৩০ জুন ২০২৫, সোমবার, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘ডিএ চাইতেই গ্রেফতার’, পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২২, বৃহস্পতিবার
  • / 16

পারিজাত মোল্লাঃ রাজ্য সরকারের কাছ থেকে ডিএ পাওয়ার আন্দোলনে পুলিশের হাতে ধৃত ৪৮ জন সরকারি কর্মীদের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

বৃহস্পতিবার একাধারে যখন কলকাতা  হাইকোর্ট সংলগ্ন ব্যাংকশাল আদালতে ধৃত সরকারি কর্মীদের এজলাসে পেশ করা নিয়ে তুমুল আলোড়ন পড়ছে। ঠিক সেসময় কলকাতা হাইকোর্টে এসএসসি সংক্রান্ত এক মামলার শুনানি ফাঁকে ডিএ নিয়ে সরকারি কর্মীদের গ্রেফতারির ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন: ডিএ নিয়ে আরও ৬ মাসের সময় চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন রাজ্যের 

যদিও ধৃতদের মুক্তির দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপ চেয়ে হাইকোর্টের একাংশ কর্মী আবেদন জানিয়েছেন রেজিস্ট্রার জেনারেল অফিসে। এদিন অনেকেই পুলিশের গ্রেপ্তারির প্রতিবাদে উপস্থিতি খাতায় সাক্ষর করেননি বলে জানা গেছে। সরকারি কর্মীদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে সুবিচার না পেলে হাইকোর্টের কর্মীদের বড় অংশ ‘অচল’  করে রাখার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও কোনও কোনও সূত্রে জানা যাচ্ছে।

আরও পড়ুন: বর্ধিত মহার্ঘভাতা দেওয়ার জন্য সব দফতরের কাছে সরকারি কর্মচারী এবং অবসরপ্রাপ্তদের তালিকা চাইল অর্থ দফতর  

আগামী সোমবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির এজলাসে  রাজ্য সরকারের ডিএ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আপিল পিটিশনটি শুনানির জন্য উঠবে। তার আগেই গত বুধবার এবং বৃহস্পতিবার সরকারি কর্মীদের আন্দোলন এবং গ্রেফতারি নিয়ে চলছে তুলকালাম পরিস্থিতি। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ডিএ নিয়ে পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এক অন্য মামলার শুনানির ফাঁকে । ‘ ডিএ-র দাবি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের কর্মীকে গ্রেফতারের ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। গ্রেফতারির পরও ছাড়া হয়নি ওই কর্মীকে’।

আরও পড়ুন: ১০ শতাংশ হারে বর্ধিত ডিএ পেয়ে গেলেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা

এদিন এসএসসি মামলা চলাকালীন এজলাসেই স্বতঃপ্রণোদিতভাবে এই মন্তব্য করেন বিচারপতি অভিজিৎ  গঙ্গোপাধ্যায়। গত বুধবার বকেয়া ডিএ-র দাবিতে একযোগে বিধানসভা অভিযানে পথে নামে ২৭টি বাম সংগঠন। ধর্মতলা থেকে মিছিল এগোতেই গন্ডগোল  বেধে যায়। পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায় বিক্ষোভকারীদের। বিক্ষোভের সামাল দিতে গিয়ে ফের প্রশ্নের মুখে ওঠে কলকাতা পুলিশের ভূমিকা। ঘাড় ধরে নীচু করে পেটে মুখে গুঁতো মারার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে।

গত বুধবারের  আন্দোলনে সরকারি চিকিৎসক সরকারি কর্মী, শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মচারীদের বিভিন্ন সংগঠনের পাশাপাশি রাজ্য সরকারি কর্মীদের একটা বড় অংশকে দেখতে পাওয়া যায়। এই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন ৪৮ জন। এদের মধ্যে মহিলা ১১ জন। বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারী রক্তাক্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ।

যদিও পুলিশের কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে দাবি। ৯ টি জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দাখিল করেছে কলকাতা পুলিশ। বারবার কলকাতা হাইকোর্ট  জানিয়েছে,  ডিএ হল সরকারি কর্মীদের আইনি অধিকার। এটি প্রাপ্য। ডিএ দিতেই হবে’। তা নিয়ে মামলা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। রাজ্যের করা পুনর্বিবেচনার আর্জি ইতিমধ্যেই খারিজ করেছে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।

হাইকোর্ট যখন নির্দেশ দিচ্ছে সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা দিতে হবে, তখন সেই কথা কার্যত শুনছে না রাজ্য সরকার। এরপর গত বুধবার  একে-একে ৪৮ জন কে গ্রেফতার করা হয় আন্দোলনকারীদের। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এদিন পুলিশের অতি সক্রিয়তাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে জানিয়েছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

‘ডিএ চাইতেই গ্রেফতার’, পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের

আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২২, বৃহস্পতিবার

পারিজাত মোল্লাঃ রাজ্য সরকারের কাছ থেকে ডিএ পাওয়ার আন্দোলনে পুলিশের হাতে ধৃত ৪৮ জন সরকারি কর্মীদের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

বৃহস্পতিবার একাধারে যখন কলকাতা  হাইকোর্ট সংলগ্ন ব্যাংকশাল আদালতে ধৃত সরকারি কর্মীদের এজলাসে পেশ করা নিয়ে তুমুল আলোড়ন পড়ছে। ঠিক সেসময় কলকাতা হাইকোর্টে এসএসসি সংক্রান্ত এক মামলার শুনানি ফাঁকে ডিএ নিয়ে সরকারি কর্মীদের গ্রেফতারির ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন: ডিএ নিয়ে আরও ৬ মাসের সময় চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন রাজ্যের 

যদিও ধৃতদের মুক্তির দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপ চেয়ে হাইকোর্টের একাংশ কর্মী আবেদন জানিয়েছেন রেজিস্ট্রার জেনারেল অফিসে। এদিন অনেকেই পুলিশের গ্রেপ্তারির প্রতিবাদে উপস্থিতি খাতায় সাক্ষর করেননি বলে জানা গেছে। সরকারি কর্মীদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে সুবিচার না পেলে হাইকোর্টের কর্মীদের বড় অংশ ‘অচল’  করে রাখার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও কোনও কোনও সূত্রে জানা যাচ্ছে।

আরও পড়ুন: বর্ধিত মহার্ঘভাতা দেওয়ার জন্য সব দফতরের কাছে সরকারি কর্মচারী এবং অবসরপ্রাপ্তদের তালিকা চাইল অর্থ দফতর  

আগামী সোমবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির এজলাসে  রাজ্য সরকারের ডিএ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আপিল পিটিশনটি শুনানির জন্য উঠবে। তার আগেই গত বুধবার এবং বৃহস্পতিবার সরকারি কর্মীদের আন্দোলন এবং গ্রেফতারি নিয়ে চলছে তুলকালাম পরিস্থিতি। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ডিএ নিয়ে পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এক অন্য মামলার শুনানির ফাঁকে । ‘ ডিএ-র দাবি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের কর্মীকে গ্রেফতারের ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। গ্রেফতারির পরও ছাড়া হয়নি ওই কর্মীকে’।

আরও পড়ুন: ১০ শতাংশ হারে বর্ধিত ডিএ পেয়ে গেলেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা

এদিন এসএসসি মামলা চলাকালীন এজলাসেই স্বতঃপ্রণোদিতভাবে এই মন্তব্য করেন বিচারপতি অভিজিৎ  গঙ্গোপাধ্যায়। গত বুধবার বকেয়া ডিএ-র দাবিতে একযোগে বিধানসভা অভিযানে পথে নামে ২৭টি বাম সংগঠন। ধর্মতলা থেকে মিছিল এগোতেই গন্ডগোল  বেধে যায়। পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায় বিক্ষোভকারীদের। বিক্ষোভের সামাল দিতে গিয়ে ফের প্রশ্নের মুখে ওঠে কলকাতা পুলিশের ভূমিকা। ঘাড় ধরে নীচু করে পেটে মুখে গুঁতো মারার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে।

গত বুধবারের  আন্দোলনে সরকারি চিকিৎসক সরকারি কর্মী, শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মচারীদের বিভিন্ন সংগঠনের পাশাপাশি রাজ্য সরকারি কর্মীদের একটা বড় অংশকে দেখতে পাওয়া যায়। এই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন ৪৮ জন। এদের মধ্যে মহিলা ১১ জন। বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারী রক্তাক্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ।

যদিও পুলিশের কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে দাবি। ৯ টি জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দাখিল করেছে কলকাতা পুলিশ। বারবার কলকাতা হাইকোর্ট  জানিয়েছে,  ডিএ হল সরকারি কর্মীদের আইনি অধিকার। এটি প্রাপ্য। ডিএ দিতেই হবে’। তা নিয়ে মামলা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। রাজ্যের করা পুনর্বিবেচনার আর্জি ইতিমধ্যেই খারিজ করেছে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।

হাইকোর্ট যখন নির্দেশ দিচ্ছে সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা দিতে হবে, তখন সেই কথা কার্যত শুনছে না রাজ্য সরকার। এরপর গত বুধবার  একে-একে ৪৮ জন কে গ্রেফতার করা হয় আন্দোলনকারীদের। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এদিন পুলিশের অতি সক্রিয়তাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে জানিয়েছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।