আদানির সংস্থার ৫০০০ কোটির ডিবেঞ্চার কিনল এলআইসি

- আপডেট : ২ জুন ২০২৫, সোমবার
- / 60
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ভারতের জীবন বিমা নিগম বা এল আই সি আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকনমিক জোনের ছাড়া নন কনর্ভাটেবল ডিবেঞ্চার কিনতে ৫০০০ কোটি টাকা খরচ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উল্লেখ্য, নন কনর্ভাটেবল ডিবেঞ্চার হল এক নিদ্দিষ্ট মেয়াদের জন্য ঋণপত্র কেনা।
কনর্ভাটেবল ডিবেঞ্চার যেমন ইচ্ছে করলে কোম্পানির শেয়ারে রূপান্তরিত করা যায় এক্ষেত্রে তা করা যায় না। আদানিরা ১৫ বছর পরে এই টাকা ফেরত দেবে ৭.৭৫ শতাংশ সুদ সহ। কিন্তু তার আগে কোম্পানি ভো-কাট্টা হয়ে গেলে এল আই সি-র আমও যাবে, ছালাও যাবে। এমনিতেই আদানির এই সংস্থায় এল আই সি-র ৮ শতাংশের বেশি বিনিয়োগ রয়েছে।
গত ৩১ মে সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইণ্ডিয়া (সেবি) আদানির এই সংস্থাকে দেশ এবং বিদেশের বাজার থেকে ১০০ কোটি ডলার তোলার অনুমোদন দিয়েছে। এই অনুমতি মেলার পরই এল আই সি ৫০০০ কোটি টাকার বণ্ড কিনে ফেলল।
২০১৪ সালের আগে যার কেউ নাম জানত না, সেই আদানি এখন দেশে ১৫ টি বন্দরের ইজারা নিয়েছে। নিয়েছে মানে পেয়েছে। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড বন্দর, সিঙ্গাপুরের অ্যাবট পয়েন্ট বন্দর, ইজরায়েল, তানজানিয়া এবং শ্রীলঙ্কারও কয়েকটি বন্দরের ইজারা নিয়েছে আদানির এই সংস্থা। এইসব বন্দরের পরিকাঠামো র উন্নয়নে ১২ হাজার কোটি টাকার মতো খরচ করবে আদানির সংস্থা। সেই টাকাটাই বাজারে ঋণপত্র ছেড়ে তুলছে আদানিরা। অর্থাৎ ঋণং কৃত্বা ঘৃতম পীবেৎ। পকেট থেকে টাকা বের না করে মাছের তেলে মাছ ভাজার নীতি নিয়েছেন আদানিরা।
মনে রাখা ভালো, আদানির এই সংস্থার গত ৩১ মার্চ অবধি নিট ঋণের পরিমাণ হয়েছে ৩৬ হাজার ৪২২ কোটি টাকা। এরপর সংস্থার পণ্য পরিবহন ক্ষমতা হল ৬৩ কোটি ৩০ লক্ষ টন। তার মধ্যে এখনও পর্যন্ত সংস্থা ক্ষমতা কাজে লাগাতে পেরেছে ৪৫ কোটি টন। গুজরাটের মুন্দ্রা বন্দরকে ভরকেন্দ্র করে আদানির এই সংস্থা দেশের পণ্য পরিবহন এর বাজারে আধিপত্য কায়েম করতে চায়। বর্তমানে আদানিদের মোট ব্যবসার ২৭ শতাংশ পণ্য পরিবহন ব্যবসায় যুক্ত।
এল আই সি এই নিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির বণ্ড এবং ডিবেঞ্চার কিনতে ৮০ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করল। আগে কখনও এল আই সি এত বিপুল পরিমাণ টাকা কর্পোরেট বণ্ড কিনতে বিনিয়োগ করেনি। তাই দেশের বিরোধী দলগুলি প্রশ্ন তুলেছে, এল আই সি সাধারণ মানুষের টাকা নিয়ে ঝুঁকির বিনিয়োগ করছে।
এভাবেই তো মেহুল চোস্কি, নীরব মোদিরা ঋণ নিয়ে দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছেন। পরে যদি ফের তা হয় তার ফল ভুগতে হবে সাধারণ মানুষকে। প্রশ্ন উঠেছে আদানির এই ধরনের সংস্থা চালানোর অভিজ্ঞতা নিয়ে। তিনি সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পে যেমন একচেটিয়া বিনিয়োগ করেছেন তেমনই দেশের অন্তত ১০ টি বিমানবন্দর হাতে নিয়েছেন। রেল স্টেশনও নিচ্ছেন।
সব ক্ষেত্রেই তাঁর নীতি হল ঋণ নিয়ে ব্যবসা চালানো। এখানেই প্রশ্ন উঠছে, আদানি বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে যে পরিমাণ ঋণ নিচ্ছেন তা কি পরিশোধ করতে পারবেন? বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, সরকারি সংস্থা আদানির ব্যবসার গ্যারান্টার হচ্ছে। যেমন, অস্ট্রেলিয়ার যে বন্দর আদানিরা নিয়েছে সেক্ষেত্রে এস বি আই গ্যারান্টার হয়েছে। তখনও এই প্রশ্ন উঠেছিল।