১৫ নভেম্বর ২০২৫, শনিবার, ২৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্দি-কাশি থেকে ক্যানসার প্রতিরোধ সহ ধূমপানের আসক্তি কমাতে সাহায্য করে গোলমরিচ

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩, বৃহস্পতিবার
  • / 219

বিশেষ প্রতিবেদন: গোলমরিচকে বিশ্বের অন্যতম স্বাস্থ্যসম্মত মশলা হিসেবে মনে করা হয়। এর আছে নানা ঔষধি গুণাগুণ। সাধারণত জ্বর, সর্দি, গনোরিয়া ও পেট ফাঁপায় গোলমরিচ বেশ কার্যকর। তা ছাড়া গোলমরিচ ও পেঁয়াজবাটা একসঙ্গে চুলের জন্য পুষ্টিকর। কোষ্ঠকাঠিন্য, ক্ষুধামান্দ্য, রক্তাল্পতা, দাঁতের রোগ, ডায়রিয়া ও হৃদ্‌রোগেও উপকারি গোলমরিচ। রান্নার স্বাদ বাড়াতে গোলমরিচ ব্যবহার করা হয়। গোল মরিচের মধ্যে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, ফরফরাস, সোডিয়াম, জিঙ্ক, ম্যাগানিজ, নিয়াসিন, ফোলেট, বিটাইন, বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন ই, কে এবং এ রয়েছে। সর্দি-কাশি কমাতেও গোল মরিচের ভূমিকা রয়েছে। শীতেও গোল মরিচ খাওয়া উপকারি বলে মানা হয়।

সর্দি-কাশি থেকে ক্যানসার প্রতিরোধ সহ ধূমপানের আসক্তি কমাতে সাহায্য করে গোলমরিচ

জেনে নেওয়া যাক গোলমরিচের উপকারিতা 

১) গোটা কালো গোলমরিচের টুকরো অতিরিক্ত মেদ কমাতে সাহায্য করে। তাই খাবারে বেশি করে গোলমরিচ ব্যবহার করা খুবই স্বাস্থ্যকর। গোলমরিচ হজমে সাহায্য করে। কারণ পাকস্থলীতে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের ক্ষরণ বেড়ে যায়। তাই এটি ভালো হজম, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং ডায়রিয়ার মতো সমস্যা প্রতিরোধ করে। শরীরে হজমের সমস্যার কারণে অনেক রোগ দেখা দেয়।

৩) শীতের সংক্রমণ প্রতিরোধে গোলমরিচ খুবই উপকারি। ঠান্ডা লাগলে তুলসী পাতা ও গোলমরিচ দিয়ে জল ফুটিয়ে নিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়। গোলমরিচে রয়েছে ভিটামিন সি, যা আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরকে শক্তিশালী রাখে।

৪) শীতকাল আসতে না আসতেই বহু মানুষের অ্যালার্জি, সর্দি-কাশি, হাঁপানির মতো সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে গোলমরিচ খুবই কার্যকরী। এক কাপ ফুটন্ত জলে এক টেবিল চামচ গোলমরিচ এবং দুই টেবিল চামচ মধু যোগ করলে শ্লেষ্মা দূর হবে। একইসঙ্গে গলা ব্যথা কমায়।

৫)দাঁত সুস্থ রাখতেও গোলমরিচ উপকারি। দাঁতের ক্ষয় বা দাঁতের ব্যথা হলে কিছু গোলমরিচ মুখে রাখলে ভালো হয়।

৬) ধূমপায়ীদের জন্য গোলমরিচ কার্যকরী। যারা চেন স্মোকার বা বেশি ধূমপান করেন তাদের জন্য গোলমরিচ খুব উপকারি। গোলমরিচ ধূমপানের আসক্তি কমাতে সাহায্য করে।

৭)ক্যানসারের অন্যতম ওষুধ হল  গোলমরিচ। এছাড়াও গোলমরিচে আছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি ও প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা ক্ষতিকর ফ্রী রেডিকেলসে্র হাত থেকে রক্ষা করে শরীরকে ক্যানসারের হাত থেকে বাঁচায়।

৮) যাদের ঘুমঘুম লাগে বা সর্বদা বিরক্ত থাকেন। তাহলে গোলমরিচের চা খান। এটি মস্তিষ্কের ডোপমাইন নামক একটি রাসায়নিক ছড়াবে। যা আপনাকে ভালো বোধ করো করাবে।

সর্দি-কাশি থেকে ক্যানসার প্রতিরোধ সহ ধূমপানের আসক্তি কমাতে সাহায্য করে গোলমরিচ

 

তবে উপকারিতার সঙ্গে গোল মরিচের বেশ কিছু অপকারিতা রয়েছে। কোনও কিছুই বেশি খাওয়া ভালো নয়। গ্রীষ্মের সময় গোলমরিচ অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয়। অতিরিক্ত মাত্রায় খেলে নাকের রক্তপাতের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। গর্ভাবস্থায় গোলমরিচ খাওয়া উচিত নয়।যাদের অ্যালার্জি আছে গোলমরিচে, তারা যদি গোল মরিচ খায়। তাহলে ত্বকের চুলকানি, ফোলা ভাব এবং লাল ভাবের মত কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে। প্রাকৃতিকভাবে গোলমরিচ গরম তাই গোলমরিচ যদি অতিরিক্ত খাওয়া হয় তাহলে পেটে জ্বালা ভাব অনুভব হবে। যাদের গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা আছে। তাদের গোলমরিচ খেলে পেটের অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে। তাই তাদের গোলমরিচ এড়িয়ে চলাই ভালো। তাই বলা যায়, সঠিক পরিমাণে খেলেই গোলমরিচের সুফল মিলবে।

 

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

সর্দি-কাশি থেকে ক্যানসার প্রতিরোধ সহ ধূমপানের আসক্তি কমাতে সাহায্য করে গোলমরিচ

আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩, বৃহস্পতিবার

বিশেষ প্রতিবেদন: গোলমরিচকে বিশ্বের অন্যতম স্বাস্থ্যসম্মত মশলা হিসেবে মনে করা হয়। এর আছে নানা ঔষধি গুণাগুণ। সাধারণত জ্বর, সর্দি, গনোরিয়া ও পেট ফাঁপায় গোলমরিচ বেশ কার্যকর। তা ছাড়া গোলমরিচ ও পেঁয়াজবাটা একসঙ্গে চুলের জন্য পুষ্টিকর। কোষ্ঠকাঠিন্য, ক্ষুধামান্দ্য, রক্তাল্পতা, দাঁতের রোগ, ডায়রিয়া ও হৃদ্‌রোগেও উপকারি গোলমরিচ। রান্নার স্বাদ বাড়াতে গোলমরিচ ব্যবহার করা হয়। গোল মরিচের মধ্যে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, ফরফরাস, সোডিয়াম, জিঙ্ক, ম্যাগানিজ, নিয়াসিন, ফোলেট, বিটাইন, বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন ই, কে এবং এ রয়েছে। সর্দি-কাশি কমাতেও গোল মরিচের ভূমিকা রয়েছে। শীতেও গোল মরিচ খাওয়া উপকারি বলে মানা হয়।

সর্দি-কাশি থেকে ক্যানসার প্রতিরোধ সহ ধূমপানের আসক্তি কমাতে সাহায্য করে গোলমরিচ

জেনে নেওয়া যাক গোলমরিচের উপকারিতা 

১) গোটা কালো গোলমরিচের টুকরো অতিরিক্ত মেদ কমাতে সাহায্য করে। তাই খাবারে বেশি করে গোলমরিচ ব্যবহার করা খুবই স্বাস্থ্যকর। গোলমরিচ হজমে সাহায্য করে। কারণ পাকস্থলীতে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের ক্ষরণ বেড়ে যায়। তাই এটি ভালো হজম, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং ডায়রিয়ার মতো সমস্যা প্রতিরোধ করে। শরীরে হজমের সমস্যার কারণে অনেক রোগ দেখা দেয়।

৩) শীতের সংক্রমণ প্রতিরোধে গোলমরিচ খুবই উপকারি। ঠান্ডা লাগলে তুলসী পাতা ও গোলমরিচ দিয়ে জল ফুটিয়ে নিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়। গোলমরিচে রয়েছে ভিটামিন সি, যা আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরকে শক্তিশালী রাখে।

৪) শীতকাল আসতে না আসতেই বহু মানুষের অ্যালার্জি, সর্দি-কাশি, হাঁপানির মতো সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে গোলমরিচ খুবই কার্যকরী। এক কাপ ফুটন্ত জলে এক টেবিল চামচ গোলমরিচ এবং দুই টেবিল চামচ মধু যোগ করলে শ্লেষ্মা দূর হবে। একইসঙ্গে গলা ব্যথা কমায়।

৫)দাঁত সুস্থ রাখতেও গোলমরিচ উপকারি। দাঁতের ক্ষয় বা দাঁতের ব্যথা হলে কিছু গোলমরিচ মুখে রাখলে ভালো হয়।

৬) ধূমপায়ীদের জন্য গোলমরিচ কার্যকরী। যারা চেন স্মোকার বা বেশি ধূমপান করেন তাদের জন্য গোলমরিচ খুব উপকারি। গোলমরিচ ধূমপানের আসক্তি কমাতে সাহায্য করে।

৭)ক্যানসারের অন্যতম ওষুধ হল  গোলমরিচ। এছাড়াও গোলমরিচে আছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি ও প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা ক্ষতিকর ফ্রী রেডিকেলসে্র হাত থেকে রক্ষা করে শরীরকে ক্যানসারের হাত থেকে বাঁচায়।

৮) যাদের ঘুমঘুম লাগে বা সর্বদা বিরক্ত থাকেন। তাহলে গোলমরিচের চা খান। এটি মস্তিষ্কের ডোপমাইন নামক একটি রাসায়নিক ছড়াবে। যা আপনাকে ভালো বোধ করো করাবে।

সর্দি-কাশি থেকে ক্যানসার প্রতিরোধ সহ ধূমপানের আসক্তি কমাতে সাহায্য করে গোলমরিচ

 

তবে উপকারিতার সঙ্গে গোল মরিচের বেশ কিছু অপকারিতা রয়েছে। কোনও কিছুই বেশি খাওয়া ভালো নয়। গ্রীষ্মের সময় গোলমরিচ অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয়। অতিরিক্ত মাত্রায় খেলে নাকের রক্তপাতের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। গর্ভাবস্থায় গোলমরিচ খাওয়া উচিত নয়।যাদের অ্যালার্জি আছে গোলমরিচে, তারা যদি গোল মরিচ খায়। তাহলে ত্বকের চুলকানি, ফোলা ভাব এবং লাল ভাবের মত কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে। প্রাকৃতিকভাবে গোলমরিচ গরম তাই গোলমরিচ যদি অতিরিক্ত খাওয়া হয় তাহলে পেটে জ্বালা ভাব অনুভব হবে। যাদের গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা আছে। তাদের গোলমরিচ খেলে পেটের অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে। তাই তাদের গোলমরিচ এড়িয়ে চলাই ভালো। তাই বলা যায়, সঠিক পরিমাণে খেলেই গোলমরিচের সুফল মিলবে।