১৭ অক্টোবর ২০২৫, শুক্রবার, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অ্যান্টার্কটিকার বরফগলা রুখছে পেঙ্গুইনের মল

চামেলি দাস
  • আপডেট : ২৮ মে ২০২৫, বুধবার
  • / 184

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অ্যান্টার্কটিকার বরফে আচ্ছাদিত বিশাল অঞ্চল দ্রুত উষ্ণ হয়ে উঠছে, যা বিশ্ব পরিবেশের জন্য এক গভীর উদ্বেগের কারণ। তবে সম্প্রতি এক গবেষণায় উঠে এসেছে এক অপ্রচলিত রক্ষাকবচ; পেঙ্গুইন মল।

গবেষকরা জানিয়েছেন, পেঙ্গুইনের মল থেকে নির্গত অ্যামোনিয়া গ্যাস বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে অতিরিক্ত মেঘ গঠনে সহায়তা করে। এই মেঘ সূর্যের তাপ কিছুটা প্রতিরোধ করে, ফলে অ্যান্টার্কটিকার তাপমাত্রা তুলনামূলকভাবে কম থাকে। অর্থাৎ, পেঙ্গুইনের এই প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া কিছুটা হলেও মেরু অঞ্চলের উষ্ণায়ন রোধে সাহায্য করছে।

আরও পড়ুন: জনমানবহীন দ্বীপেও ১০ শতাংশ শুল্ক ট্রাম্পের!

হেলসিঙ্কির বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুমণ্ডল বিজ্ঞানী ম্যাথিউ বয়ারের নেতৃত্বে এই গবেষণায় দেখা গেছে, পেঙ্গুইনদের বসবাসকৃত এলাকা থেকে বাতাসে অ্যামোনিয়ার মাত্রা প্রচণ্ডভাবে বেড়ে যায়। এই অ্যামোনিয়া যখন সমুদ্রের ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটনের থেকে নির্গত সালফারযুক্ত গ্যাসের সঙ্গে মিশে যায়, তখন ছোট ছোট কণা তৈরি হয়। এর ফলে মেঘের পরিমাণ বাড়ে এবং সূর্যের আলো কিছুটা প্রতিফলিত হয়।

গবেষকরা অ্যান্টার্কটিকার সিমুর দ্বীপে পেঙ্গুইন কলোনির কাছাকাছি বিভিন্ন যন্ত্রপাতি স্থাপন করে বাতাসের গুণগত মান ও মেঘের গঠন পর্যবেক্ষণ করেছেন। তারা দেখেছেন, পেঙ্গুইনদের উপস্থিতির কারণে বাতাসে অ্যামোনিয়ার মাত্রা হাজার গুণ বেড়ে যায় এবং মেঘের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে।

তবে পেঙ্গুইনের সংখ্যা কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, কারণ সমুদ্রের বরফ গলতে থাকায় তাদের বাসস্থান ও খাদ্য সংগ্রহের সমস্যা বাড়ছে। গবেষকরা বলছেন, পেঙ্গুইনের এই প্রাকৃতিক ভূমিকা হারালে অ্যান্টার্কটিকার জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

এই গবেষণা প্রমাণ করে যে, প্রকৃতির ছোট ছোট উপাদানও জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। পেঙ্গুইনের মল থেকে শুরু করে মেঘ সৃষ্টি; সবকিছুই এক জটিল প্রক্রিয়ার অংশ, যা আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ। তাই জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও পরিবেশ রক্ষায় আমাদের আরও সচেতন হওয়া জরুরি।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

অ্যান্টার্কটিকার বরফগলা রুখছে পেঙ্গুইনের মল

আপডেট : ২৮ মে ২০২৫, বুধবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অ্যান্টার্কটিকার বরফে আচ্ছাদিত বিশাল অঞ্চল দ্রুত উষ্ণ হয়ে উঠছে, যা বিশ্ব পরিবেশের জন্য এক গভীর উদ্বেগের কারণ। তবে সম্প্রতি এক গবেষণায় উঠে এসেছে এক অপ্রচলিত রক্ষাকবচ; পেঙ্গুইন মল।

গবেষকরা জানিয়েছেন, পেঙ্গুইনের মল থেকে নির্গত অ্যামোনিয়া গ্যাস বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে অতিরিক্ত মেঘ গঠনে সহায়তা করে। এই মেঘ সূর্যের তাপ কিছুটা প্রতিরোধ করে, ফলে অ্যান্টার্কটিকার তাপমাত্রা তুলনামূলকভাবে কম থাকে। অর্থাৎ, পেঙ্গুইনের এই প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া কিছুটা হলেও মেরু অঞ্চলের উষ্ণায়ন রোধে সাহায্য করছে।

আরও পড়ুন: জনমানবহীন দ্বীপেও ১০ শতাংশ শুল্ক ট্রাম্পের!

হেলসিঙ্কির বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুমণ্ডল বিজ্ঞানী ম্যাথিউ বয়ারের নেতৃত্বে এই গবেষণায় দেখা গেছে, পেঙ্গুইনদের বসবাসকৃত এলাকা থেকে বাতাসে অ্যামোনিয়ার মাত্রা প্রচণ্ডভাবে বেড়ে যায়। এই অ্যামোনিয়া যখন সমুদ্রের ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটনের থেকে নির্গত সালফারযুক্ত গ্যাসের সঙ্গে মিশে যায়, তখন ছোট ছোট কণা তৈরি হয়। এর ফলে মেঘের পরিমাণ বাড়ে এবং সূর্যের আলো কিছুটা প্রতিফলিত হয়।

গবেষকরা অ্যান্টার্কটিকার সিমুর দ্বীপে পেঙ্গুইন কলোনির কাছাকাছি বিভিন্ন যন্ত্রপাতি স্থাপন করে বাতাসের গুণগত মান ও মেঘের গঠন পর্যবেক্ষণ করেছেন। তারা দেখেছেন, পেঙ্গুইনদের উপস্থিতির কারণে বাতাসে অ্যামোনিয়ার মাত্রা হাজার গুণ বেড়ে যায় এবং মেঘের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে।

তবে পেঙ্গুইনের সংখ্যা কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, কারণ সমুদ্রের বরফ গলতে থাকায় তাদের বাসস্থান ও খাদ্য সংগ্রহের সমস্যা বাড়ছে। গবেষকরা বলছেন, পেঙ্গুইনের এই প্রাকৃতিক ভূমিকা হারালে অ্যান্টার্কটিকার জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

এই গবেষণা প্রমাণ করে যে, প্রকৃতির ছোট ছোট উপাদানও জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। পেঙ্গুইনের মল থেকে শুরু করে মেঘ সৃষ্টি; সবকিছুই এক জটিল প্রক্রিয়ার অংশ, যা আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ। তাই জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও পরিবেশ রক্ষায় আমাদের আরও সচেতন হওয়া জরুরি।