৩১ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফ্রিজের ঠাণ্ডা খাবার একাধিকবার গরম করে খাওয়া কি নিরাপদ!

সাদিয়া আহমেদ
  • আপডেট : ৪ ডিসেম্বর ২০২২, রবিবার
  • / 200

পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক :   বর্তমান যুগে ব্যস্ত সময়ে বেশিরভাগ মানুষই ফ্রিজে খাবার রেখে গরম করে খেতেই বেশি অভ্যস্থ। এতে একরকম সময় বাঁচে, খাবার অপচয়ও কম হয়। কিন্তু অনেকের ধারণা ফ্রিজ থেকে  খাবার বের করে সেই খাবার একাধিকবার গরম করে খাওয়া নিরাপদ নয়। কিন্তু এই ধারণা ঠিক নয়। কিছু সহজ উপায় জানা থাকলেই,  আমরা খুব সহজেই খাবার একাধিক ভাবে গরম করে খেতে পারি। তবে তার জন্য কিছু সাধারণ নিয়মাবলি মেনে চলতে হবে।

 

আরও পড়ুন: জিভ জ্বলছে ! এক নজরে দেখে নিন – তরকারিতে ঝাল কমানোর উপায়

বিভিন্নভাবে খাবারে ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটতে পারে। প্রাকৃতিকভাবেই পরিবেশে জন্ম নিতে পারে এই ধরনের ব্যাকটেরিয়া। ভাইরাস খাবারের ভেতর জন্মায় না এবং একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় গিয়ে ভাইরাস ধ্বংস হয়ে যায়। কিন্তু খাবারে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে। তবে কিছু ব্যাকটেরিয়া আমাদের শরীরের জন্য উপকারি। যেমন- দইয়ে থাকা ব্যাকটেরিয়া আমাদের শরীরের জন্য উপকারি। খাদ্যে থাকা ক্ষতিকর জীবাণু অসুস্থতা তৈরি করে। কিছু ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া সহজেই পেটে তৈরি হয়। তখন আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ি।

আরও পড়ুন: রান্নাঘরে সময় বাঁচাতে কিছু সহজ টিপস

কিন্তু রান্না করার সময় এবং বারবার গরম করার কারণে আস্তে আস্তে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া মরে যায়। গরম করার ফলে বিষক্রিয়া বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। যেসব খাবার পরিষ্কারভাবে এবং সতর্কতার সঙ্গে তৈরি করা হয় না বা রান্না করার পর খুব আস্তে আস্তে ঠাণ্ডা করা হয় বা গরম করা হয়, সেখানে ক্ষতিকর জীবাণু তৈরি হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

খাবারের যে ধরনের ব্যাকটেরিয়া অসুস্থতা তৈরি করে, সেটা সাধারণত ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে এবং দ্রুত বৃদ্ধি পায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। যেসব খাবারে দ্রুত ব্যাকটেরিয়া জন্মায় সেগুলো হল,  মাংস,  দুগ্ধজাত খাবার, সামুদ্রিক খাবার, ভাত, ডিম, পাস্তা এবং প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার।

পুনরায় খাবার গরম করলে খাদ্যে বিষক্রিয়া তৈরি করে যে ব্যাকটেরিয়া, তা হল স্ট্যাফিলোকক্কাস অরিয়াস। যেটা অনেক মানুষের নাকে বা গলায় থাকে। এটি তাপ স্থিতিশীল টক্সিন বা বিষ তৈরি করে। যা খেলে বমি এবং ডায়রিয়া হয়।

খাবার ধরার আগে অবশ্যই হাত ধুয়ে নেওয়া উচিত। কারণ পুনরায় গরম করার সময় এই ব্যাকটেরিয়াগুলো হাত থেকে খাবারে চলে যেতে পারে। যদি খাবারকে ব্যাকটেরিয়া উপযোগী তাপমাত্রায় রাখা হয় তাহলে স্ট্যাফিলোকক্কাস অরিয়াস বৃদ্ধি পাবে এবং বিষাক্ত পদার্থ তৈরি করবে। পরবর্তীতে পুনরায় গরম করলে ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হবে ঠিকই কিন্তু টক্সিন বা বিষ ধ্বংস হবে না।

ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি কমাতে তাপমাত্রার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। মানে ঠাণ্ডা খাবার ঠাণ্ডা রাখা (৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে) এবং গরম খাবার গরম রাখা (৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস)। রান্না করা গরম খাবার সরাসরি ঠাণ্ডা করার জন্য ফ্রিজে রাখা যাবে না। রান্না করে একটি পাত্রে ঢেলে ঠাণ্ডা করুন। এরপর অন্য একটি পাত্রে ফ্রিজে রেখে দিন। যেসব খাবার পরিষ্কারভাবে রান্না করা হয় এবং দ্রুত ঠাণ্ডা করা হয়, সেই খাবার আবার গরম করলে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি থাকবে না।

নিরাপদে খাবার গরম করার নিয়ম

১। সব সময় পরিষ্কার পরিছন্নভাবে রান্না করা উচিৎ।

২। রান্নার পর খাবার দুই ঘণ্টার মধ্যে ফ্রিজে রাখুন।

৩। প্রয়োজন না হলে বেশি পরিমাণে খাবার একসঙ্গে গরম করবেন না। আলাদা আলাদা পাত্রে খাবার রেখে দিন। অল্প পরিমাণে গরম করুন।

৪। খাবার খাওয়ার আগে অবশ্যই হাত ধুয়ে খাবেন।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ফ্রিজের ঠাণ্ডা খাবার একাধিকবার গরম করে খাওয়া কি নিরাপদ!

আপডেট : ৪ ডিসেম্বর ২০২২, রবিবার

পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক :   বর্তমান যুগে ব্যস্ত সময়ে বেশিরভাগ মানুষই ফ্রিজে খাবার রেখে গরম করে খেতেই বেশি অভ্যস্থ। এতে একরকম সময় বাঁচে, খাবার অপচয়ও কম হয়। কিন্তু অনেকের ধারণা ফ্রিজ থেকে  খাবার বের করে সেই খাবার একাধিকবার গরম করে খাওয়া নিরাপদ নয়। কিন্তু এই ধারণা ঠিক নয়। কিছু সহজ উপায় জানা থাকলেই,  আমরা খুব সহজেই খাবার একাধিক ভাবে গরম করে খেতে পারি। তবে তার জন্য কিছু সাধারণ নিয়মাবলি মেনে চলতে হবে।

 

আরও পড়ুন: জিভ জ্বলছে ! এক নজরে দেখে নিন – তরকারিতে ঝাল কমানোর উপায়

বিভিন্নভাবে খাবারে ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটতে পারে। প্রাকৃতিকভাবেই পরিবেশে জন্ম নিতে পারে এই ধরনের ব্যাকটেরিয়া। ভাইরাস খাবারের ভেতর জন্মায় না এবং একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় গিয়ে ভাইরাস ধ্বংস হয়ে যায়। কিন্তু খাবারে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে। তবে কিছু ব্যাকটেরিয়া আমাদের শরীরের জন্য উপকারি। যেমন- দইয়ে থাকা ব্যাকটেরিয়া আমাদের শরীরের জন্য উপকারি। খাদ্যে থাকা ক্ষতিকর জীবাণু অসুস্থতা তৈরি করে। কিছু ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া সহজেই পেটে তৈরি হয়। তখন আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ি।

আরও পড়ুন: রান্নাঘরে সময় বাঁচাতে কিছু সহজ টিপস

কিন্তু রান্না করার সময় এবং বারবার গরম করার কারণে আস্তে আস্তে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া মরে যায়। গরম করার ফলে বিষক্রিয়া বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। যেসব খাবার পরিষ্কারভাবে এবং সতর্কতার সঙ্গে তৈরি করা হয় না বা রান্না করার পর খুব আস্তে আস্তে ঠাণ্ডা করা হয় বা গরম করা হয়, সেখানে ক্ষতিকর জীবাণু তৈরি হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

খাবারের যে ধরনের ব্যাকটেরিয়া অসুস্থতা তৈরি করে, সেটা সাধারণত ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে এবং দ্রুত বৃদ্ধি পায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। যেসব খাবারে দ্রুত ব্যাকটেরিয়া জন্মায় সেগুলো হল,  মাংস,  দুগ্ধজাত খাবার, সামুদ্রিক খাবার, ভাত, ডিম, পাস্তা এবং প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার।

পুনরায় খাবার গরম করলে খাদ্যে বিষক্রিয়া তৈরি করে যে ব্যাকটেরিয়া, তা হল স্ট্যাফিলোকক্কাস অরিয়াস। যেটা অনেক মানুষের নাকে বা গলায় থাকে। এটি তাপ স্থিতিশীল টক্সিন বা বিষ তৈরি করে। যা খেলে বমি এবং ডায়রিয়া হয়।

খাবার ধরার আগে অবশ্যই হাত ধুয়ে নেওয়া উচিত। কারণ পুনরায় গরম করার সময় এই ব্যাকটেরিয়াগুলো হাত থেকে খাবারে চলে যেতে পারে। যদি খাবারকে ব্যাকটেরিয়া উপযোগী তাপমাত্রায় রাখা হয় তাহলে স্ট্যাফিলোকক্কাস অরিয়াস বৃদ্ধি পাবে এবং বিষাক্ত পদার্থ তৈরি করবে। পরবর্তীতে পুনরায় গরম করলে ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হবে ঠিকই কিন্তু টক্সিন বা বিষ ধ্বংস হবে না।

ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি কমাতে তাপমাত্রার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। মানে ঠাণ্ডা খাবার ঠাণ্ডা রাখা (৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে) এবং গরম খাবার গরম রাখা (৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস)। রান্না করা গরম খাবার সরাসরি ঠাণ্ডা করার জন্য ফ্রিজে রাখা যাবে না। রান্না করে একটি পাত্রে ঢেলে ঠাণ্ডা করুন। এরপর অন্য একটি পাত্রে ফ্রিজে রেখে দিন। যেসব খাবার পরিষ্কারভাবে রান্না করা হয় এবং দ্রুত ঠাণ্ডা করা হয়, সেই খাবার আবার গরম করলে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি থাকবে না।

নিরাপদে খাবার গরম করার নিয়ম

১। সব সময় পরিষ্কার পরিছন্নভাবে রান্না করা উচিৎ।

২। রান্নার পর খাবার দুই ঘণ্টার মধ্যে ফ্রিজে রাখুন।

৩। প্রয়োজন না হলে বেশি পরিমাণে খাবার একসঙ্গে গরম করবেন না। আলাদা আলাদা পাত্রে খাবার রেখে দিন। অল্প পরিমাণে গরম করুন।

৪। খাবার খাওয়ার আগে অবশ্যই হাত ধুয়ে খাবেন।