০৪ অগাস্ট ২০২৫, সোমবার, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ট্রাম্পের শুল্কে নষ্ট হতে চলেছে ভারতের বিয়ের মরসুম!

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ৪ অগাস্ট ২০২৫, সোমবার
  • / 17

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের উপর ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক চাপিয়ে দিয়েছেন, যার জেরে গভীর সঙ্কটে পড়েছে ভারতীয় গয়না ও বস্ত্র শিল্প। এই সিদ্ধান্ত শুধু শিল্পক্ষেত্র নয়, আগামী বিয়ের মরসুমেও বড়সড় ধাক্কা দিতে চলেছে। কারণ, বিয়ে উপলক্ষে সাধারণ মানুষ যে পোশাক ও গয়না কেনেন, তা এখন অনেকের নাগালের বাইরে চলে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

৭ আগস্ট ২০২৫ থেকে এই নতুন শুল্ক কার্যকর হবে। বিশ্লেষকদের মতে, শুধু বস্ত্র শিল্পেই প্রায় ২ লক্ষ চাকরি ঝুঁকির মুখে। গয়না শিল্পের পরিস্থিতিও তথৈবচ। অল ইন্ডিয়া জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিলের সভাপতি রাজেশ রোকড়ে জানিয়েছেন, ১ লক্ষেরও বেশি মানুষ কাজ হারাতে পারেন।বিশেষত হস্তনির্মিত গয়না রপ্তানিতে এই শুল্ক ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলবে। এর আগে ১০ শতাংশ শুল্কে প্রায় ৫০ হাজার চাকরি ঝুঁকির মুখে পড়েছিল।

আরও পড়ুন: বেকারত্বের হার বাড়ছে, তথ্য প্রকাশ করতেই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত ট্রাম্পের

এছাড়া, কার্পেট রপ্তানির ক্ষেত্রেও তৈরি হয়েছে বিপুল অনিশ্চয়তা। বিকানের থেকে বছরে প্রায় ২,৫০০ কোটি টাকার কার্পেট রপ্তানি হয়, যার ৭০ শতাংশই আমেরিকায় যায়। এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত রয়েছে ২৫ লক্ষ প্রত্যক্ষ ও ৫০ লক্ষ পরোক্ষ কর্মী। শুল্ক বৃদ্ধির ফলে কার্পেট উৎপাদনের খরচ বাড়বে, যার ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা করা কঠিন হয়ে পড়বে। রাজস্থান উলেন ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কমল কাল্লা বলেছেন, “এই পরিস্থিতিতে দক্ষ তাঁতি ও শ্রমিকরা ধীরে ধীরে কাজ হারাবেন এবং বাধ্য হবেন অন্য পেশায় চলে যেতে। এখনই কেন্দ্রের উচিত শিল্পক্ষেত্রে ছাড় ও বিশেষ সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করা।”

আরও পড়ুন: রাশিয়া থেকে খনিজ তেল কেনা বন্ধ করেছে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি? রিপোর্টে দাবি

শুধু বস্ত্র বা গয়না নয়, ধাক্কা খেতে পারে বিকানেরের মিষ্টি ও নমকিন রপ্তানিও। প্রতিবছর প্রায় ১০ কোটি টাকার বিকানেরি ভুজিয়া ও রসগোল্লা আমেরিকায় রপ্তানি হয়। নতুন শুল্ক সেই বাজারেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। শিল্পমহলের মতে, এখন উৎসবের মরসুম চলছে, ফলে ভারতীয় বস্ত্র ও গয়নার চাহিদা সর্বোচ্চ পর্যায়ে।

আরও পড়ুন: ডিসেম্বরে কলকাতায় মেসি

আমেরিকায় বসবাসকারী বিপুল সংখ্যক এশীয় মানুষেরাও এ সময়ে ভারতীয় পণ্যের উপর নির্ভরশীল। এই অবস্থায় ব্যবসা ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। তাই অনেক রপ্তানিকারক ইতিমধ্যে অন্যান্য দেশের দিকে রপ্তানির রাস্তা খোঁজা শুরু করেছেন।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ট্রাম্পের শুল্কে নষ্ট হতে চলেছে ভারতের বিয়ের মরসুম!

আপডেট : ৪ অগাস্ট ২০২৫, সোমবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের উপর ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক চাপিয়ে দিয়েছেন, যার জেরে গভীর সঙ্কটে পড়েছে ভারতীয় গয়না ও বস্ত্র শিল্প। এই সিদ্ধান্ত শুধু শিল্পক্ষেত্র নয়, আগামী বিয়ের মরসুমেও বড়সড় ধাক্কা দিতে চলেছে। কারণ, বিয়ে উপলক্ষে সাধারণ মানুষ যে পোশাক ও গয়না কেনেন, তা এখন অনেকের নাগালের বাইরে চলে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

৭ আগস্ট ২০২৫ থেকে এই নতুন শুল্ক কার্যকর হবে। বিশ্লেষকদের মতে, শুধু বস্ত্র শিল্পেই প্রায় ২ লক্ষ চাকরি ঝুঁকির মুখে। গয়না শিল্পের পরিস্থিতিও তথৈবচ। অল ইন্ডিয়া জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিলের সভাপতি রাজেশ রোকড়ে জানিয়েছেন, ১ লক্ষেরও বেশি মানুষ কাজ হারাতে পারেন।বিশেষত হস্তনির্মিত গয়না রপ্তানিতে এই শুল্ক ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলবে। এর আগে ১০ শতাংশ শুল্কে প্রায় ৫০ হাজার চাকরি ঝুঁকির মুখে পড়েছিল।

আরও পড়ুন: বেকারত্বের হার বাড়ছে, তথ্য প্রকাশ করতেই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত ট্রাম্পের

এছাড়া, কার্পেট রপ্তানির ক্ষেত্রেও তৈরি হয়েছে বিপুল অনিশ্চয়তা। বিকানের থেকে বছরে প্রায় ২,৫০০ কোটি টাকার কার্পেট রপ্তানি হয়, যার ৭০ শতাংশই আমেরিকায় যায়। এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত রয়েছে ২৫ লক্ষ প্রত্যক্ষ ও ৫০ লক্ষ পরোক্ষ কর্মী। শুল্ক বৃদ্ধির ফলে কার্পেট উৎপাদনের খরচ বাড়বে, যার ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা করা কঠিন হয়ে পড়বে। রাজস্থান উলেন ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কমল কাল্লা বলেছেন, “এই পরিস্থিতিতে দক্ষ তাঁতি ও শ্রমিকরা ধীরে ধীরে কাজ হারাবেন এবং বাধ্য হবেন অন্য পেশায় চলে যেতে। এখনই কেন্দ্রের উচিত শিল্পক্ষেত্রে ছাড় ও বিশেষ সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করা।”

আরও পড়ুন: রাশিয়া থেকে খনিজ তেল কেনা বন্ধ করেছে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি? রিপোর্টে দাবি

শুধু বস্ত্র বা গয়না নয়, ধাক্কা খেতে পারে বিকানেরের মিষ্টি ও নমকিন রপ্তানিও। প্রতিবছর প্রায় ১০ কোটি টাকার বিকানেরি ভুজিয়া ও রসগোল্লা আমেরিকায় রপ্তানি হয়। নতুন শুল্ক সেই বাজারেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। শিল্পমহলের মতে, এখন উৎসবের মরসুম চলছে, ফলে ভারতীয় বস্ত্র ও গয়নার চাহিদা সর্বোচ্চ পর্যায়ে।

আরও পড়ুন: ডিসেম্বরে কলকাতায় মেসি

আমেরিকায় বসবাসকারী বিপুল সংখ্যক এশীয় মানুষেরাও এ সময়ে ভারতীয় পণ্যের উপর নির্ভরশীল। এই অবস্থায় ব্যবসা ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। তাই অনেক রপ্তানিকারক ইতিমধ্যে অন্যান্য দেশের দিকে রপ্তানির রাস্তা খোঁজা শুরু করেছেন।