২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, সোমবার, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাম মন্দির উদ্বোধনে যাচ্ছেন না শঙ্করাচার্যরা,বললেন, ‘ধর্মশাস্ত্রের বিরুদ্ধে যাওয়া যাবেনা’

পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: ধুমধাম সহকারে উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় উদ্বোধন হতে চলেছে রাম মন্দির। তবে সেখানে যোগ দিচ্ছেন না উত্তরাখণ্ডের জ্যোতিষপীঠের শঙ্করাচার্য। শুধু তিনিই নন, দেশের ৪ শঙ্করাচার্যই যাচ্ছেন না রাম মন্দিরের উদ্বোধনে। তাঁদের মতে এই উদ্বোধন সনাতন ধর্মের নিয়মের লঙ্ঘন।

পুরী গোবরধনপোরের স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী, উচ্চরাখণ্ডের জ্যোতিষপীঠের স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী সহ ৪ শঙ্করাচার্য অযোধ্যার রামমন্দির উদ্বোধনে থাকছেন না। সদ্য মধ্যপ্রদেশের রতনলে এক অনুষ্ঠানে স্বামী নিশ্চলানন্দ জানিয়েছেন তিনি যাচ্ছেন না রাম মন্দিরের উদ্বোধনে। এদিকে, অভিমুক্তেশ্বরানন্দও একই কথা জানিয়েছেন হরিদ্বারে। তাঁকে এই বিষয়ে প্রশ্নও করা হয়।  অভিমুক্তেশ্বরানন্দ জানান,’কোনও শঙ্করাচার্যই ২২ জানুয়ারির অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন না। আমাদের কোনও অশুভ ভাবনা নেই। তবে শঙ্করাচার্যদের দায়িত্ব হল হিন্দুধর্ম সঠিকভাবে পালন করা, আর বাকিদের তা করতে বলা। ওঁরা (যাঁরা রামমন্দিরের নির্মাণের নেপথ্যে) হিন্দু ধর্মের প্রতিষ্ঠিত নিয়মকে লঙ্ঘন করছেন।’ শঙ্করাচার্যদের মতে,  মন্দির সম্পূর্ণ প্রতিষ্ঠা না করেই দেবতার প্রাণ প্রতিষ্ঠা উৎসব সঠিক নয়। এই ঘটনা হিন্দু শাস্ত্রের বিধি বিরুদ্ধ। শঙ্করাচার্য বলছেন,’এত তাড়াহুড়োর দরকার ছিল না’।

অভিমুক্তেশ্বরানন্দ বলেছেন,’ ১৯৪৯ সালের ২২ ডিসেম্বর মধ্যরাতে সেখানে (বাবরি মসজিদে) বিগ্রহ (ভগবান রামের) স্থাপিত হওয়ার সময় একটি জরুরি পরিস্থিতি ছিল, এগুলি তাৎক্ষণিকভাবে ঘটে যাওয়া পরিস্থিতি। ফলে কোনও শঙ্করাচার্য প্রশ্ন তোলেননি। কিন্তু এখন সেই আপৎকালীন পরিস্থিতি নেই। আমাদের কাছে অনেক সময় রয়েছে রাম মন্দিরের নির্মাণের ক্ষেত্রে। তারপর প্রাণ প্রতিষ্ঠা হোক।’  তিনি বলছেন, ‘আমরা চুপ থাকতে পারি না। বলাটা দরকার যে অসম্পূর্ণ মন্দির নির্মাণ ভালো ভাবনা নয়। তাঁরা আমাদের মোদি বিরোধী বলতে পারেন। তবে আমরা মোদি বিরোধী নই। একই সময়ে আমরা ধর্মশাস্ত্রের বিরুদ্ধে যেতে পারিনা।’

উল্লেখ্য, আগামী ২২ জানুয়ারি অযোধ্যার রাম মন্দিরে দেব বিগ্রহের প্রাণ প্রতিষ্ঠা উৎসব রয়েছে। একই সঙ্গে উদ্বোধন হবে রামমন্দিরের। এদিকে, কয়েক মাস গেলেই ২০২৪ লোকসভা ভোট। তার আগে বিজেপি সরকারের রাম মন্দির প্রতিষ্ঠা নিয়ে বিরোধীরা সওয়াল করছে। এদিকে, রাম মন্দিরের উদ্বোধনের দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আরতি অনুষ্ঠানে হবেন শামিল। তিনি আমন্ত্রিত রয়েছেন উদ্বোধনের মুখ্য অতিথি হিসাবে। এমন এক অনুষ্ঠানে দেশের ৪ শঙ্করাচার্যের উপস্থিত না হওয়ার ঘটনা বেশ তাৎপর্যবাহী বলে মনে করছেন অনেকেই।

 

ট্যাগ :
সর্বধিক পাঠিত

হাদি হত্যা নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের দাবি নাকচ করল বিএসএফ ও মেঘালয় পুলিশ

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

রাম মন্দির উদ্বোধনে যাচ্ছেন না শঙ্করাচার্যরা,বললেন, ‘ধর্মশাস্ত্রের বিরুদ্ধে যাওয়া যাবেনা’

আপডেট : ১২ জানুয়ারী ২০২৪, শুক্রবার

পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: ধুমধাম সহকারে উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় উদ্বোধন হতে চলেছে রাম মন্দির। তবে সেখানে যোগ দিচ্ছেন না উত্তরাখণ্ডের জ্যোতিষপীঠের শঙ্করাচার্য। শুধু তিনিই নন, দেশের ৪ শঙ্করাচার্যই যাচ্ছেন না রাম মন্দিরের উদ্বোধনে। তাঁদের মতে এই উদ্বোধন সনাতন ধর্মের নিয়মের লঙ্ঘন।

পুরী গোবরধনপোরের স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী, উচ্চরাখণ্ডের জ্যোতিষপীঠের স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী সহ ৪ শঙ্করাচার্য অযোধ্যার রামমন্দির উদ্বোধনে থাকছেন না। সদ্য মধ্যপ্রদেশের রতনলে এক অনুষ্ঠানে স্বামী নিশ্চলানন্দ জানিয়েছেন তিনি যাচ্ছেন না রাম মন্দিরের উদ্বোধনে। এদিকে, অভিমুক্তেশ্বরানন্দও একই কথা জানিয়েছেন হরিদ্বারে। তাঁকে এই বিষয়ে প্রশ্নও করা হয়।  অভিমুক্তেশ্বরানন্দ জানান,’কোনও শঙ্করাচার্যই ২২ জানুয়ারির অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন না। আমাদের কোনও অশুভ ভাবনা নেই। তবে শঙ্করাচার্যদের দায়িত্ব হল হিন্দুধর্ম সঠিকভাবে পালন করা, আর বাকিদের তা করতে বলা। ওঁরা (যাঁরা রামমন্দিরের নির্মাণের নেপথ্যে) হিন্দু ধর্মের প্রতিষ্ঠিত নিয়মকে লঙ্ঘন করছেন।’ শঙ্করাচার্যদের মতে,  মন্দির সম্পূর্ণ প্রতিষ্ঠা না করেই দেবতার প্রাণ প্রতিষ্ঠা উৎসব সঠিক নয়। এই ঘটনা হিন্দু শাস্ত্রের বিধি বিরুদ্ধ। শঙ্করাচার্য বলছেন,’এত তাড়াহুড়োর দরকার ছিল না’।

অভিমুক্তেশ্বরানন্দ বলেছেন,’ ১৯৪৯ সালের ২২ ডিসেম্বর মধ্যরাতে সেখানে (বাবরি মসজিদে) বিগ্রহ (ভগবান রামের) স্থাপিত হওয়ার সময় একটি জরুরি পরিস্থিতি ছিল, এগুলি তাৎক্ষণিকভাবে ঘটে যাওয়া পরিস্থিতি। ফলে কোনও শঙ্করাচার্য প্রশ্ন তোলেননি। কিন্তু এখন সেই আপৎকালীন পরিস্থিতি নেই। আমাদের কাছে অনেক সময় রয়েছে রাম মন্দিরের নির্মাণের ক্ষেত্রে। তারপর প্রাণ প্রতিষ্ঠা হোক।’  তিনি বলছেন, ‘আমরা চুপ থাকতে পারি না। বলাটা দরকার যে অসম্পূর্ণ মন্দির নির্মাণ ভালো ভাবনা নয়। তাঁরা আমাদের মোদি বিরোধী বলতে পারেন। তবে আমরা মোদি বিরোধী নই। একই সময়ে আমরা ধর্মশাস্ত্রের বিরুদ্ধে যেতে পারিনা।’

উল্লেখ্য, আগামী ২২ জানুয়ারি অযোধ্যার রাম মন্দিরে দেব বিগ্রহের প্রাণ প্রতিষ্ঠা উৎসব রয়েছে। একই সঙ্গে উদ্বোধন হবে রামমন্দিরের। এদিকে, কয়েক মাস গেলেই ২০২৪ লোকসভা ভোট। তার আগে বিজেপি সরকারের রাম মন্দির প্রতিষ্ঠা নিয়ে বিরোধীরা সওয়াল করছে। এদিকে, রাম মন্দিরের উদ্বোধনের দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আরতি অনুষ্ঠানে হবেন শামিল। তিনি আমন্ত্রিত রয়েছেন উদ্বোধনের মুখ্য অতিথি হিসাবে। এমন এক অনুষ্ঠানে দেশের ৪ শঙ্করাচার্যের উপস্থিত না হওয়ার ঘটনা বেশ তাৎপর্যবাহী বলে মনে করছেন অনেকেই।