১৭ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জোটে বড় ভাঙন, চরম চাপে নেতানিয়াহু সরকার

মোক্তার হোসেন মন্ডল
  • আপডেট : ১৭ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার
  • / 17

ইসরাইলের ক্ষমতাসীন জোটে বড় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড তোরা জুডাইজম (ইউটিজে) জোট থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। এতে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকার চরম চাপে পড়েছে। ইউটিজের ঘনিষ্ঠ মিত্র চরম রক্ষণশীল দল শাস একই পথে হাঁটলে পার্লামেন্টে নেতানিয়াহুর সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর সম্ভাবনা তৈরি হবে। বর্তমানে জোট সরকার অল্প ব্যবধানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রেখেছে।

বাধ্যতামূলক সামরিক নিয়োগ থেকে ধর্মীয় শিক্ষার্থীদের ছাড় দেওয়ার প্রশ্নে দীর্ঘদিন ধরে টানাপোড়েন চলছিল। ধর্মীয়ভাবে অতি রক্ষণশীল শিক্ষার্থীদের সেনা প্রশিক্ষণ থেকে অব্যাহতির নিশ্চয়তা না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে ইউটিজের ছয়জন আইনপ্রণেতা সোমবার রাতে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তারা পার্লামেন্টের কমিটি ও মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পদে ছিলেন। তবে তাদের পদত্যাগ ৪৮ ঘণ্টা পর কার্যকর হবে। এর মধ্যে সমাধান না হলে নেতানিয়াহু সমস্যায় পড়বেন, যদিও তাৎক্ষণিকভাবে সরকার বিপদে পড়ছে না। কারণ জুলাইয়ের শেষে পার্লামেন্ট গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে যাবে, ফলে নেতানিয়াহুর হাতে সংকট সমাধানে আরও তিন মাস সময় থাকবে।

কাতারে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে ৬০ দিনের সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে পরোক্ষ আলোচনা চলছে। এ চুক্তির লক্ষ্য হামাসের হাতে বন্দী থাকা ইসরাইলি জিম্মিদের অর্ধেককে মুক্ত করা এবং গাজার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় মানবিক সাহায্য পৌঁছানো। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে গাজায় যুদ্ধ শেষ করার পরবর্তী আলোচনার পথ খুলবে। কিন্তু নেতানিয়াহুর জোটের ডানপন্থী মন্ত্রীদের অনেকে যুদ্ধবিরতির বিপক্ষে। জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির এবং অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তবে নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ মিত্র তোপাজ লুক আর্মি রেডিওকে জানিয়েছেন, “যখনই সঠিক চুক্তি হবে, প্রধানমন্ত্রী তা অনুমোদন পাবেন এবং বাস্তবায়ন করবেন।”

গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধ চলছে ২১ মাস ধরে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলার পর এই যুদ্ধ শুরু হয়। হামাসের হামলায় ইসরাইলের দাবি অনুযায়ী ১,২০০ জন নিহত হন এবং ২৫১ জন জিম্মি হন। অন্যদিকে, গাজায় ইসরাইলি অভিযানে ৫৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং প্রায় গোটা জনসংখ্যাই বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উপত্যকাটি এখন দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে, যেখানে চরম মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

জোটে বড় ভাঙন, চরম চাপে নেতানিয়াহু সরকার

আপডেট : ১৭ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার

ইসরাইলের ক্ষমতাসীন জোটে বড় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড তোরা জুডাইজম (ইউটিজে) জোট থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। এতে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকার চরম চাপে পড়েছে। ইউটিজের ঘনিষ্ঠ মিত্র চরম রক্ষণশীল দল শাস একই পথে হাঁটলে পার্লামেন্টে নেতানিয়াহুর সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর সম্ভাবনা তৈরি হবে। বর্তমানে জোট সরকার অল্প ব্যবধানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রেখেছে।

বাধ্যতামূলক সামরিক নিয়োগ থেকে ধর্মীয় শিক্ষার্থীদের ছাড় দেওয়ার প্রশ্নে দীর্ঘদিন ধরে টানাপোড়েন চলছিল। ধর্মীয়ভাবে অতি রক্ষণশীল শিক্ষার্থীদের সেনা প্রশিক্ষণ থেকে অব্যাহতির নিশ্চয়তা না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে ইউটিজের ছয়জন আইনপ্রণেতা সোমবার রাতে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তারা পার্লামেন্টের কমিটি ও মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পদে ছিলেন। তবে তাদের পদত্যাগ ৪৮ ঘণ্টা পর কার্যকর হবে। এর মধ্যে সমাধান না হলে নেতানিয়াহু সমস্যায় পড়বেন, যদিও তাৎক্ষণিকভাবে সরকার বিপদে পড়ছে না। কারণ জুলাইয়ের শেষে পার্লামেন্ট গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে যাবে, ফলে নেতানিয়াহুর হাতে সংকট সমাধানে আরও তিন মাস সময় থাকবে।

কাতারে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে ৬০ দিনের সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে পরোক্ষ আলোচনা চলছে। এ চুক্তির লক্ষ্য হামাসের হাতে বন্দী থাকা ইসরাইলি জিম্মিদের অর্ধেককে মুক্ত করা এবং গাজার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় মানবিক সাহায্য পৌঁছানো। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে গাজায় যুদ্ধ শেষ করার পরবর্তী আলোচনার পথ খুলবে। কিন্তু নেতানিয়াহুর জোটের ডানপন্থী মন্ত্রীদের অনেকে যুদ্ধবিরতির বিপক্ষে। জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির এবং অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তবে নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ মিত্র তোপাজ লুক আর্মি রেডিওকে জানিয়েছেন, “যখনই সঠিক চুক্তি হবে, প্রধানমন্ত্রী তা অনুমোদন পাবেন এবং বাস্তবায়ন করবেন।”

গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধ চলছে ২১ মাস ধরে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলার পর এই যুদ্ধ শুরু হয়। হামাসের হামলায় ইসরাইলের দাবি অনুযায়ী ১,২০০ জন নিহত হন এবং ২৫১ জন জিম্মি হন। অন্যদিকে, গাজায় ইসরাইলি অভিযানে ৫৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং প্রায় গোটা জনসংখ্যাই বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উপত্যকাটি এখন দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে, যেখানে চরম মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে।