২২ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

২১ জুলাই একুশের শহিদ মঞ্চ থেকে বিজেপি সরকারকে নিশানা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের

আফিয়া‌‌ নৌশিন
  • আপডেট : ২১ জুলাই ২০২৫, সোমবার
  • / 42

 পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: একুশে জুলাই শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারকে প্রবল আক্রমণ করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কটাক্ষ, ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ বিরতির আগে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ভারতের সার্বভৌমত্ব নিয়েই প্রশ্ন তুলে দেয়। সেই সূত্র ধরে বিজেপি সরকারের বিদেশনীতি এবং আমেরিকা নির্ভরতার তীব্র সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী।

 

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ভারতের মতো একটা বৃহৎ রাষ্ট্র কীভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের নির্দেশে চলে? কোথায় ঠেকেছে এই দেশ! কেন ডোনাল্ড ট্রাম্প আগে জানাচ্ছেন ভারত-পাক সংঘর্ষ বিরতির কথা, আর ভারতের পক্ষ থেকে ঘোষণা হচ্ছে অনেক পরে?”

আরও পড়ুন: বিজেপির পতন নিয়ে কটাক্ষ দিলীপ ঘোষের, গেরুয়া শিবিরে ফের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের ইঙ্গিত

 

আরও পড়ুন: সন্দেশখালির রেখা পাত্রের ছায়া সঙ্গী প্রতিবাদী সুদেষ্ণা, শ্যামলী, লতিকারা একুশে জুলাইয়ের সমাবেশে

তিনি আরও বলেন, “আপনাদের বিদেশনীতি কী আমেরিকার মুখ চেয়ে চলবে? কেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের হাতের পুতুল হয়ে থাকছে বিজেপি সরকার?”

আরও পড়ুন: প্রয়োজনে আবার ভাষা আন্দোলন হবে: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

 

‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পরে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনার মধ্যেই, বিকেল ৫টা ৩৩ মিনিটে এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) পোস্ট করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, জানান ভারত-পাক যুদ্ধবিরতির কথা। চার মিনিট পরে মার্কিন বিদেশ সচিব মার্কো রুবিও জানান একই বার্তা। তার মিনিট খানেক পর পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী বিষয়টি নিশ্চিত করেন। অথচ ভারতের পক্ষ থেকে সেই একই তথ্য প্রকাশ করা হয় বিকেল ৫টা ৫৫ মিনিটে।

 

এই অনুক্রম নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তোলেন, ভারতের মতো রাষ্ট্রের হয়ে কি বিদেশি শক্তি কথা বলছে? সেই নিয়েই বিজেপি সরকারের দিকে তীব্র আক্রমণ শানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

 

শুধু যুদ্ধবিরতি নয়, আমেরিকায় অভিবাসীদের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের আচরণ নিয়েও মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আপনারা ভুলে গিয়েছেন ট্রাম্প কীভাবে প্লেনভর্তি করে লোক গুজরাটে ফেরত পাঠিয়েছে? শিকল দিয়ে বেঁধে, অপমান করে ফিরিয়ে দিয়েছে। সেই দিন কোথায় ছিলেন আপনারা? কোনও প্রতিবাদ করেননি।”

 

পাক অধিকৃত কাশ্মীর (PoK) প্রসঙ্গেও তৃণমূল নেত্রীর সাফ প্রশ্ন— “এত রক্ত ঝরার পরেও কেন PoK দখল করা গেল না? তাহলে কীসের হিন্দু? আপনারা তো কোনও ধর্মকেই সম্মান করেন না। না হিন্দু, না মুসলিম, না খৃস্টান, না জৈন।”

 

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন, ট্রাম্প দাবি করেছিলেন ওয়াশিংটনের চাপেই ভারত যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে। তা হলে ভারত সরকার কেন সেই দাবি খণ্ডন করল না? অভিষেকের মতে, সরকার যদি চুপ থাকে, তবে কি ধরে নেওয়া যায় ট্রাম্পের দাবিই সত্যি?

 

মঞ্চের শেষ লগ্নে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে উৎখাতের সরাসরি ডাক দেন। বলেন, “শহিদদের রক্তের তর্পণ করে দিল্লিতে বিজেপি হটানোর ভিত্তিপ্রস্তর আজ বাংলার মাটি থেকে স্থাপন করলাম। বাংলাকে বদলাতে গিয়ে যেন গোটা ভারত বদলে না যায়।”

 

তিনি আরও জানান, ৯ অগস্ট থেকে রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে শুরু হবে ‘বিজেপি ভারত ছাড়ো’ কর্মসূচি। একুশের মঞ্চ থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে জোরালো রাজনৈতিক অভিযান শুরু করার আহ্বান জানান তিনি।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

২১ জুলাই একুশের শহিদ মঞ্চ থেকে বিজেপি সরকারকে নিশানা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের

আপডেট : ২১ জুলাই ২০২৫, সোমবার

 পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: একুশে জুলাই শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারকে প্রবল আক্রমণ করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কটাক্ষ, ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ বিরতির আগে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ভারতের সার্বভৌমত্ব নিয়েই প্রশ্ন তুলে দেয়। সেই সূত্র ধরে বিজেপি সরকারের বিদেশনীতি এবং আমেরিকা নির্ভরতার তীব্র সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী।

 

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ভারতের মতো একটা বৃহৎ রাষ্ট্র কীভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের নির্দেশে চলে? কোথায় ঠেকেছে এই দেশ! কেন ডোনাল্ড ট্রাম্প আগে জানাচ্ছেন ভারত-পাক সংঘর্ষ বিরতির কথা, আর ভারতের পক্ষ থেকে ঘোষণা হচ্ছে অনেক পরে?”

আরও পড়ুন: বিজেপির পতন নিয়ে কটাক্ষ দিলীপ ঘোষের, গেরুয়া শিবিরে ফের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের ইঙ্গিত

 

আরও পড়ুন: সন্দেশখালির রেখা পাত্রের ছায়া সঙ্গী প্রতিবাদী সুদেষ্ণা, শ্যামলী, লতিকারা একুশে জুলাইয়ের সমাবেশে

তিনি আরও বলেন, “আপনাদের বিদেশনীতি কী আমেরিকার মুখ চেয়ে চলবে? কেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের হাতের পুতুল হয়ে থাকছে বিজেপি সরকার?”

আরও পড়ুন: প্রয়োজনে আবার ভাষা আন্দোলন হবে: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

 

‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পরে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনার মধ্যেই, বিকেল ৫টা ৩৩ মিনিটে এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) পোস্ট করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, জানান ভারত-পাক যুদ্ধবিরতির কথা। চার মিনিট পরে মার্কিন বিদেশ সচিব মার্কো রুবিও জানান একই বার্তা। তার মিনিট খানেক পর পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী বিষয়টি নিশ্চিত করেন। অথচ ভারতের পক্ষ থেকে সেই একই তথ্য প্রকাশ করা হয় বিকেল ৫টা ৫৫ মিনিটে।

 

এই অনুক্রম নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তোলেন, ভারতের মতো রাষ্ট্রের হয়ে কি বিদেশি শক্তি কথা বলছে? সেই নিয়েই বিজেপি সরকারের দিকে তীব্র আক্রমণ শানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

 

শুধু যুদ্ধবিরতি নয়, আমেরিকায় অভিবাসীদের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের আচরণ নিয়েও মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আপনারা ভুলে গিয়েছেন ট্রাম্প কীভাবে প্লেনভর্তি করে লোক গুজরাটে ফেরত পাঠিয়েছে? শিকল দিয়ে বেঁধে, অপমান করে ফিরিয়ে দিয়েছে। সেই দিন কোথায় ছিলেন আপনারা? কোনও প্রতিবাদ করেননি।”

 

পাক অধিকৃত কাশ্মীর (PoK) প্রসঙ্গেও তৃণমূল নেত্রীর সাফ প্রশ্ন— “এত রক্ত ঝরার পরেও কেন PoK দখল করা গেল না? তাহলে কীসের হিন্দু? আপনারা তো কোনও ধর্মকেই সম্মান করেন না। না হিন্দু, না মুসলিম, না খৃস্টান, না জৈন।”

 

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন, ট্রাম্প দাবি করেছিলেন ওয়াশিংটনের চাপেই ভারত যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে। তা হলে ভারত সরকার কেন সেই দাবি খণ্ডন করল না? অভিষেকের মতে, সরকার যদি চুপ থাকে, তবে কি ধরে নেওয়া যায় ট্রাম্পের দাবিই সত্যি?

 

মঞ্চের শেষ লগ্নে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে উৎখাতের সরাসরি ডাক দেন। বলেন, “শহিদদের রক্তের তর্পণ করে দিল্লিতে বিজেপি হটানোর ভিত্তিপ্রস্তর আজ বাংলার মাটি থেকে স্থাপন করলাম। বাংলাকে বদলাতে গিয়ে যেন গোটা ভারত বদলে না যায়।”

 

তিনি আরও জানান, ৯ অগস্ট থেকে রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে শুরু হবে ‘বিজেপি ভারত ছাড়ো’ কর্মসূচি। একুশের মঞ্চ থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে জোরালো রাজনৈতিক অভিযান শুরু করার আহ্বান জানান তিনি।