বিহারে ফের জঙ্গল-রাজ ফেরানোর চেষ্টা হচ্ছে, ভোট প্রচারে এসে রাহুল-তেজস্বীদের আক্রমণ মোদির
- আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৫, শুক্রবার
- / 116
পুবের কলম, পাটনা: বিহার বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার তুঙ্গে। মহাগঠবন্ধন ইতিমধ্যে তেজস্বী যাদবকে মুখ্যমন্ত্রী-মুখ হিসেবে ঘোষণা করলেও এনডিএ জোট তাদের কোনও মুখ্যমন্ত্রী মুখ তুলে ধরতে পারেনি। স্বভাবতই গুঞ্জন উঠেছে, তাহলে কি নীতীশ কুমারকে ‘বাইপাস’ করে নিজেরাই বিহার দখল করতে চাইছে মোদি-শাহ বাহিনী।
এমন পরিস্থিতিতে সমস্তিপুরের নির্বাচনী জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাজ্যে এনডিএ-র হয়ে এক বিশাল ম্যান্ডেটের ভবিষ্যদ্বাণী করে গেলেন। বিহারের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য তিনি সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং রাজ্যে উন্নয়নের ধারা বজায় রাখার উপর জোর দিলেন। পাশাপাশি, তিনি বিরোধী জোট, বিশেষত আরজেডিকে তীব্র আক্রমণ করেন।
মোদি পূর্ণ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ঘোষণা করেন যে, এনডিএ জোট এবার বিহারে তাদের অতীতের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দেবে। তিনি বলেন, মহারাষ্ট্রের মানুষ আমাদের আগের চেয়েও বেশি সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়েছেন। হরিয়ানা একই কাজ করে আমাদের তৃতীয় মেয়াদে নির্বাচিত করেছে।
মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত এবং উত্তরাখণ্ডেও আমরা দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতায় আছি। উত্তর প্রদেশে যেখানে প্রতি ৫ বছর অন্তর সরকার পরিবর্তন হত, বিজেপি সেই ধারা সাঙ্গ করেছে। এ সমস্ত কিছুই প্রমাণ করে যে এনডিএ মানেই সুশাসন, জনসেবা এবং নিশ্চিত উন্নয়ন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এবার এনডিএ ক্ষমতায় ফিরলে বিহারের উন্নয়নের গতি আরও বাড়বে।
তবে প্রধানমন্ত্রী মোদির এদিনের ভাষণের একটি বড় অংশ জুড়ে ছিল আরজেডিকে লক্ষ্য করে তার তীব্র ‘জঙ্গল-রাজ’ আক্রমণ। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ২০০৫ সালের অক্টোবরেই বিহার ‘জঙ্গল রাজ’ থেকে মুক্তি পেয়েছিল এবং নীতীশ কুমারের নেতৃত্বে এনডিএ-র সুশাসন শুরু হয়।
কিন্তু কেন্দ্রে তখন কংগ্রেস-আরজেডি ক্ষমতায় ছিল। তারা বহু বাধা তৈরি করেছিল এবং আরজেডি বিহারের ক্ষতি করতে কোনো কসুর করেনি। তিনি অভিযোগ করেন, আরজেডি বিহারের মানুষের উপর প্রতিশোধ নিচ্ছিল এবং এমনকি কংগ্রেসকে হুমকি দিয়েছিল যে তারা যদি বিজেপি-এনডিএ সরকারকে সাহায্য করতে চায়, তাহলে তারা সমর্থন প্রত্যাহার করে নেবে। তিনি বিরোধী জোটকে অপরাধীদের জোট বলেও কটাক্ষ করেন, যার নেতারা জামিনে মুক্ত।
প্রধানমন্ত্রী সরাসরি কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধিকেও নিশানা করেন। তিনি কটাক্ষ করে বলেন, যারা সংবিধান পকেটে করে নিয়ে বেড়ায়, তারা কেবল মানুষকে ভুল পথে চালিত করছে। বিহারে ফের জঙ্গল-রাজ ফেরানোর চেষ্টা করছে তারা। প্রধানমন্ত্রীর এই ভাষণ বিহারের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে এনডিএ-র কৌশল স্পষ্ট করে তুলেছে।
তিনি একদিকে যেমন উন্নয়নের ‘গ্যারান্টি’ দিচ্ছেন, তেমনই অন্যদিকে রাজ্যের মানুষকে আরজেডি-র ‘অন্ধকার দিনগুলো’র কথা মনে করিয়ে দিচ্ছেন। কর্পূরী ঠাকুরকে সম্মান জানানোর মাধ্যমে তিনি রাজ্যের অতি-পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর ভোটব্যাঙ্কের উপর প্রভাব ফেলার চেষ্টা করেছেন। তবে বিহারের মানুষ তার কথায় প্রভাবিত হবে কি না তা ভোটের ফলাফলই বলে দেবে।



















































