২৬ জুলাই ২০২৫, শনিবার, ১০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

উপরাষ্ট্রপতির ইস্তফা ঘিরে নতুন পাল্টা কৌশল! ধনখড়কে নিয়ে নৈশভোজ আয়োজনের ভাবনায় বিরোধী শিবির

আফিয়া‌‌ নৌশিন
  • আপডেট : ২৫ জুলাই ২০২৫, শুক্রবার
  • / 41

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: গত এপ্রিল মাসের এক নৈশভোজ ঘিরে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের সম্পর্কে চাপানউতোর তৈরি হয়েছিল। এ বার সেই ধনখড়ের হঠাৎ ইস্তফার পর, তাঁকেই বিদায়ী নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানিয়ে মোদী সরকারের উপর কৌশলগত চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’।

 

সোমবার আচমকাই উপরাষ্ট্রপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন ধনখড়। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু পরদিন তা গ্রহণও করেন। তবে এমন আকস্মিক সিদ্ধান্তের পিছনে থাকা কারণ এখনও অস্পষ্ট। ধনখড় তাঁর পদত্যাগপত্রে অসুস্থতার কথা লিখলেও রাজনৈতিক মহলে সন্দেহ—এই সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় চাপের ফল। সরকারের তরফে কোনও ব্যাখ্যা না আসায় জল্পনা আরও জোরালো হয়েছে।

আরও পড়ুন: উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের পদত্যাগ ঘিরে রাজনৈতিক জলঘোলা, সন্দেহে বিরোধীরা

 

আরও পড়ুন: আচমকা উপরাষ্ট্রপতি পদ থেকে পদত্যাগ জগদীপ ধনখড়ের, রাজনৈতিক গুঞ্জন শুরু

সূত্র বলছে, ধনখড়ের এই ইস্তফার জেরে জাতীয় রাজনীতিতে নতুন দিক খুলতে পারে। বিরোধী শিবিরের একাংশ চাইছে ধনখড়কে বিদায়ী নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানিয়ে মোদী সরকারকে বিড়ম্বনায় ফেলতে। বিষয়টি নিয়ে ইন্ডিয়া জোটের মধ্যে আলোচনা চলছে। যদিও শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি, তবে কিছু কংগ্রেস সাংসদ ইতিমধ্যেই বিরোধী জোটের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টি আলোচনা করেছেন।

 

এই ভাবনাকে কেউ কেউ ‘জুলাই ডিনার’ বলে অভিহিত করছেন, যা এপ্রিলের ঘটনার এক প্রতীকী পাল্টা কৌশল হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

 

জল্পনার কেন্দ্রে রয়েছে গত এপ্রিলের ঘটনা। মার্কিন উপরাষ্ট্রপতি জেডি ভান্সের ভারত সফরের সময়ে রীতি অনুযায়ী নৈশভোজের আয়োজন করার কথা ছিল ভারতের উপরাষ্ট্রপতির। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, ভান্সের সম্মানে সেই আয়োজন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, ধনখড়কে পুরোপুরি উপেক্ষা করেই।

 

রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করে, এটি ছিল ধনখড়ের উপর মোদী সরকারের অনাস্থার প্রকাশ। বহু ইস্যুতে ধনখড়ের নিরপেক্ষ অবস্থান এবং মন্তব্য সরকার মেনে নিতে পারেনি বলেই তাঁকে ঐতিহ্যবাহী সাংবিধানিক দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়, এমনটাই সন্দেহ বিরোধীদের।

বৃহস্পতিবার রাজ্যসভার বিজ়নেস অ্যাডভাইজ়ারি কমিটির বৈঠকে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ প্রশ্ন তোলেন, “কেন্দ্র কি ধনখড়ের জন্য কোনও বিদায়ী সংবর্ধনার আয়োজন করছে?” সরকারের পক্ষ থেকে কোনও জবাব না আসায় এই প্রশ্ন আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে। এরপরই নৈশভোজ আয়োজনের ভাবনা আরও জোরালো হয় বিরোধীদের মধ্যে।

যদি শেষপর্যন্ত বিরোধী জোট এই নৈশভোজের আয়োজন করে এবং ধনখড় সেখানে উপস্থিত থাকেন, তবে তা হবে এক নজিরবিহীন ঘটনা। এতে কেন্দ্র ও বিরোধী শিবিরের মধ্যে সম্পর্কের নতুন সমীকরণ তৈরি হবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহল।

 

জাতীয় রাজনীতির নিরিখে ধনখড়ের আচমকা পদত্যাগ ও তাতে বিরোধীদের এমন পাল্টা পদক্ষেপকে ঘিরে আগামী দিনগুলিতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে চলেছে বলেই অনুমান।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

উপরাষ্ট্রপতির ইস্তফা ঘিরে নতুন পাল্টা কৌশল! ধনখড়কে নিয়ে নৈশভোজ আয়োজনের ভাবনায় বিরোধী শিবির

আপডেট : ২৫ জুলাই ২০২৫, শুক্রবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: গত এপ্রিল মাসের এক নৈশভোজ ঘিরে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের সম্পর্কে চাপানউতোর তৈরি হয়েছিল। এ বার সেই ধনখড়ের হঠাৎ ইস্তফার পর, তাঁকেই বিদায়ী নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানিয়ে মোদী সরকারের উপর কৌশলগত চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’।

 

সোমবার আচমকাই উপরাষ্ট্রপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন ধনখড়। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু পরদিন তা গ্রহণও করেন। তবে এমন আকস্মিক সিদ্ধান্তের পিছনে থাকা কারণ এখনও অস্পষ্ট। ধনখড় তাঁর পদত্যাগপত্রে অসুস্থতার কথা লিখলেও রাজনৈতিক মহলে সন্দেহ—এই সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় চাপের ফল। সরকারের তরফে কোনও ব্যাখ্যা না আসায় জল্পনা আরও জোরালো হয়েছে।

আরও পড়ুন: উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের পদত্যাগ ঘিরে রাজনৈতিক জলঘোলা, সন্দেহে বিরোধীরা

 

আরও পড়ুন: আচমকা উপরাষ্ট্রপতি পদ থেকে পদত্যাগ জগদীপ ধনখড়ের, রাজনৈতিক গুঞ্জন শুরু

সূত্র বলছে, ধনখড়ের এই ইস্তফার জেরে জাতীয় রাজনীতিতে নতুন দিক খুলতে পারে। বিরোধী শিবিরের একাংশ চাইছে ধনখড়কে বিদায়ী নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানিয়ে মোদী সরকারকে বিড়ম্বনায় ফেলতে। বিষয়টি নিয়ে ইন্ডিয়া জোটের মধ্যে আলোচনা চলছে। যদিও শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি, তবে কিছু কংগ্রেস সাংসদ ইতিমধ্যেই বিরোধী জোটের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টি আলোচনা করেছেন।

 

এই ভাবনাকে কেউ কেউ ‘জুলাই ডিনার’ বলে অভিহিত করছেন, যা এপ্রিলের ঘটনার এক প্রতীকী পাল্টা কৌশল হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

 

জল্পনার কেন্দ্রে রয়েছে গত এপ্রিলের ঘটনা। মার্কিন উপরাষ্ট্রপতি জেডি ভান্সের ভারত সফরের সময়ে রীতি অনুযায়ী নৈশভোজের আয়োজন করার কথা ছিল ভারতের উপরাষ্ট্রপতির। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, ভান্সের সম্মানে সেই আয়োজন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, ধনখড়কে পুরোপুরি উপেক্ষা করেই।

 

রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করে, এটি ছিল ধনখড়ের উপর মোদী সরকারের অনাস্থার প্রকাশ। বহু ইস্যুতে ধনখড়ের নিরপেক্ষ অবস্থান এবং মন্তব্য সরকার মেনে নিতে পারেনি বলেই তাঁকে ঐতিহ্যবাহী সাংবিধানিক দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়, এমনটাই সন্দেহ বিরোধীদের।

বৃহস্পতিবার রাজ্যসভার বিজ়নেস অ্যাডভাইজ়ারি কমিটির বৈঠকে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ প্রশ্ন তোলেন, “কেন্দ্র কি ধনখড়ের জন্য কোনও বিদায়ী সংবর্ধনার আয়োজন করছে?” সরকারের পক্ষ থেকে কোনও জবাব না আসায় এই প্রশ্ন আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে। এরপরই নৈশভোজ আয়োজনের ভাবনা আরও জোরালো হয় বিরোধীদের মধ্যে।

যদি শেষপর্যন্ত বিরোধী জোট এই নৈশভোজের আয়োজন করে এবং ধনখড় সেখানে উপস্থিত থাকেন, তবে তা হবে এক নজিরবিহীন ঘটনা। এতে কেন্দ্র ও বিরোধী শিবিরের মধ্যে সম্পর্কের নতুন সমীকরণ তৈরি হবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহল।

 

জাতীয় রাজনীতির নিরিখে ধনখড়ের আচমকা পদত্যাগ ও তাতে বিরোধীদের এমন পাল্টা পদক্ষেপকে ঘিরে আগামী দিনগুলিতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে চলেছে বলেই অনুমান।