কালো পোশাকে সাংবাদিক সম্মেলন করে নির্বাচন কমিশনের পরিসংখ্যান নিয়ে চার প্রশ্ন আরজেডির

- আপডেট : ২৩ জুলাই ২০২৫, বুধবার
- / 19
কালো পোশাকে সাংবাদিক সম্মেলন করে নির্বাচন কমিশনের পরিসংখ্যান নিয়ে চার প্রশ্ন করল আরজেডি। তেজস্বী যাদব ছাড়াও দলের অন্যান্য নেতৃত্ব সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। আরজেডি বলছে, আমরা তথ্য, যুক্তি ও পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে কিছু প্রশ্ন উত্থাপন করে বলছি যে, ভোটার তালিকা পুনঃপর্যালোচনা অভিযানের আড়ালে বিজেপি এবং নির্বাচন কমিশন যৌথভাবে গণতন্ত্রের পরিশুদ্ধি নয়, বরং বিরোধী ভোটারদের নাম মুছে দেওয়ার কাজ করছে।’
দলটি নির্বাচন কমিশনের গতকাল প্রকাশিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি নিয়ে চারটি প্রশ্ন তুলেছে।
প্রশ্ন–১ : ১৮,৬৬,৮৬৯ মৃত ভোটারের নাম মুছে ফেলা হয়েছে?
২৫ জানুয়ারি ২০২৫-এ যখন সামারি রিভিশনের পর পুরো ভোটার তালিকা আপডেট করা হয়েছিল, তখন কি এই ১৮ লক্ষ মৃত ভোটার ধরা পড়েনি? কেন ধরা পড়েনি? এর দায় কার? আর এখন কোনও বাস্তব যাচাই ছাড়াই, BLO কারও বাড়িতে না গিয়েই আপনারা বলছেন ১৮ লক্ষ ৬৬ হাজার ৮৬৯ জন মারা গেছেন। অর্থাৎ ২৫ জানুয়ারি থেকে ২৪ জুনের মধ্যে ১৮ লক্ষ ৬৬ হাজার ৮৬৯ জন মারা গেলেন? আমরা জানতে চাই, এত বছর ধরে এই মৃত ভোটারদের নাম তালিকায় রাখা হয়েছিল কেন? আগে কি নির্বাচন কমিশন ঘুমিয়ে ছিল? আর এখন হঠাৎ নির্বাচনের আগে তাদের নাম মুছে ফেলা রাজনৈতিক দলগুলির সম্মতি ছাড়া কীভাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ হতে পারে?
প্রশ্ন–২ : ২৬ লক্ষ ভোটার কি ‘অন্য বিধানসভা এলাকায়’ স্থানান্তরিত হয়েছেন?
নির্বাচন কমিশন বলছে যে ২৬ লক্ষ ১ হাজার ভোটার স্থায়ীভাবে অন্য কোথাও স্থানান্তরিত হয়েছেন। মাত্র চার মাসে এত মানুষ কি স্থান পরিবর্তন করেছেন? কোনও শারীরিক যাচাই ছাড়া এটা কীভাবে নির্ধারিত হলো?
২৫ জানুয়ারি থেকে ২৪ জুনের মধ্যে ২৬ লক্ষ ভোটারের স্থানান্তরের দাবি নিজেই সন্দেহজনক। কি সম্ভব যে একই বছরে ২৬ লক্ষ মানুষ তাদের বাসস্থান বদল করেছেন? এই পরিসংখ্যান দেখায় যে এটি ইচ্ছাকৃতভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে, বিশেষ করে তাদের উপর যাদের ভোটের ধারা শাসক দলের বিপক্ষে।
প্রশ্ন–৩ : ৭ লক্ষ ভোটারকে ‘দুই জায়গায় নামাঙ্কিত’ বলা হচ্ছে!
এটা কোন ভিত্তিতে নির্ধারিত হলো? প্রতিটি ভোটারকে কি ব্যক্তিগতভাবে নোটিশ পাঠানো হয়েছে? কতজন উত্তর দিয়েছেন, কতজন ব্যক্তিগতভাবে যাচাই করেছেন? এই প্রক্রিয়ায় সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে।
প্রশ্ন–৪ : ৬.৬২% ভোটার এখনো কি ‘নিজ ঠিকানায় অনুপস্থিত’?
অর্থাৎ মোট ৫২ লক্ষ ভোটারের নাম কেটে দেওয়া হচ্ছে। এই পরিসংখ্যান শাসক দলের ইশারায় নির্বাচনী অঙ্ক কষার হাতিয়ার হয়ে উঠছে। যাদের দরজায় BLO যায়নি, তাদের অনুপস্থিত বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। আর এই অজুহাতে লক্ষ লক্ষ নাম বাদ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
নির্বাচন কমিশনে বিজেপির ৫২ হাজার ৯৪৬ জন নিবন্ধিত BLA আছে?
এই BLAs-এর মধ্যে কেউ কি কখনও নির্বাচন কমিশনের কাছে বিদেশি নাগরিকের বিষয়ে অভিযোগ তুলেছেন?
নির্বাচন কমিশন কি জানিয়েছে যে এই ৫২ লক্ষ ৬৬ হাজার ভোটারের মধ্যে, যাদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে, কতজন বিদেশি নাগরিক?
আসলে নির্বাচন কমিশনের এই পুরো পুনঃপর্যালোচনা অভিযান একটি পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ! বিহার নির্বাচনে হার মেনে নিয়ে বিজেপির লোকেরা দুর্বল শ্রেণি, সংখ্যালঘু, দলিত, পিছিয়ে পড়া এবং বিরোধী দল সমর্থকদের নাম তালিকা থেকে বাদ দিয়ে তাদের গণতন্ত্র ও সংবিধান থেকে বঞ্চিত করতে চাইছে। আমরা বিহারে এই মনমর্জি চলতে দেব না।