জামালপুর থেকে নিখোঁজ নাবালক মাদ্রাসা ছাত্র, ১২ দিনেও নেই খোঁজ

- আপডেট : ২১ অগাস্ট ২০২৫, বৃহস্পতিবার
- / 119
সফিকুল ইসলাম, জামালপুর : পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থেকে নিখোঁজ ১২ বছরের এক মাদ্রাসা ছাত্র মিরাজ পেয়াদা। গত ১২ দিন ধরে খোঁজ মিলছে না তার। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জামালপুর এবং মিরাজের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুরে। প্রবল দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে মিরাজের পরিজনদের। ইতিমধ্যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে থানায়।
জানা গিয়েছে, মিরাজ পেয়াদা জামালপুরের সেলিমাবাদ মাদ্রাসা দারুল উলুমের ছাত্র। গত ১০ আগস্ট বিকাল সাড়ে ৫টা নাগাদ মাদ্রাসার অন্যান্য ছাত্রদের সঙ্গে জামালপুর সিবি মাঠে খেলতে গিয়েছিল সে। খেলা শেষে সবাই ফিরলেও ফেরেনি মিরাজ। প্রথমে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এবং বন্ধুরা আশপাশে খোঁজাখুঁজি করলেও হদিশ মেলেনি। এরপর পরিবার ১৩ আগস্ট জামালপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে। মিরাজের শারীরিক বিবরণ অনুযায়ী, উচ্চতা প্রায় ৪ ফুট, গড়ন মাঝারি, রঙ শ্যামলা। নিখোঁজ হওয়ার সময় তার পরণে ছিল কালো পাঞ্জাবি ও কালো প্যান্ট।
জামালপুর থানার ওসি কৃপা সিন্ধু ঘোষ জানিয়েছেন, ‘আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি মিরাজকে খুঁজে বের করার। তবে এখনও পর্যন্ত তার কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।’ এদিকে, মিরাজের পরিবার জানিয়েছে, একাধিকবার তাদের কাছে হোয়াটসঅ্যাপ কল এসেছে অচেনা নম্বর থেকে। কলকারী হিন্দি ভাষায় কথা বলছিল এবং কথাবার্তা থেকে অনুমান তাকে অপহরণ করা হয়েছে এবং এর পেছনে কোনও ষড়যন্ত্র আছে, তবে এখন পর্যন্ত কোনও মুক্তিপণের দাবি জানানো হয়নি।
মিরাজের বাবা হবিবর পেয়াদা বলেন, ‘একটি হোয়াটসঅ্যাপ কলে আমার স্ত্রীকে ফোন করা হয়েছিল। এরপর কয়েকটি মেসেজও এসেছে। কিন্তু তারা কোথায় আছে, কেন তাকে আটকে রাখা হয়েছে বা কী উদ্দেশ্য, সে-সব কিছু স্পষ্ট করছে না। ফোনটি সব সময় বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করাও সম্ভব হচ্ছে না।’ এ ঘটনায় জামালপুরের পাশাপাশি মথুরাপুরেও চরম উৎকণ্ঠা ছড়িয়েছে। মাদ্রাসার শিক্ষকরা বলছেন, ‘মিরাজ পড়াশোনায় ভালো। শান্ত স্বভাবের ছেলে। তার হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যাওয়া আমাদের অবাক করছে।’
১২ দিন কেটে গেলেও কোনও খোঁজ না মেলায় মিরাজের বাবা-মা ভেঙে পড়েছেন। সন্তানের চিন্তায় মা মাঝে মধ্যে অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছেন। গ্রামের মানুষ পুলিশকে দ্রুত মিরাজকে উদ্ধারের অনুরোধ করেছেন। পুরো ঘটনার তদন্তে নেমেছে জেলা পুলিশ। হোয়াটসঅ্যাপ কলের সূত্র ধরে, সাইবার সেলের সহযোগিতায় অপহরণের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে পরিবারের উৎকণ্ঠা বাড়ছে প্রতি মুহূর্তে।