১৮ জুন ২০২৫, বুধবার, ৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কংগ্রেস প্লেনারি প্রচারে নরসিমা রাও থাকলে নেই মৌলানা আজাদের ছবি! ‘অমার্জনীয় ত্রুটি’ বললেন জয়রাম রমেশ

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, রবিবার
  • / 22

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ২৪ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার থেকে রায়পুরে শুরু হয়েছে কংগ্রেসের ৮৫ তম প্লেনারি অধিবেশন। আর এই অধিবেশনের ব্যানারে রয়েছেন গান্ধিজী, জওহরলাল নেহরু, নেতাজি, সরোজিনী নাইডু, আম্বেদকর, লাল বাহাদুর শাস্ত্রি, ইন্দিরা গান্ধি, রাজীব গান্ধি, সহ নরসিমা রাওয়ের ছবি। কিন্তু আশ্চর্য্যজনকভাবে বাদ পড়েছে মৌলানা আজাদের ছবি! প্রশ্ন উঠেছে ১৩৭ বছরে কংগ্রেসের এই দীর্ঘ চলার পথে মৌলানা আজাদের নাম বাদ দেওয়া হল কি কাকতালীয়ভাবে, নাকি কংগ্রেস আজ মৌলানা আজাদের নাম স্মৃতির পাতা থেকে মুছে ফেলতে চায়।
কংগ্রেসের ছত্তিশগড়ে অনুষ্ঠিত এই পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনের জন্য কংগ্রেস পার্টির বিজ্ঞাপন ঘিরে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে।

কংগ্রেস প্লেনারি প্রচারে নরসিমা রাও থাকলে নেই মৌলানা আজাদের ছবি! 'অমার্জনীয় ত্রুটি' বললেন জয়রাম রমেশ

আরও পড়ুন: মার্কিন ভিসা বাতিলের অর্ধেক ভারতীয় পড়ুয়া, সরকার কী পদক্ষেপ নিচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন কংগ্রেসের

মৌলানা আবুল কালাম আজাদের ছবি বাদ দেওয়া আর প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পিভি নরসিমা রাওয়ের ছবি দেওয়া নিয়ে শুরু হয়েছে সেই রাজনৈতিক চাপান-উতোর।  মৌলানা আজাদের নাম বাদ দেওয়াকে কংগ্রেস সাংসদ জয়রাম রমেশ ‘অমার্জনীয় ত্রুটি’ বলে বর্ণনা করেছেন।
জয়রাম রমেশ ট্যুইট করে জানিয়েছেন, ‘আইএনসির দেওয়া বিজ্ঞাপণে মৌলানা আজাদের ছবি নেই। এটি একটি অমার্জনীয় ত্রুটি। এর জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের পক্ষ থেকে আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাইছি। তিনি (মৌলানা আজাদ) ভারতের মানুষের কাছে একজন অনুপ্রেরণামূলক ব্যক্তিত্ব হয়েই থাকবেন’।

আরও পড়ুন: সংসদে ওয়াকফ বিল, সর্বশক্তি দিয়ে বিরোধিতা করবে কংগ্রেস: রমেশ

মিম-এর পক্ষ থেকে কংগ্রেসের এই বিজ্ঞাপণে মৌলানা আজাদের ছবি বাদ আর প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাওয়ের ছবি রাখাকে ‘ধর্মনিরপেক্ষতার’ ইঙ্গিত বলে তির্যক মন্তব্য করা হয়েছে। মিম-এর তরফ থেকে ট্যুইটে আরও লেখা হয়, ‘বাবরি মসজিদ ধবংসের সময় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাও কিভাবে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’র পালন করেছেন তা কারুর অজানা নয়। সেই সময় তাঁর ভূমিকা ক্ষমা করা বা ভুলে যাওয়া কারুরই উচিৎ নয়’।

আরও পড়ুন: হিমাচল প্রদেশে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা জয়রাম রমেশের,জানালেন জনাদেশ শিরোধার্য

এমনকি ২০২০ সালেও যখন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে ভারতরত্ন দেওয়ার জন্য রাজ্য বিধানসভায় প্রস্তাব দেন, তখন মিমের পক্ষ থেকে সেই কর্মসূচি বয়কট করা হয়।

প্রসঙ্গত, ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধবংস একটি অভিশপ্ত দিন হিসেবেই ইতিহাসে স্থান পেয়েছে। সেই সময় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন পি ভি নরসিমা রাও। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কর্মীরা এই বাবরি মসজিদে ভাঙচুর চালায়। সেই সময় এই কাজ বন্ধ না করার জন্য সমালোচিত হন নরসিমা রাও। ১৬ শতকের বাবরি মসজিদ ঘিরে এখনও বিতর্ক অব্যাহত। কিন্তু সেইদিন বাবরি মসজিদের ওপরে যেভাবে বর্বরোচিত হামলা চালানো হয়েছিল, আর তা বন্ধ না করার জন্য কঠোরভাবে সমালোচিত হতে হয়েছে নরসিমা রাওকে।

অন্যদিকে আবুল কালাম গোলাম মুহিউদ্দীন আহমেদ বিন খাইরুদ্দিন আল-হুসাইনি আজাদ ছিলেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের একজন বর্ষীয়ান নেতা, ভারতীয় স্বাধীনতা কর্মী, ইসলামী ধর্মতাত্ত্বিক এবং লেখক। স্বাধীনতার পর তিনি ছিলেন ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী। ব্যবহার করতেন আজাদ নামের কলম। সাধারণ মানুষের কাছে তিনি মৌলানা আজাদ বলেই পরিচিত ছিলেন। শিক্ষায় তাঁর অবদানের জন্য তাঁর জন্মদিনকে জাতীয় শিক্ষাদিবস হিসেবে ভারতে ঘোষণা করা হয়।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

কংগ্রেস প্লেনারি প্রচারে নরসিমা রাও থাকলে নেই মৌলানা আজাদের ছবি! ‘অমার্জনীয় ত্রুটি’ বললেন জয়রাম রমেশ

আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, রবিবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ২৪ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার থেকে রায়পুরে শুরু হয়েছে কংগ্রেসের ৮৫ তম প্লেনারি অধিবেশন। আর এই অধিবেশনের ব্যানারে রয়েছেন গান্ধিজী, জওহরলাল নেহরু, নেতাজি, সরোজিনী নাইডু, আম্বেদকর, লাল বাহাদুর শাস্ত্রি, ইন্দিরা গান্ধি, রাজীব গান্ধি, সহ নরসিমা রাওয়ের ছবি। কিন্তু আশ্চর্য্যজনকভাবে বাদ পড়েছে মৌলানা আজাদের ছবি! প্রশ্ন উঠেছে ১৩৭ বছরে কংগ্রেসের এই দীর্ঘ চলার পথে মৌলানা আজাদের নাম বাদ দেওয়া হল কি কাকতালীয়ভাবে, নাকি কংগ্রেস আজ মৌলানা আজাদের নাম স্মৃতির পাতা থেকে মুছে ফেলতে চায়।
কংগ্রেসের ছত্তিশগড়ে অনুষ্ঠিত এই পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনের জন্য কংগ্রেস পার্টির বিজ্ঞাপন ঘিরে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে।

কংগ্রেস প্লেনারি প্রচারে নরসিমা রাও থাকলে নেই মৌলানা আজাদের ছবি! 'অমার্জনীয় ত্রুটি' বললেন জয়রাম রমেশ

আরও পড়ুন: মার্কিন ভিসা বাতিলের অর্ধেক ভারতীয় পড়ুয়া, সরকার কী পদক্ষেপ নিচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন কংগ্রেসের

মৌলানা আবুল কালাম আজাদের ছবি বাদ দেওয়া আর প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পিভি নরসিমা রাওয়ের ছবি দেওয়া নিয়ে শুরু হয়েছে সেই রাজনৈতিক চাপান-উতোর।  মৌলানা আজাদের নাম বাদ দেওয়াকে কংগ্রেস সাংসদ জয়রাম রমেশ ‘অমার্জনীয় ত্রুটি’ বলে বর্ণনা করেছেন।
জয়রাম রমেশ ট্যুইট করে জানিয়েছেন, ‘আইএনসির দেওয়া বিজ্ঞাপণে মৌলানা আজাদের ছবি নেই। এটি একটি অমার্জনীয় ত্রুটি। এর জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের পক্ষ থেকে আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাইছি। তিনি (মৌলানা আজাদ) ভারতের মানুষের কাছে একজন অনুপ্রেরণামূলক ব্যক্তিত্ব হয়েই থাকবেন’।

আরও পড়ুন: সংসদে ওয়াকফ বিল, সর্বশক্তি দিয়ে বিরোধিতা করবে কংগ্রেস: রমেশ

মিম-এর পক্ষ থেকে কংগ্রেসের এই বিজ্ঞাপণে মৌলানা আজাদের ছবি বাদ আর প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাওয়ের ছবি রাখাকে ‘ধর্মনিরপেক্ষতার’ ইঙ্গিত বলে তির্যক মন্তব্য করা হয়েছে। মিম-এর তরফ থেকে ট্যুইটে আরও লেখা হয়, ‘বাবরি মসজিদ ধবংসের সময় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাও কিভাবে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’র পালন করেছেন তা কারুর অজানা নয়। সেই সময় তাঁর ভূমিকা ক্ষমা করা বা ভুলে যাওয়া কারুরই উচিৎ নয়’।

আরও পড়ুন: হিমাচল প্রদেশে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা জয়রাম রমেশের,জানালেন জনাদেশ শিরোধার্য

এমনকি ২০২০ সালেও যখন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে ভারতরত্ন দেওয়ার জন্য রাজ্য বিধানসভায় প্রস্তাব দেন, তখন মিমের পক্ষ থেকে সেই কর্মসূচি বয়কট করা হয়।

প্রসঙ্গত, ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধবংস একটি অভিশপ্ত দিন হিসেবেই ইতিহাসে স্থান পেয়েছে। সেই সময় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন পি ভি নরসিমা রাও। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কর্মীরা এই বাবরি মসজিদে ভাঙচুর চালায়। সেই সময় এই কাজ বন্ধ না করার জন্য সমালোচিত হন নরসিমা রাও। ১৬ শতকের বাবরি মসজিদ ঘিরে এখনও বিতর্ক অব্যাহত। কিন্তু সেইদিন বাবরি মসজিদের ওপরে যেভাবে বর্বরোচিত হামলা চালানো হয়েছিল, আর তা বন্ধ না করার জন্য কঠোরভাবে সমালোচিত হতে হয়েছে নরসিমা রাওকে।

অন্যদিকে আবুল কালাম গোলাম মুহিউদ্দীন আহমেদ বিন খাইরুদ্দিন আল-হুসাইনি আজাদ ছিলেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের একজন বর্ষীয়ান নেতা, ভারতীয় স্বাধীনতা কর্মী, ইসলামী ধর্মতাত্ত্বিক এবং লেখক। স্বাধীনতার পর তিনি ছিলেন ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী। ব্যবহার করতেন আজাদ নামের কলম। সাধারণ মানুষের কাছে তিনি মৌলানা আজাদ বলেই পরিচিত ছিলেন। শিক্ষায় তাঁর অবদানের জন্য তাঁর জন্মদিনকে জাতীয় শিক্ষাদিবস হিসেবে ভারতে ঘোষণা করা হয়।