ইছামতির তীরে ধস, বিপত্তি হাসনাবাদ ও টার্কির বিস্তীর্ণ অঞ্চল

- আপডেট : ২ মার্চ ২০২৫, রবিবার
- / 147
রায়মঙ্গলের নদী বাঁধ বসে যাওয়ার চাঞ্চল্য সুন্দরবনে
ইনামুল হক, বসিরহাট: ইছামতি নদী তীর ধ্বসে বিপর্যস্ত শহর টাকি ও হাসনাবাদের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের টাকি পৌরসভার ১৬নং ওয়ার্ডের নজরুল সৈকত সংলগ্ন এলাকায় জমি ধসে গিয়ে নদী গর্ভে চলে গিয়েছে। যার ফলে ফাটল ধরেছে প্রায় ১০০ মিটার এলাকায়। একপ্রকার মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের ছায়া ছবির হাসনাবাদের ইছামতির নদীর পাড়ে। রবিবার সকাল হতেই এই ভয়ানক ফাটলে বিপর্যস্ত হয়েছে হাসনাবাদের যান চলাচল। ফাটল ধরায় ইতিমধ্যে মধ্যবাজার এলাকায় পুলিশের তরফে ব্যারিকেড করে এলাকায় যানবাহন ও মানুষ চলাচলের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। রবিবার সকাল হতেই স্থানীয় বাসিন্দারা এই ফাটল দেখতে পান। ইতিমধ্যে খবর দেওয়া হয়েছে সেচ দপ্তরকে। দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় একাধিক দোকান সহ একটি পার্কের একাংশ ইছামতি নদীগর্ভে চলে গিয়েছে। আবার নতুন করে ফাটল ধরায় আতঙ্কে রয়েছেন এলাকাবাসীরাও। বেশ কিছু বাড়ির পার্শ্ববর্তী এলাকায় ফাটল ধরায় বাড়িগুলি ঝুঁকির মধ্যে অবস্থান করছে। বেশ কিছু বাড়ির থেকে মানুষজনকে সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এলাকায় অবস্থিত অফিসের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র ও আসবাবপত্র গুলি সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। টাকি পৌরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গোবিন্দ সরকার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পরিদর্শন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, আনুমানিক প্রায় ৩০-৩২ বছর আগে শেষবার সেচ দফতরের তরফে হাসনাবাদ পুরাতন রেজিস্ট্রি অফিস থেকে আমলানি পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকার সয়েল টেস্ট হয়। টেস্টের পরে জানা গিয়েছিল হাসনাবাদ থানা চত্বর থেকে আমলানি পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার নদী বাঁধ এলাকা যথেষ্টই বিপদসংকুলতার মধ্যে রয়েছে। কিন্তু সেই সয়েল টেস্টের পরে সেচ দফতরের তরফে আর কোনো রকম উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। যার ফলেই আজকের এই ঘটনা বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বিষয়টি নিয়ে হাসনাবাদের সেচ দফতরের মহকুমা শাসক বলেন, “আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি, আমরা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেই কাজ করছি।”

অন্যদিকে হাসনাবাদের পর ফের নদী বাধে ধস সুন্দরবনে। আবারও ৩০০ থেকে ৪০০ মিটার নদীর বাঁধ বসে গেল হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের রায়মঙ্গল নদীর রমা পুরের স্কুলবাড়ি এলাকায়। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমার হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের সাহেবখালি গ্রাম পঞ্চায়েতের রমাপুর স্কুল বাড়ির ঘাটের সামনে প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ মিটার নদীর বাঁধ বসে আতঙ্কে প্রহর গুনছে সাধারণ মানুষ থেকে এলাকার মানুষ। একাধিকবার এই রায়মঙ্গল নদীর বাঁধ বসে বিপত্তি ও এলাকা প্লাবিত হয় বহু সমস্যার সম্মুখীন হয় এই সাহেব খালি গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক গ্রাম। রবিবার হঠাৎই এই ৩০০ থেকে ৪০০ মিটার নদীর বাঁধ বসে যাওয়াতে সাধারণ মানুষ থেকে নদী পাড়ের মানুষ আতঙ্কে রয়েছে। নদীর বাঁধ ভেঙে জল ঢুকবে সেই আশঙ্কা করছে এলাকার সাধারণ মানুষ। তাদের দাবি , নদী বাধ মেরামত যদি তড়িঘড়ি না করা হয় তাহলে বড় ক্ষতি হতে পারে। ঘটনাস্থলে তড়িঘড়ি পৌঁছে যান হিঙ্গলগঞ্জের বিধায়ক দেবেশ মন্ডল ও ব্লক সভাপতি শহীদুল্লাহ গাজী। কি কারণে এই নদীর বাঁধ বসে গেল সে বিষয়ে খতিয়ে দেখছেন তারা। যাতে দ্রুত মেরামত করা যায় সেদিকটা নজর দিচ্ছেন। পাশাপাশি সাধারণ মানুষদের আশ্বাস দিলেন তারা যাতে আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে না পড়ে। বিভিন্ন দিকে নদী বাঁধ ভাঙ্গন নিয়ে আতঙ্কে সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকার মানুষ। নদীতে জলোচ্ছ্বাস বাড়ায় আতঙ্কের সম্মুখীন হচ্ছেন নদী পাড়ের বাসিন্দারা।