০৬ নভেম্বর ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

করোনা মোকাবিলায় রাজ্যের ভূমিকার প্রশংসা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের

সুস্মিতা
  • আপডেট : ৫ অগাস্ট ২০২১, বৃহস্পতিবার
  • / 61

পুবের কলম প্রতিবেদক: করোনা মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজি‍ৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পৌরাহিত্যে করোনা মোকাবিলায় গঠিত গ্লোবাল অ্যাডভাইজরি কমিটির বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন। বৈঠকের পরে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘বাংলায় টিকা নষ্টের সংখ্যা নগন্য। দেশের মধ্যে টিকাকরণে সেরা রাজ্য।’ এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘রাজ্যে ফিরে আসা অধিকাংশ পরিযায়ী শ্রমিককেই কাজ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের রেশন দেওয়ার পাশাপাশি বিনামূল্যে চিকি‍ৎসা করা হয়েছে।’
রাজ্যে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পরেই উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবিলায় গ্লোবাল অ্যাডভাইজরি কমিটি গঠন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই কমিটিতে অভিজি‍ৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদের পাশাপাশি বিভিন্ন পেশার বিশিষ্টজনদের রাখা হয়েছে। বিশ্বের অন্য কোথাও এমন কমিটি গঠনের নজর নেই। এদিন কমিটির ৬৬তম বৈঠকে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনার পাশাপাশি তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলা নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়।
বৈঠক শেষে কমিটির সদস্যদের নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কমিটির সদস্যদেরই সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেওয়ার জন্য এগিয়ে দেন তিনি। এদিন এক প্রশ্নের জবাবে অভিজি‍ৎ অভিযোগের সুরে বলেন, ‘দেশে পর্যাপ্ত টিকার জোগান দিতে পারছে না কেন্দ্র। প্রতিশ্রুতিমতো টিকা সরবরাহ করতে পারছে না। যদি সারা দেশে পর্যাপ্ত টিকার সরবরাহ থাকত, তাহলে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ উঠত না।’ করোনার টিকাকরণ নিয়ে রাজ্য সরকারের প্রশংসা করে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘বাংলায় টিকা নষ্ট হচ্ছে না। এ বিষয়ে নজর রেখেছেন স্বাস্থ্য সচিব।’ রাজ্যে তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলার জন্য কি-কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলার জন্য এখন যেভাবে প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন, তা নেওয়া হয়েছে। তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় অনেক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাজ্যে পর্যাপ্ত অক্সিজেনও রয়েছে। মানুষকে সচেতন করতে হবে। যাতে শরীর খারাপ হলেই আগে থেকে চিকিৎসা শুরু করা যায়। পরীক্ষার ব্যবস্থা আছে। গ্রামে গ্রামে আশা কর্মী, চিকিৎসকরা রয়েছেন। সামান্য অসুস্থ বোধ করলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।’
রাজ্য সরকার করোনা মোকাবিলায় যে সাফল্য পেয়েছে তার পিছনে গ্লোবাল অ্যাডভাইজরি টিমের সদস্যদের পরামর্শ বিশেষ অবদান রয়েছে বলে মুক্তকণ্ঠে স্বীকার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘করোনার প্রথম ঢেউ ও দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলার ক্ষেত্রে গ্লোবাল অ্যাডভাইজরি টিমের সদস্যসদের পরামর্শে উপকৃত হয়েছে রাজ্য। রাজ্যে করোনার পজিটিভিটি রেট বা শনাক্তের হার ৩৩ শতাংশ থেকে এক দশমিক ৭ শতাংশে নেমে আসার পিছনে চিকি‍ৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী থেকে আশা’র সদস্যদের অক্লান্ত পরিশ্রম যেমন রয়েছে, তেমনই গ্লোবাল অ্যাডভাইজরি টিমের বিশেষ করে অভিজি‍ৎদা’দের সাহায্য না পেলে আমরা আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে পারতাম না।’
রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় স্কুল খুলে দেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘স্কুল কলেজ খোলা নিয়ে ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী ভাবনাচিন্তা শুরু করে দিয়েছেন।’ তাঁর কথার পরিপ্রেক্ষিতে মমতা বনদ্যোপাধ্যায় জানান, ‘পরিস্থিতি বিবেচনা করে পুজোর পর পর্যায়ক্রমে স্কুল-কলেজ খোলার চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে। অলটারনেটিভ ডে’তে অর্থা‍ৎ একদিন অন্তর ক্লাস করানো হবে। নজর দেওয়া হবে যাতে কঠোরভাবে বিধি নিষেধ পালন করা হয়। তবে পড়ুয়াদের সুরক্ষার দিক বিবেচনা করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

করোনা মোকাবিলায় রাজ্যের ভূমিকার প্রশংসা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের

আপডেট : ৫ অগাস্ট ২০২১, বৃহস্পতিবার

পুবের কলম প্রতিবেদক: করোনা মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজি‍ৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পৌরাহিত্যে করোনা মোকাবিলায় গঠিত গ্লোবাল অ্যাডভাইজরি কমিটির বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন। বৈঠকের পরে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘বাংলায় টিকা নষ্টের সংখ্যা নগন্য। দেশের মধ্যে টিকাকরণে সেরা রাজ্য।’ এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘রাজ্যে ফিরে আসা অধিকাংশ পরিযায়ী শ্রমিককেই কাজ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের রেশন দেওয়ার পাশাপাশি বিনামূল্যে চিকি‍ৎসা করা হয়েছে।’
রাজ্যে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পরেই উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবিলায় গ্লোবাল অ্যাডভাইজরি কমিটি গঠন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই কমিটিতে অভিজি‍ৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদের পাশাপাশি বিভিন্ন পেশার বিশিষ্টজনদের রাখা হয়েছে। বিশ্বের অন্য কোথাও এমন কমিটি গঠনের নজর নেই। এদিন কমিটির ৬৬তম বৈঠকে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনার পাশাপাশি তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলা নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়।
বৈঠক শেষে কমিটির সদস্যদের নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কমিটির সদস্যদেরই সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেওয়ার জন্য এগিয়ে দেন তিনি। এদিন এক প্রশ্নের জবাবে অভিজি‍ৎ অভিযোগের সুরে বলেন, ‘দেশে পর্যাপ্ত টিকার জোগান দিতে পারছে না কেন্দ্র। প্রতিশ্রুতিমতো টিকা সরবরাহ করতে পারছে না। যদি সারা দেশে পর্যাপ্ত টিকার সরবরাহ থাকত, তাহলে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ উঠত না।’ করোনার টিকাকরণ নিয়ে রাজ্য সরকারের প্রশংসা করে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘বাংলায় টিকা নষ্ট হচ্ছে না। এ বিষয়ে নজর রেখেছেন স্বাস্থ্য সচিব।’ রাজ্যে তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলার জন্য কি-কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলার জন্য এখন যেভাবে প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন, তা নেওয়া হয়েছে। তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় অনেক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাজ্যে পর্যাপ্ত অক্সিজেনও রয়েছে। মানুষকে সচেতন করতে হবে। যাতে শরীর খারাপ হলেই আগে থেকে চিকিৎসা শুরু করা যায়। পরীক্ষার ব্যবস্থা আছে। গ্রামে গ্রামে আশা কর্মী, চিকিৎসকরা রয়েছেন। সামান্য অসুস্থ বোধ করলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।’
রাজ্য সরকার করোনা মোকাবিলায় যে সাফল্য পেয়েছে তার পিছনে গ্লোবাল অ্যাডভাইজরি টিমের সদস্যদের পরামর্শ বিশেষ অবদান রয়েছে বলে মুক্তকণ্ঠে স্বীকার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘করোনার প্রথম ঢেউ ও দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলার ক্ষেত্রে গ্লোবাল অ্যাডভাইজরি টিমের সদস্যসদের পরামর্শে উপকৃত হয়েছে রাজ্য। রাজ্যে করোনার পজিটিভিটি রেট বা শনাক্তের হার ৩৩ শতাংশ থেকে এক দশমিক ৭ শতাংশে নেমে আসার পিছনে চিকি‍ৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী থেকে আশা’র সদস্যদের অক্লান্ত পরিশ্রম যেমন রয়েছে, তেমনই গ্লোবাল অ্যাডভাইজরি টিমের বিশেষ করে অভিজি‍ৎদা’দের সাহায্য না পেলে আমরা আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে পারতাম না।’
রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় স্কুল খুলে দেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘স্কুল কলেজ খোলা নিয়ে ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী ভাবনাচিন্তা শুরু করে দিয়েছেন।’ তাঁর কথার পরিপ্রেক্ষিতে মমতা বনদ্যোপাধ্যায় জানান, ‘পরিস্থিতি বিবেচনা করে পুজোর পর পর্যায়ক্রমে স্কুল-কলেজ খোলার চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে। অলটারনেটিভ ডে’তে অর্থা‍ৎ একদিন অন্তর ক্লাস করানো হবে। নজর দেওয়া হবে যাতে কঠোরভাবে বিধি নিষেধ পালন করা হয়। তবে পড়ুয়াদের সুরক্ষার দিক বিবেচনা করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।