বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক বার্তা
জলছাড়ার পরিমাণ কমাতে ফের ডিভিসিকে চিঠি পাঠাল নবান্ন

- আপডেট : ১৭ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার
- / 38
পুবর কলম প্রতিবেদক: দামোদর ভ্যালি করপোরশন ( ডিভিসি) -এর লাগাতার জল ছাড়ার জেরে ক্রমশ জোরালো হচ্ছে রাজ্যে বন্যার আশঙ্কা। বুধবারের পর বৃহস্পতিবার সকালের পর থেকে মাইথন এবং পাঞ্চেত মিলিয়ে মোট ৫৭ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হল। এই বিপুল পরিমাণ জল দামোদর নদ বেয়ে পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুর ব্যারেজ হয়ে হাওড়া, হুগলি এবং পূর্ব বর্ধমানের বিস্তীর্ণ এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে ওইসব এলাকাগুলি প্লাবিত হতে চলেছে।
প্লাবনের আশংকা বাঁকুড়া ও পশ্চিম বর্ধমানেও। সেই আবহে রাজ্যের সেচ দফতরের তরফে চিঠি পাঠানো হল দামোদর ভ্যালি করপোরেশনকে। মঙ্গলবারই ডিভিসিকে কাঠগড়ায় তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । রাতে বুধবার ইমেল করে রাজ্য সরকারের তরফে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, ডিভিসি যদি জল ছাড়ার পরিমাণ কম না করে, তাহলে একাধিক জেলা জলের তলায় চলে যাবে।
রাজ্যের যুক্তি, বর্তমানে বৃষ্টিপাতের মাত্রা কমে গিয়েছে, তাই অতিরিক্ত জল ছাড়ার এখন কোনও কারণ নেই। বৃহস্পতিবার সকালের পর থেকে পাঞ্চেত থেকে ৩৯ হাজার কিউসেক এবং মাইথন থেকে ১৮ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে।
আগের বারের তুলনায় বেশি জল ছাড়া হয়েছে। ডিভিসি যদি জল ছাড়ার ক্ষেত্রে রাজ্যের অবেদনকে উপেক্ষা করে, তাহলে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। বিশেষ করে রূপনারায়ণ নদীর জল বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইতে শুরু করেছে। ফলে পরিস্থিতি যে কোনও সময় ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সংস্থার উদ্দেশে সেচ দফতরের চিঠি সতর্কতার বার্তা বলে ধরা যেতে পারে।
একে ডিভিসি-এর জল ছাড়া অব্যাহত। তার ওপর ভারী বৃষ্টিপাত চলছে। ফলে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় বন্যার আশংকা দেখা দিয়েছে। ওদিকে ডিভিসি-এর জল ছাড়ার কারণে ইতিমধ্যেই হুগলির খানাকুল, অরামবাগ, হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর, আমতার মতো জায়গাগুলি প্লাবিত হওয়ার মুখে। বৃষ্টিতে বাঁকুড়ায় বাড়ি চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে একজনের।
দীর্ঘদিন ধরে বর্ষা এলে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল এবং সংলগ্ন জেলা জলে ভাসে। এর সঙ্গে ডিভিসি জল ছাড়ায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ঘাটাল অঞ্চলকে বন্যা সমস্যা থেকে বাঁচাতে ঘাঁটাল মাস্টার প্ল্যান জরুরি। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কোনও উদ্যোগ না নেওয়ায় রাজ্য সরকার নিজেই সেই প্রকল্প রূপায়নের দাযিত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে। আগামী দু বছরের মধ্যে এই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজ শেষ হয়ে যাবে, বলে আশাপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।