পুবের কলম, মুম্বাই: দিওয়ালির আনন্দের মধ্যেই নতুন আতঙ্ক ছড়িয়েছে ‘কার্বাইড গান’ বা দেশি খেলনা বন্দুককে ঘিরে। এবছরের দীপাবলি বহু মানুষের জন্য অত্যন্ত দুঃখের। খেলনার মতো দেখতে এই বন্দুক আকৃতির বাজি এখন দেশে প্রাণঘাতী রূপ নিয়েছে।
পাইপের মধ্যে কার্বাইড ও পানি ঢেলে কেমিক্যাল রিঅ্যাকশনে বিস্ফোরণ ঘটায় এটি, ফলে আগুনের গোলা ছিটকে যায় ভয়াবহ শব্দে। এই দেশি খেলনা বন্দুক বা ‘কার্বাইড গান’-এ আহতে হয়েছেন বহু শিশু। কার্বাইড গানে সবচেয়ে বেশি আহত হয়েছেন উত্তর ও পশ্চিম ভারতে।
সূত্রের খবর, উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র এবং উত্তরাখণ্ডে কার্বাইড গানে বহু মানুষ আহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে অনেকেই শিশু এবং তরুণ। রাজ্যগুলিতে এখন পর্যন্ত প্রায় একশোর বেশি ব্যক্তি ও শিশু দৃষ্টি হারিয়েছে বলে খবর। বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ আহত ও দৃষ্টি হারিয়েছে।
যোগী রাজ্যে ৫১ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে নয়জন স্থায়ীভাবে অন্ধ হয়ে গেছেন। জানা গিয়েছে, ১৫ বছর বয়সী মুসকান পাঙ্কি থানা এলাকার সুজনপুরের বাসিন্দা। সে তার বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। ঠিক তখনই কার্বাইড ক্র্যাকারের স্ফুলিঙ্গ তার চোখে আঘাত করে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার কর্নিয়া মারাত্মকভাবে পুড়ে গেছে এবং তার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। এদিকে চিকিৎসকদের একাংশ জানিয়েছেন, ‘কার্বাইড গান’ নিয়ে খেলা করতে গিয়েই তারা আহত হয়েছে। রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে যে বিস্ফোরণ ঘটে তা বিপদজনক। উত্তর প্রদেশ এবং মধ্য প্রদেশে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক এই ঘটনা ঘটেছে। অনেকের দৃষ্টিশক্তি ফিরতে প্রায় ছয় মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
সূত্রের খবর, মধ্যপ্রদেশের বিভিন্ন জেলায় টিন অথবা পাইপের তৈরি কার্বাইড বন্দুক নিয়ে খেলতে গিয়ে চোখ এবং শরীরে বিভিন্ন অঙ্গে মারাত্মক আঘাত নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বহু শিশুরা। আহতদের মধ্যে চোখের আঘাতের সংখ্যাই বেশি। মধ্যপ্রদেশজুড়ে ৩২০ জন ইতিমধ্যেই আহত হারিয়েছে।
ভোপাল এবং এর আশপাশের অঞ্চল থেকেই ১৮৬টি ঘটনার খবর পাওয়া গিয়েছে। গোয়ালিয়রে ৩৫টি ঘটনা ঘটেছে। জানা গিয়েছে, প্রায় ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে আহত হয়েছে শিশুরা। উল্লেখ্য, দেশি খেলনা বন্দুককে আহত হয়ে মাত্র তিন দিনে বহু আহত হয়ে শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। মাত্র ১৫০-২০০ টাকায় বিক্রি হওয়া এই বিপজ্জনক খেলনা তৈরি হচ্ছে কার্বাইড, দেশলাইয়ের মাথা ও প্লাস্টিক পাইপ দিয়ে। ইতিমধ্যে ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রশাসন জানিয়েছে, যারা এই বাজি বিক্রি বা প্রচার করছে, সবার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



















