১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, রবিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সঞ্জীব ভাটের আর্জি খারিজ শীর্ষ কোর্টে

 

গুজরাটে ২০০২ এর দাঙ্গার জন্য সরাসরি তখনকার মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দায়ী করার ফল আজও ভুগে চলেছেন আইপিএস অফিসার সঞ্জীব ভাট। ১৯৯৬ সালে যে বিতর্কিত মাদক মামলায় ২০ বছরের জেল হয় সঞ্জীবের তা চ্যালেঞ্জ করে তিনি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার সেই আর্জি খারিজ করে দিল বিচারপতি জে কে মাহেশ্বরী এবং বিচারপতি বিজয় বিশনয় এর বেঞ্চ। বিচারপতিরা সরাসরি বলেছেন, এই বিষয়ে তাঁরা কোনও রকম ব্যবস্থা নিতেই চান না। ১৯৯৬ সালে গুজরাটের বনস্কন্ঠ জেলার পালানপুর দায়রা আদালত মাদক মামলায় ভাটকে দোষী সাব্যস্ত করে ২০ বছরের জেল দেয়। এই ব্যাপারে অভিযোগ করেছিলেন রাজস্থানের আইনজীবী সুমের সিং রাজপুরোহিত। ১৯৯৬ সালে জেলা পুলিশ দাবি করে, পালানপুরে যে হোটেলে ওই আইনজীবী ছিলেন, সেই হোটেল থেকে প্রচুর মাদক উদ্ধার হয়। এরপর ওই আইনজীবী গ্রেফতার হন। পরে রাজস্থান পুলিশ দাবি করে, ওই আইনজীবীকে মিথ্যে মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। কারণ রাজস্থানের পালিতে এক বিতর্কিত সম্পত্তি অন্যের নামে লিখে দিতে বাধ্য করতে তাঁকে ফাসানো হয়েছে। এরপর গুজরাটের তৎকালীন পুলিশ কমিশনার আই বি ব্যাস ১৯৯৯ সালে এর পূর্নাঙ্গ তদন্ত চেয়ে গুজরাট হাইকোর্ট যান। তদন্তে রাজসাক্ষী হয়ে যান ওই ব্যাস। তিনি সেই সময় বনস্কন্ঠ জেলার এক থানার সাধারণ সাব ইন্সপেক্টর ছিলেন। তিনি বলেন, পুলিশ সুপার সঞ্জীব ভাট ওই মাদক হোটেলে রেখে আইনজীবীকে ফাঁসিয়েছিলেন। তিনি নাকি এই ঘটনার সাক্ষী। ব্যাসের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে ভাট সাসপেন্ড হন এবং তাঁর ২০ বছর কারাদণ্ড হয়। ভাটকে গ্রেফতার করা হয়। এরপরই সাব ইন্সপেক্টর থেকে উল্কার গতিতে পদোন্নতি পেয়ে ব্যাস গুজরাটের পুলিশ কমিশনার হয়ে যান। ভাট এর আগে সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ করেন যে, পালানপুর আদালতে পক্ষপাতী বিচার হয়েছে, তাঁর কথা শোনাই হয়নি। তাই অন্য আদালতে এর পুনর্বিচার হোক। সুপ্রিম কোর্ট সেবার নিম্ন আদালতের বদনাম করার দায়ে ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা করে ভাটের এবং তাঁর আর্জি খারিজ করে দেয়। এবারও তাই হল। সঞ্জীব ভাট হলেন প্রথম আইপিএস, যিনি সরাসরি বলেছিলেন, ২০০২ সালে মুসলিমনিধনের সময় মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মোদি পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দেন যে, ‘হিন্দুদের ক্রোধ প্রকাশ করতে দিন, তাতে যা হয় হবে, আমি বুঝে নেব’। এরপর থেকে তাঁকে একের পর এক মামলায় জড়িয়ে জীবন জেরবার করা হয়।

ট্যাগ :
সর্বধিক পাঠিত

সিরিয়ায় মার্কিন বাহিনীর ওপর আইসিসের হামলার জবাব দেওয়া হবে: ট্রাম্প

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

সঞ্জীব ভাটের আর্জি খারিজ শীর্ষ কোর্টে

আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার

 

গুজরাটে ২০০২ এর দাঙ্গার জন্য সরাসরি তখনকার মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দায়ী করার ফল আজও ভুগে চলেছেন আইপিএস অফিসার সঞ্জীব ভাট। ১৯৯৬ সালে যে বিতর্কিত মাদক মামলায় ২০ বছরের জেল হয় সঞ্জীবের তা চ্যালেঞ্জ করে তিনি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার সেই আর্জি খারিজ করে দিল বিচারপতি জে কে মাহেশ্বরী এবং বিচারপতি বিজয় বিশনয় এর বেঞ্চ। বিচারপতিরা সরাসরি বলেছেন, এই বিষয়ে তাঁরা কোনও রকম ব্যবস্থা নিতেই চান না। ১৯৯৬ সালে গুজরাটের বনস্কন্ঠ জেলার পালানপুর দায়রা আদালত মাদক মামলায় ভাটকে দোষী সাব্যস্ত করে ২০ বছরের জেল দেয়। এই ব্যাপারে অভিযোগ করেছিলেন রাজস্থানের আইনজীবী সুমের সিং রাজপুরোহিত। ১৯৯৬ সালে জেলা পুলিশ দাবি করে, পালানপুরে যে হোটেলে ওই আইনজীবী ছিলেন, সেই হোটেল থেকে প্রচুর মাদক উদ্ধার হয়। এরপর ওই আইনজীবী গ্রেফতার হন। পরে রাজস্থান পুলিশ দাবি করে, ওই আইনজীবীকে মিথ্যে মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। কারণ রাজস্থানের পালিতে এক বিতর্কিত সম্পত্তি অন্যের নামে লিখে দিতে বাধ্য করতে তাঁকে ফাসানো হয়েছে। এরপর গুজরাটের তৎকালীন পুলিশ কমিশনার আই বি ব্যাস ১৯৯৯ সালে এর পূর্নাঙ্গ তদন্ত চেয়ে গুজরাট হাইকোর্ট যান। তদন্তে রাজসাক্ষী হয়ে যান ওই ব্যাস। তিনি সেই সময় বনস্কন্ঠ জেলার এক থানার সাধারণ সাব ইন্সপেক্টর ছিলেন। তিনি বলেন, পুলিশ সুপার সঞ্জীব ভাট ওই মাদক হোটেলে রেখে আইনজীবীকে ফাঁসিয়েছিলেন। তিনি নাকি এই ঘটনার সাক্ষী। ব্যাসের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে ভাট সাসপেন্ড হন এবং তাঁর ২০ বছর কারাদণ্ড হয়। ভাটকে গ্রেফতার করা হয়। এরপরই সাব ইন্সপেক্টর থেকে উল্কার গতিতে পদোন্নতি পেয়ে ব্যাস গুজরাটের পুলিশ কমিশনার হয়ে যান। ভাট এর আগে সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ করেন যে, পালানপুর আদালতে পক্ষপাতী বিচার হয়েছে, তাঁর কথা শোনাই হয়নি। তাই অন্য আদালতে এর পুনর্বিচার হোক। সুপ্রিম কোর্ট সেবার নিম্ন আদালতের বদনাম করার দায়ে ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা করে ভাটের এবং তাঁর আর্জি খারিজ করে দেয়। এবারও তাই হল। সঞ্জীব ভাট হলেন প্রথম আইপিএস, যিনি সরাসরি বলেছিলেন, ২০০২ সালে মুসলিমনিধনের সময় মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মোদি পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দেন যে, ‘হিন্দুদের ক্রোধ প্রকাশ করতে দিন, তাতে যা হয় হবে, আমি বুঝে নেব’। এরপর থেকে তাঁকে একের পর এক মামলায় জড়িয়ে জীবন জেরবার করা হয়।