২২ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
'অপারেশন সিন্দুর' নিয়ে পোস্ট করে গ্রেফতার ছাত্রী

পুলিশী পদক্ষেপকে ‘চরমপন্থী’ বলে ভর্ৎসনা আদালতের

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ৩০ মে ২০২৫, শুক্রবার
  • / 126

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ‘অপারেশন সিন্দুর’ নিয়ে সমালোচনামূলক পোস্ট করায় গ্রেফতার হয়েছিল ১৯ বছর বয়সী এক ছাত্রী। সেই মামলার শুনানিতে মহারাষ্ট্র সরকার ও পুলিশের তীব্র সমালোচনা করল বোম্বে হাইকোর্ট। এদিন পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকায় বিরক্ত হয়ে আদালত বলেছে, ছাত্রীটির জীবন ধ্বংস করতে আপনারা উঠেপড়ে লেগেছেন। পুলিশের ভূমিকায় আমরা ‘হতবাক’ বলেও ভর্ৎসনা করেছে বিচারপতি গৌরী গডসে এবং বিচারপতি সোমশেখর সুন্দরেশনের ডিভিশন বেঞ্চ।

জানা গিয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দা ছিলেন ওই ছাত্রী। সে সিংহগড় অ্যাকাডেমি অফ ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পাঠরত ছিল। গত ৯ মে ‘অপারেশন সিন্দুর’ নিয়ে সমালোচনামূলক পোস্ট করার অভিযোগে গ্রেফতার করে মহারাষ্ট্রের কোন্ধওয়া পুলিশ। যদিও পড়ে সেই পোস্ট দ্রুত মুছে ফেলা এবং ক্ষমা প্রার্থনা করেছিল ছাত্রী।

আরও পড়ুন: মুম্বাই ট্রেন বিস্ফোরণ: ১২ জন দোষী সাব্যস্তকে বেকসুর খালাস দিল বম্বে হাইকোর্ট

তারপরও এফআইআর দায়ের করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এই ঘটনার পর থেকে চিন্তায় পড়েছিল ছাত্রীর পরিবার। কারণ সামনেই তার কলেজ সেমিস্টারের পরীক্ষা ছিল। সেমত তার জামিনের আবেদন জানিয়ে বোম্বে হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিল মামলাকারীর আইনজীবী।

আরও পড়ুন: কামরার জন্য করা জনস্বার্থ মামলা খারিজ বম্বে হাইকোর্টের

মঙ্গলবার বিচারপতি গৌরী গডসে এবং বিচারপতি সোমশেখর সুন্দরেশনের ডিভিশন বেঞ্চ মামলার শুনানি হয়। মহারাষ্ট্র সরকার ও পুলিশের তীব্র সমালোচনা করে তাদের পদক্ষেপকে ‘চরমপন্থী’ বলে মন্তব্য করেন বিচারপতিরা।

আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, জনসন অ্যান্ড জনসনকে বেবি পাউডার উৎপাদন ও বিক্রির অনুমতি দিল বম্বে হাই কোর্ট

বিচারপতি গৌরী গডসে এবং বিচারপতি সোমশেখর সুন্দরেশন পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, প্রশাসন ছাত্রীর জীবন ধ্বংস করতে বদ্ধপরিকর বলে মনে হচ্ছে। শুধুমাত্র সামাজিক মাধ্যমে একটি ভুল পোস্ট ও পদক্ষেপের কারণে একজন শিক্ষার্থীকে ‘হার্ডকোর অপরাধী’ বানানো অনুচিত। পরবর্তী সময়ে একই ভুল যাতে না হয়, সে বিষয়ে মহারাষ্ট্র সরকারকে সতর্ক করে দিয়েছে আদালত।

একইসঙ্গে ছাত্রীর পরীক্ষার কথা মাথায় রেখে তার জামিন মঞ্জুর করে আদালত। এছাড়াও সমালোচনামূলক পোস্টের অভিযোগে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্রীকে রাসটিকেট করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। যদিও এদিন আদালত তার কলেজের জারি করা রাস্টিকেশন অর্ডারও স্থগিত করে দিয়েছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার মামলাকারীর আইনজীবী ফারহানা শাহ আদালতকে জানিয়েছেন, “মঙ্গলবার গভীর রাতে তাঁকে ইয়েরওয়াড়া কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বুধবার কলেজ তাকে অ্যাডমিট কার্ড দিয়েছিল এবং সে বৃহস্পতিবার নির্ধারিত পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।” আইনজীবী আদালতকে আরও বলেন, ছাত্রীটি জেল হেফাজতে থাকাকালীন দুটি থিওরি এবং দুটি প্যাকটিক্যাল পরীক্ষা দিতে পারেনি। এরপরই বাকি পরীক্ষাগুলি যাতে ছাত্রী দিতে পারে তার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

'অপারেশন সিন্দুর' নিয়ে পোস্ট করে গ্রেফতার ছাত্রী

পুলিশী পদক্ষেপকে ‘চরমপন্থী’ বলে ভর্ৎসনা আদালতের

আপডেট : ৩০ মে ২০২৫, শুক্রবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ‘অপারেশন সিন্দুর’ নিয়ে সমালোচনামূলক পোস্ট করায় গ্রেফতার হয়েছিল ১৯ বছর বয়সী এক ছাত্রী। সেই মামলার শুনানিতে মহারাষ্ট্র সরকার ও পুলিশের তীব্র সমালোচনা করল বোম্বে হাইকোর্ট। এদিন পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকায় বিরক্ত হয়ে আদালত বলেছে, ছাত্রীটির জীবন ধ্বংস করতে আপনারা উঠেপড়ে লেগেছেন। পুলিশের ভূমিকায় আমরা ‘হতবাক’ বলেও ভর্ৎসনা করেছে বিচারপতি গৌরী গডসে এবং বিচারপতি সোমশেখর সুন্দরেশনের ডিভিশন বেঞ্চ।

জানা গিয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দা ছিলেন ওই ছাত্রী। সে সিংহগড় অ্যাকাডেমি অফ ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পাঠরত ছিল। গত ৯ মে ‘অপারেশন সিন্দুর’ নিয়ে সমালোচনামূলক পোস্ট করার অভিযোগে গ্রেফতার করে মহারাষ্ট্রের কোন্ধওয়া পুলিশ। যদিও পড়ে সেই পোস্ট দ্রুত মুছে ফেলা এবং ক্ষমা প্রার্থনা করেছিল ছাত্রী।

আরও পড়ুন: মুম্বাই ট্রেন বিস্ফোরণ: ১২ জন দোষী সাব্যস্তকে বেকসুর খালাস দিল বম্বে হাইকোর্ট

তারপরও এফআইআর দায়ের করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এই ঘটনার পর থেকে চিন্তায় পড়েছিল ছাত্রীর পরিবার। কারণ সামনেই তার কলেজ সেমিস্টারের পরীক্ষা ছিল। সেমত তার জামিনের আবেদন জানিয়ে বোম্বে হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিল মামলাকারীর আইনজীবী।

আরও পড়ুন: কামরার জন্য করা জনস্বার্থ মামলা খারিজ বম্বে হাইকোর্টের

মঙ্গলবার বিচারপতি গৌরী গডসে এবং বিচারপতি সোমশেখর সুন্দরেশনের ডিভিশন বেঞ্চ মামলার শুনানি হয়। মহারাষ্ট্র সরকার ও পুলিশের তীব্র সমালোচনা করে তাদের পদক্ষেপকে ‘চরমপন্থী’ বলে মন্তব্য করেন বিচারপতিরা।

আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, জনসন অ্যান্ড জনসনকে বেবি পাউডার উৎপাদন ও বিক্রির অনুমতি দিল বম্বে হাই কোর্ট

বিচারপতি গৌরী গডসে এবং বিচারপতি সোমশেখর সুন্দরেশন পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, প্রশাসন ছাত্রীর জীবন ধ্বংস করতে বদ্ধপরিকর বলে মনে হচ্ছে। শুধুমাত্র সামাজিক মাধ্যমে একটি ভুল পোস্ট ও পদক্ষেপের কারণে একজন শিক্ষার্থীকে ‘হার্ডকোর অপরাধী’ বানানো অনুচিত। পরবর্তী সময়ে একই ভুল যাতে না হয়, সে বিষয়ে মহারাষ্ট্র সরকারকে সতর্ক করে দিয়েছে আদালত।

একইসঙ্গে ছাত্রীর পরীক্ষার কথা মাথায় রেখে তার জামিন মঞ্জুর করে আদালত। এছাড়াও সমালোচনামূলক পোস্টের অভিযোগে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্রীকে রাসটিকেট করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। যদিও এদিন আদালত তার কলেজের জারি করা রাস্টিকেশন অর্ডারও স্থগিত করে দিয়েছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার মামলাকারীর আইনজীবী ফারহানা শাহ আদালতকে জানিয়েছেন, “মঙ্গলবার গভীর রাতে তাঁকে ইয়েরওয়াড়া কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বুধবার কলেজ তাকে অ্যাডমিট কার্ড দিয়েছিল এবং সে বৃহস্পতিবার নির্ধারিত পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।” আইনজীবী আদালতকে আরও বলেন, ছাত্রীটি জেল হেফাজতে থাকাকালীন দুটি থিওরি এবং দুটি প্যাকটিক্যাল পরীক্ষা দিতে পারেনি। এরপরই বাকি পরীক্ষাগুলি যাতে ছাত্রী দিতে পারে তার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।