স্বল্প খরচে পরিবেশবান্ধব নির্মাণের দিশা দিয়ে পিএইচডি ডিগ্রি রামিজ রাজার

- আপডেট : ৩১ জানুয়ারী ২০২২, সোমবার
- / 37
আসিফ রেজা আনসারীঃ বর্তমানে উন্নয়নশীল এবং উন্নত দেশগুলিতে ডাম্পিং সাইট বা নিচু এলাকাগুলিতে নির্বিচারে ও অবৈজ্ঞানিকভাবে কঠিন বর্জ্য ফেলার জন্য মারাত্মক আকারে লিথোস্ফিরিক (মাটি এবং জল) দূষণ ঘটছে। ডাম্পিং সাইট থেকে নির্গত বিষাক্ত লিচেট আশেপাশের মাটি এবং ভূগর্ভস্থ জলের গুণাবলির মারাত্মক অবক্ষয় ঘটায়। স্বাভাবিকভাবে দূষণের ক্রমাগত বৃদ্ধি সংশ্লিষ্ট অঞ্চলগুলির বাসিন্দাদের কাছে প্রকৃতই উদ্বেগের বিষয়।
গবেষণা বলছে, এমন দূষণ হলে সেইস্থানে নির্মাণ কাজ করতে অনেক খরচ পড়ে। কিন্তু তা হবে কেন? সম্প্রতি একটি গবেষণা এই খরচ কমানোর বিষয়ে দিশা দেখিয়েছে।
গবেষণা বলছে, মাটির মান ভালো না হলে বেশি গভীরতাযুক্ত নির্মাণ কাঠামো তৈরি করতে হয় ফলে খরচ বাড়ে। তবে মাটির গুণাগুণ পালটে দিয়ে খরচের রাশ কমানো যেতে পারে। এমনই একটি গবেষণা চালান বীরভূমের এক তরুণ গবেষক। কম খরচ ও পরিবেশবান্ধব নির্মাণ প্রকৌশলের দিশা দেখিয়েই এ বছর পিএইচডি ডিগ্রি পেলেন তরুণ গবেষক ও সমাজকর্মী রামিজ রাজা।
গবেষক রামিজ রাজা জানান, তার অন্বেষণের বিষয় ছিল স্থানীয়ভাবে উপলব্ধ টেকসই এবং সস্তা উপকরণের একটি সুষম মিশ্রণের কার্যকারিতা পরীক্ষা করা। দেখা গিয়েছে পাওয়ার প্ল্যান্ট ও স্টিল প্ল্যান্ট থেকে উপজাত বর্জ্য ফ্লাই অ্যাশ ও ব্লাস্ট ফার্নেস স্ল্যাগ এবং স্থানীয়ভাবে উপলব্ধ কুইক লাইম যান্ত্রিক মিশ্রণের মাধ্যমে দূষিত স্থানকে শক্ত বা স্থির করতে পারে। তিনি আরও বলেন, মাটির গুণাগুন পালটানোর জন্য বিশেষ মিশ্রণ তৈরি করা যেতে পারে। তা মাটির শক্তি পুনরুদ্ধার করে এবং পারিপার্শ্বিক লিথোস্ফিরিক দূষণ কমাতেও সাহায্য করে। ফলে ব্রিজ বা বাড়ি তৈরির সময় বেশি গভীরতাযুক্ত কাঠামো তৈরি করতে হয় না। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রেও সমস্যা হবে না বলেও জানান গবেষক রামিজ রাজা, কারণ মাটির গুণমান বৃদ্ধির জন্য এক্ষেত্রে বর্জ্য ব্যবহার করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত ড. রামিজ রাজার জন্ম বীরভুমের মুরারইয়ের বাঁয়ুড়া গোপালপুরে। তিনি ২০০৪ সালে মাধ্যমিক পাশ করেন। ২০০৬ সালে বিজ্ঞান নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর বীরভুমেরই একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হন। ২০১০ সালে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন রামিজ। তারপর ২০১৪ সালে দুর্গাপুরের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ টেকনলজি থেকে এম.টেক করেন। সেখানেই যুক্ত হন গবেষণার কাজে। সম্প্রতি পিএইচডি ডিগ্রি পেয়েছেন রামিজ রাজা। এরই পাশাপাশি তিনি ভূমি নামে একটি সংগঠনের অন্যতম সংগঠক।