২৭ জুলাই ২০২৫, রবিবার, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হিজাবের সমর্থনে দলিত এবং অন্যান্য অনগ্রসর সম্প্রদায়ের ছাত্ররা

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২, মঙ্গলবার
  • / 50

পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ হিজাবের সমর্থনে এগিয়ে এল দলিত এবং অন্যান্য অনগ্রসর সম্প্রদায়ের ছাত্ররা। তামিলনাড়ুর চিকমাগালুরের আইডিএসসি কলেজে দলিত এবং অন্যান্য অনগ্রসর সম্প্রদায়ের ছাত্ররা  মুসলিম মেয়েদের হিজাব পরা সমর্থন করার জন্য একটি নীল শাল পরে প্রতিবাদ করেছে। ছাত্ররা হিজাব পরা মেয়েদের ক্লাসে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার দাবি জানায়।

ছাত্ররা জয় ভীম স্লোগান নিয়ে আইডিএসসি কলেজে প্রবেশ করে এবং বিষয়টিকে সাম্প্রদায়িক করার জন্য ডানপন্থী সংগঠনের প্রচেষ্টার নিন্দা জানায়। দলিত ও অনগ্রসর সম্প্রদায়ের ছাত্ররা হিজাবের পক্ষে দাঁড়ানো ডানপন্থী শক্তিকে ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছে বলে পর্যবেক্ষকমহল মনে করছে। ওই ছাত্ররা সোমবার চিকমাগালুরের আইডিএসসি কলেজে হিজাবের সমর্থনে মিছিল বের করে।পাল্টা মিছিল করে গেরুয়া শিবির।

আরও পড়ুন: কর্নাটকের নার্সিং কলেজে কাশ্মীরি ছাত্রীদের হিজাব নিষেধাজ্ঞা! মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি ছাত্র সংগঠনের

একদিকে ‘জয় ভীম’শ্লোগান অন্যদিকে চলে ‘জয় শ্রীরাম’ধ্বনি। কলেজ চত্বরে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।

আরও পড়ুন: অপারেশন সিঁদুরের সাফল্য নিয়ে পাঠ দিতে হবে পড়ুয়াদের, নির্দেশ কেন্দ্রের

দলিত ছাত্রদের বক্তব্য, “কর্ণাটকে হিজাব পরায় স্কুল-কলেজে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে ছাত্রীদের। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষই এই বাধা দেওয়ার কাজ করেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অত্যন্ত অবাঞ্ছিত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যে কলেজে প্রথম হিজাব পরা মুসলিম ছাত্রীদের গেটে আটকে দেওয়া হয়, সেখানে এমন কোনও বিধি পূর্ব হতে ছিল না। যে স্কুলে বাধা দেওয়া হয়েছে, সেখানের পোশাক বিধিতে স্পষ্টই দেখা যাচ্ছে হিজাব পরায় কোনও বিধিনিষেধ নেই। একপ্রকার জোর করেই এই আকস্মিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: Iran: নারীদের পোশাকবিধি নিশ্চিত করতে নয়া প্রযুক্তি

দেখা গেল, একটি স্কুলে হিজাব পরিহিত ছাত্রীদের বাধা দেবার পরে গলায় গেরুয়া ওড়না জড়িয়ে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিতে দিতে আসছে আরেক দল ছাত্রী। স্কুলের বাইরে একদল ছাত্র একই রকমভাবে ‘হিজাব বিরোধী’ স্লোগান দিচ্ছে। ঘটনাক্রম থেকে বোঝাই যাচ্ছে, এই বিতর্ক সচেতনভাবেই তৈরি করা হচ্ছে। পিছনে আরএসএস ও হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি রয়েছে। তার আরও প্রমাণ হল এরই মধ্যে কর্ণাটক সরকার একটি নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে যেখানে বলা হয়েছে সমমান, অখণ্ডতা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার পক্ষে ক্ষতিকর এমন পোশাক পরা যাবে না। অর্থাৎ স্কুলের ইউনিফর্ম নয়, সরকারের ফতোয়া অনুযায়ীই চলতে হবে। যদিও সরকারি নির্দেশে স্পষ্ট নয় কোন পোশাকে দেশের ‘অখণ্ডতা’ নষ্ট হয়। হিজাব পরা ভালো কি মন্দ, বিতর্ক তা নিয়ে নয়। প্রশ্ন হল হিজাব পরে স্কুল-কলেজে যাবার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে এদেশে। সেই অধিকারে হস্তক্ষেপ করার অধিকার কে দিল? যে-সব দৃশ্য সামাজিক মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে তা শিউরে ওঠার মতো। একদল ছাত্রীকে পড়াশোনা করার অধিকার থেকেই বঞ্চিত করা হচ্ছে।”

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

হিজাবের সমর্থনে দলিত এবং অন্যান্য অনগ্রসর সম্প্রদায়ের ছাত্ররা

আপডেট : ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২, মঙ্গলবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ হিজাবের সমর্থনে এগিয়ে এল দলিত এবং অন্যান্য অনগ্রসর সম্প্রদায়ের ছাত্ররা। তামিলনাড়ুর চিকমাগালুরের আইডিএসসি কলেজে দলিত এবং অন্যান্য অনগ্রসর সম্প্রদায়ের ছাত্ররা  মুসলিম মেয়েদের হিজাব পরা সমর্থন করার জন্য একটি নীল শাল পরে প্রতিবাদ করেছে। ছাত্ররা হিজাব পরা মেয়েদের ক্লাসে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার দাবি জানায়।

ছাত্ররা জয় ভীম স্লোগান নিয়ে আইডিএসসি কলেজে প্রবেশ করে এবং বিষয়টিকে সাম্প্রদায়িক করার জন্য ডানপন্থী সংগঠনের প্রচেষ্টার নিন্দা জানায়। দলিত ও অনগ্রসর সম্প্রদায়ের ছাত্ররা হিজাবের পক্ষে দাঁড়ানো ডানপন্থী শক্তিকে ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছে বলে পর্যবেক্ষকমহল মনে করছে। ওই ছাত্ররা সোমবার চিকমাগালুরের আইডিএসসি কলেজে হিজাবের সমর্থনে মিছিল বের করে।পাল্টা মিছিল করে গেরুয়া শিবির।

আরও পড়ুন: কর্নাটকের নার্সিং কলেজে কাশ্মীরি ছাত্রীদের হিজাব নিষেধাজ্ঞা! মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি ছাত্র সংগঠনের

একদিকে ‘জয় ভীম’শ্লোগান অন্যদিকে চলে ‘জয় শ্রীরাম’ধ্বনি। কলেজ চত্বরে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।

আরও পড়ুন: অপারেশন সিঁদুরের সাফল্য নিয়ে পাঠ দিতে হবে পড়ুয়াদের, নির্দেশ কেন্দ্রের

দলিত ছাত্রদের বক্তব্য, “কর্ণাটকে হিজাব পরায় স্কুল-কলেজে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে ছাত্রীদের। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষই এই বাধা দেওয়ার কাজ করেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অত্যন্ত অবাঞ্ছিত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যে কলেজে প্রথম হিজাব পরা মুসলিম ছাত্রীদের গেটে আটকে দেওয়া হয়, সেখানে এমন কোনও বিধি পূর্ব হতে ছিল না। যে স্কুলে বাধা দেওয়া হয়েছে, সেখানের পোশাক বিধিতে স্পষ্টই দেখা যাচ্ছে হিজাব পরায় কোনও বিধিনিষেধ নেই। একপ্রকার জোর করেই এই আকস্মিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: Iran: নারীদের পোশাকবিধি নিশ্চিত করতে নয়া প্রযুক্তি

দেখা গেল, একটি স্কুলে হিজাব পরিহিত ছাত্রীদের বাধা দেবার পরে গলায় গেরুয়া ওড়না জড়িয়ে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিতে দিতে আসছে আরেক দল ছাত্রী। স্কুলের বাইরে একদল ছাত্র একই রকমভাবে ‘হিজাব বিরোধী’ স্লোগান দিচ্ছে। ঘটনাক্রম থেকে বোঝাই যাচ্ছে, এই বিতর্ক সচেতনভাবেই তৈরি করা হচ্ছে। পিছনে আরএসএস ও হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি রয়েছে। তার আরও প্রমাণ হল এরই মধ্যে কর্ণাটক সরকার একটি নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে যেখানে বলা হয়েছে সমমান, অখণ্ডতা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার পক্ষে ক্ষতিকর এমন পোশাক পরা যাবে না। অর্থাৎ স্কুলের ইউনিফর্ম নয়, সরকারের ফতোয়া অনুযায়ীই চলতে হবে। যদিও সরকারি নির্দেশে স্পষ্ট নয় কোন পোশাকে দেশের ‘অখণ্ডতা’ নষ্ট হয়। হিজাব পরা ভালো কি মন্দ, বিতর্ক তা নিয়ে নয়। প্রশ্ন হল হিজাব পরে স্কুল-কলেজে যাবার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে এদেশে। সেই অধিকারে হস্তক্ষেপ করার অধিকার কে দিল? যে-সব দৃশ্য সামাজিক মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে তা শিউরে ওঠার মতো। একদল ছাত্রীকে পড়াশোনা করার অধিকার থেকেই বঞ্চিত করা হচ্ছে।”