বিনা খরচে আইএএস, আইপিএস হওয়ার আবাসিক কোচিং রাজ্য হজ কমিটির

- আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, বৃহস্পতিবার
- / 153
আবেদনের শেষ তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
বিশেষ প্রতিবেদক: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ বছরের বাজেটও সংখ্যালঘু বরাদ্দ খানিকটা হলেও বৃদ্ধি করেছেন। ২০২৪-এর বাজেটে সংখ্যালঘুদের জন্য বরাদ্দ ছিল ৫৫৩০.৬৫ কোটি টাকা। ২০২৫-এর বাজেটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংখ্যালঘুদের জন্য বাজেট বরাদ্দ করলেন ৫৬০২.২৯ কোটি টাকা।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘুদের আর্থিক ও শিক্ষাক্ষেত্রে সাচার কমিটি বর্ণিত অবস্থা পেরিয়ে তারা যেন সকলের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যেতে পারেন। এ জন্য মুখ্যমন্ত্রী মুসলিম, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ ও পার্সি সম্প্রদায়ের সার্বিক উন্নয়নের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ করে থাকেন।
সংখ্যালঘু ছেলেমেয়েরা যাতে আইএএস, আইপিএস, ডব্লুবিসিএস ইত্যাদি প্রশাসনিক ও পেশাগত বৃত্তিগুলিতেও ভালো রেজাল্ট করে ক্ষমতায়ণের দিকে এগিয়ে চলে তার জন্য নানা প্রকল্প গ্রহণ করেছে সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতর।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আর একটি বিভাগ রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য হজ কমিটি। ইদানিং পশ্চিমবঙ্গের জন্য বরাদ্দ হজযাত্রীদের কোটা পূর্ণ না হওয়ায় এই বিভাগটির কাজ খানিকটা কমে গেছে।
তবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য হজ কমিটি সংখ্যালঘু উন্নয়নেও আরও বেশকিছু কাজ হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ছাত্রী ও চাকরিরত তরুণীদের জন্য হস্টেল পরিচালনা এবং শিক্ষাক্ষেত্রেও বিশেষ বিশেষ কাজের আনজাম দেওয়া।
এর মধ্যে একটি হচ্ছে, তারা আইএএস, আইপিএস, ডব্লুবিসিএস ইত্যাদি প্রশাসনিক পদে এবং বৃত্তিমূলক পরীক্ষায় সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের তৈরি করার জন্য নিবিড় ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করেছে। এক্ষেত্রে হজ কমিটির একটি সুবিধা রয়েছে। তারা পার্ক সার্কাস এবং কলকাতার অন্যান্য হজ হাউসে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়া দিয়ে অর্থ রোজগার করতে পারে।
বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ হজ কমিটি যোগ্যশ্রী নামে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এখানে আইএএস, আইপিএস, ডব্লুবিসিএস ইত্যাদি পরীক্ষার জন্য সম্পূর্ণ বিনা খরচে সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের আবাসিক কোচিং দেওয়া হচ্ছে। হজ কমিটির হাতে কৈখালিতে রয়েছে মেয়েদের একটি হস্টেল এবং পাশেই রয়েছে হজ টাওয়ার। এই দুই স্থানে ছেলেমেয়েরা আবাসিকভাবে থেকে আলাদা ক্লাসরুমে ও লাইব্রেরিতে পড়াশোনা করতে পারবে। ১০০ ছেলেমেয়েকে ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে এই নিবিড় কোর্সে ভর্তির জন্য বেছে নেওয়া হবে।
সকলেই বলছেন, পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘুদের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় এবং হজ কমিটির চেয়ারম্যান সাংসদ খলিলুর রহমান ও সংখ্যালঘু দফতরের সচিব পি বি সালিমের সক্রিয় উদ্যোগে এই উদ্যোগ এক সুবর্ন সুযোগের সৃষ্টি করেছে।
পশ্চিম বাংলায় মুসলিমদের জনসংখ্যা ৩ কোটি ৫০ লক্ষ। এছাড়া আরও রয়েছে খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, শিখ ও জৈন্যরা। কিন্তু দুঃখের কথা এত বিপুল জনসংখ্যা থাকা সত্ত্বেও অনলাইন আবেদনে পর্যাপ্ত সংখ্যক তরুণ-তরুণীরা এই কোর্সে ভর্তি হওয়ার জন্য অ্যাপ্লাই করছে না। অথচ অন্য কোনও ইন্সটিটিউশনে এই ধরনের কোর্স করতে গেলে তার জন্য ৫-৬ লক্ষ টাকা মাথাপিছু গুণতে হয়।
সে জন্য পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান ও পুবের কলম পত্রিকার সম্পাদক আহমদ হাসান ইমরান সমস্ত সংখ্যালঘু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা যেন বিনামূল্যে আবাসিক কোচিংয়ের এই সুযোগটির কথা ব্যাপকভাবে প্রচার করেন। বর্তমানে সংখ্যালঘু অধ্যাপক, আইনজীবী প্রভৃতিদের নিয়ে বেশকিছু হোয়ার্টসঅ্যাপ গ্রুপও গড়ে উঠেছে। তারাও আইএএস ও আইপিএস হওয়ার এই সুযোগের কথা গ্রুপে প্রচার করতে পারেন। এর ফলে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির ছেলেমেয়েরা হজ কমিটির বদৌলতে অনায়াসে উচ্চমান সম্পন্ন এই কোর্সে ভর্তি করতে পারবে। আর তাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো আইএএস, আইপিএস বা ডব্লুবিসিএস হয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ উজ্জ্বল করবে।
এ সম্পর্কিত হজ কমিটির বিজ্ঞাপনটি পুনরায় দেখে নিতে ও তা ছড়িয়ে দিতে সচেতন শিক্ষক, অধ্যাপক, আইনজীবী, চিকিৎসক প্রভৃতিদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান আহমদ হাসান ইমরান। আগ্রহীরা হজ কমিটির ওয়েবসাইটে গিয়ে এ সম্পর্কিত পূর্ণাঙ্গ তথ্য পেতে পারেন: www.wbhaj.com।