০৮ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চে তীব্র ভর্ত্‍সনার মুখে এসএসসির আইনজীবী, সোমে ফের শুনানি

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ৮ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার
  • / 10

মোল্লা জসিমউদ্দিন: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী কলকাতা হাইকোর্টের বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চে চলছে এসএসসি সংক্রান্ত মামলার শুনানি। শুক্রবার আদালতের তীব্র ভর্ত্‍সনার মুখে পড়লেন এসএসসির আইনজীবী। এরপরই মামলা থেকে অব্যাহতি নিলেন এসএসসি আইনজীবী সুতনু পাত্র। ঘটনাচক্রে এদিন আদালতে হাজিরা হয়েছিলেন এসএসসির চেয়ারম্যান।নাইসার দেওয়া তথ্যের ব্যাপারে স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে তথ্য জানতে চেয়েছিলেন বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চ। দিনের পর দিন কেটে গেলেও তথ্য দিতে পারছে না এসএসসি।এই।ঘটনায় এজলাসে ক্ষুব্ধ বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, “প্রতিদিন সময় চাইছেন। কত দিন চলতে পারে এটা? গত মঙ্গলবার থেকে স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে কিছু তথ্য চাওয়া হচ্ছে নাইসার ব্যাপারে।কিন্তু তার উত্তর দিতে পারছেন না আপনি। আপনি তার মানে আদালতকে সহযোগিতা করতে পারছেন না।”এরপরই এসএসসির আইনজীবী সুতনু পাত্র এই মামলা থেকে অব্যাহতি চান। বিচারপতি বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ সঙ্গে সঙ্গে তা গ্রহণ করে। পরে বিচারপতির নির্দেশে আদালতে হাজির হন এসএসসির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার। এসএসসির চেয়ারম্যান আদালতকে জানান,-‘ ২০১৬ সালের নবম, দশম, একাদশ, দ্বাদশ গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি নিয়োগ পরীক্ষার বেশ কিছু তথ্য অমিল রয়েছে। তবে যা নথি আছে তার ভিত্তিতেই আদালতের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।’

 

আরও পড়ুন: হাওড়ায় রামনবমী পালনে আয়োজকদের ‘কড়া শর্তাবলি’ দিল কলকাতা হাইকোর্ট

এ ব্যাপারে সোমবার পরবর্তী শুনানি হবে। সেদিন এসএসসিকে নিয়োগ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি শব্বার রশিদির বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চ। এর পাশাপাশি বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, “এসএসসির কোনও আধিকারিক তাঁদেরই দেওয়া হলফনামা পড়ে না, আর তাই তথ্যও জানে না!”এদিকে এরপরই এসএসসির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারকে ডেকে পাঠানো হয় আদালতে। আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়েন তিনি। আগামী সোমবার ফের মামলার শুনানি। সেদিন যাবতীয় তথ্য নিয়ে আসতে বলা হয়েছে বিশেষ বেঞ্চের পক্ষ থেকে। এই মামলায় স্কুল সার্ভিস কমিশনের বোর্ডের সমস্ত সদস্যদের তলব করে বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চ।

আরও পড়ুন: শপথ নিলেন বিচারপতি Joymalya Bagchi

 

আরও পড়ুন: মুর্শিদাবাদের নবাবের সম্পত্তি সংরক্ষণ করতে উদ্যোগ নিক রাজ্য: কলকাতা হাইকোর্ট

এদিনই উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেয় বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ। এদিন দুপুর সাড়ে ১২টার মধ্যে হাজিরার নির্দেশ দেন বিচারপতি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এজলাসে উপস্থিত হন স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার সহ আরও দুই সদস্য।স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবীকে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, -‘আপনারা কী লুকোতে চাইছেন এবং কেন লুকাতে চাইছেন?’ এদিন ওএমআর স্ক্যান ও মূল্যায়ণকারী সংস্থা নাইসা সংক্রান্ত কিছু প্রশ্ন করেন বিচারপতি দেবাংশু বসাক। যা শুনে স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবী জানান, -‘এ জবাব আজ দেওয়া সম্ভব নয়। কমিশনের কাছ থেকে নির্দিষ্ট করে উত্তর নিয়ে তারপর জানাতে হবে’।

 

আদালত জানতে চায়, -‘কোনও প্রশ্ন করে উত্তর দেওয়ার সময় চাইলে মামলা এগোবে কী করে?’এরপরই কমিশনের আইনজীবী বলেন, ‘এই এজলাসে কীভাবে শুনানি হয় আপনি দেখছেন। ঠিক করে দাঁড়াবার মত জায়গা থাকে না। শেষ চার পাঁচ দিন বসার মতো চেয়ার পাওয়া যায়নি। বাকিরা কী বক্তব্য রাখছেন বা আদালত কী প্রশ্ন করছে ঠিক করে লিখব কী করে?‘এ কথা শুনে বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘কী করা যাবে বলুন। আমরা জানি এই এজলাস ছোট। এসএসসির মত বড় বড় অনেক বাড়ি আমাদের নেই যে একটা বাড়ি থেকে সুপারিশ পত্র দেওয়া হবে, একটি বাড়ি থেকে এসএমএস পাঠানো হবে।’

 

এরপরই স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারকে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, -‘সিবিআইয়ের হলফনামা পড়েছেন কি না?’ এসএসসির কমিশন চেয়ারম্যান জানান, -‘এমন সংস্থার নাম তিনি প্রথম শুনলেন’। বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘ফেব্রুয়ারি মাসে এই হলফনামা দাখিল হয়েছে। সেটা পড়ে দেখার সময় পাননি ? কত মানুষের জীবন জড়িত আছে এর সঙ্গে।’ কমিশন সোমবার অবধি সময় চায়। আগামী সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে ।

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চে তীব্র ভর্ত্‍সনার মুখে এসএসসির আইনজীবী, সোমে ফের শুনানি

আপডেট : ৮ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার

মোল্লা জসিমউদ্দিন: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী কলকাতা হাইকোর্টের বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চে চলছে এসএসসি সংক্রান্ত মামলার শুনানি। শুক্রবার আদালতের তীব্র ভর্ত্‍সনার মুখে পড়লেন এসএসসির আইনজীবী। এরপরই মামলা থেকে অব্যাহতি নিলেন এসএসসি আইনজীবী সুতনু পাত্র। ঘটনাচক্রে এদিন আদালতে হাজিরা হয়েছিলেন এসএসসির চেয়ারম্যান।নাইসার দেওয়া তথ্যের ব্যাপারে স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে তথ্য জানতে চেয়েছিলেন বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চ। দিনের পর দিন কেটে গেলেও তথ্য দিতে পারছে না এসএসসি।এই।ঘটনায় এজলাসে ক্ষুব্ধ বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, “প্রতিদিন সময় চাইছেন। কত দিন চলতে পারে এটা? গত মঙ্গলবার থেকে স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে কিছু তথ্য চাওয়া হচ্ছে নাইসার ব্যাপারে।কিন্তু তার উত্তর দিতে পারছেন না আপনি। আপনি তার মানে আদালতকে সহযোগিতা করতে পারছেন না।”এরপরই এসএসসির আইনজীবী সুতনু পাত্র এই মামলা থেকে অব্যাহতি চান। বিচারপতি বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ সঙ্গে সঙ্গে তা গ্রহণ করে। পরে বিচারপতির নির্দেশে আদালতে হাজির হন এসএসসির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার। এসএসসির চেয়ারম্যান আদালতকে জানান,-‘ ২০১৬ সালের নবম, দশম, একাদশ, দ্বাদশ গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি নিয়োগ পরীক্ষার বেশ কিছু তথ্য অমিল রয়েছে। তবে যা নথি আছে তার ভিত্তিতেই আদালতের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।’

 

আরও পড়ুন: হাওড়ায় রামনবমী পালনে আয়োজকদের ‘কড়া শর্তাবলি’ দিল কলকাতা হাইকোর্ট

এ ব্যাপারে সোমবার পরবর্তী শুনানি হবে। সেদিন এসএসসিকে নিয়োগ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি শব্বার রশিদির বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চ। এর পাশাপাশি বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, “এসএসসির কোনও আধিকারিক তাঁদেরই দেওয়া হলফনামা পড়ে না, আর তাই তথ্যও জানে না!”এদিকে এরপরই এসএসসির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারকে ডেকে পাঠানো হয় আদালতে। আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়েন তিনি। আগামী সোমবার ফের মামলার শুনানি। সেদিন যাবতীয় তথ্য নিয়ে আসতে বলা হয়েছে বিশেষ বেঞ্চের পক্ষ থেকে। এই মামলায় স্কুল সার্ভিস কমিশনের বোর্ডের সমস্ত সদস্যদের তলব করে বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চ।

আরও পড়ুন: শপথ নিলেন বিচারপতি Joymalya Bagchi

 

আরও পড়ুন: মুর্শিদাবাদের নবাবের সম্পত্তি সংরক্ষণ করতে উদ্যোগ নিক রাজ্য: কলকাতা হাইকোর্ট

এদিনই উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেয় বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ। এদিন দুপুর সাড়ে ১২টার মধ্যে হাজিরার নির্দেশ দেন বিচারপতি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এজলাসে উপস্থিত হন স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার সহ আরও দুই সদস্য।স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবীকে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, -‘আপনারা কী লুকোতে চাইছেন এবং কেন লুকাতে চাইছেন?’ এদিন ওএমআর স্ক্যান ও মূল্যায়ণকারী সংস্থা নাইসা সংক্রান্ত কিছু প্রশ্ন করেন বিচারপতি দেবাংশু বসাক। যা শুনে স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবী জানান, -‘এ জবাব আজ দেওয়া সম্ভব নয়। কমিশনের কাছ থেকে নির্দিষ্ট করে উত্তর নিয়ে তারপর জানাতে হবে’।

 

আদালত জানতে চায়, -‘কোনও প্রশ্ন করে উত্তর দেওয়ার সময় চাইলে মামলা এগোবে কী করে?’এরপরই কমিশনের আইনজীবী বলেন, ‘এই এজলাসে কীভাবে শুনানি হয় আপনি দেখছেন। ঠিক করে দাঁড়াবার মত জায়গা থাকে না। শেষ চার পাঁচ দিন বসার মতো চেয়ার পাওয়া যায়নি। বাকিরা কী বক্তব্য রাখছেন বা আদালত কী প্রশ্ন করছে ঠিক করে লিখব কী করে?‘এ কথা শুনে বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘কী করা যাবে বলুন। আমরা জানি এই এজলাস ছোট। এসএসসির মত বড় বড় অনেক বাড়ি আমাদের নেই যে একটা বাড়ি থেকে সুপারিশ পত্র দেওয়া হবে, একটি বাড়ি থেকে এসএমএস পাঠানো হবে।’

 

এরপরই স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারকে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, -‘সিবিআইয়ের হলফনামা পড়েছেন কি না?’ এসএসসির কমিশন চেয়ারম্যান জানান, -‘এমন সংস্থার নাম তিনি প্রথম শুনলেন’। বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘ফেব্রুয়ারি মাসে এই হলফনামা দাখিল হয়েছে। সেটা পড়ে দেখার সময় পাননি ? কত মানুষের জীবন জড়িত আছে এর সঙ্গে।’ কমিশন সোমবার অবধি সময় চায়। আগামী সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে ।