০৯ জুন ২০২৫, সোমবার, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

উজালা গ্যাসে কাটমানি, সংঘের নেত্রীকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ

পুবের কলম প্রতিবেদক, বাঁকুড়া: বাঁকুড়ার খাতড়া মহিলা স্বনির্ভর দলের সংঘের মহিলানেত্রী প্রতিমা মন্ডলের নেতৃত্বে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা বাড়ি বাড়ি উজালা গ্যাস বিলি করছিলন। প্রতিমা মণ্ডল সকল উপভোক্তাতাদের কাছ থেকে সিলিন্ডার প্রতি ৪০০ টাকা আদায় করছিলেন বেআইনি ভাবে। এই অভিযোগ তুলে উপভোক্তারা বৃহস্পতিবার সংঘের অফিস দীর্ঘক্ষণ ঘেরাও করে রাখেন। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশী হস্তক্ষেপে প্রতিমা সহ অন্যান্যরা ছাড়া পান।  গত কয়েক বছর হল সঙ্গের নেত্রীদের বিরুদ্ধে স্বনির্ভর দলের মহিলারা ধান কেনা সহ বেশ কিছু বিষয়ে দুর্নীতির অভিযোগ করে আসছেন। বৃহস্পতিবার তা হাতেনাতে প্রমাণিত হয়। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বিনামূল্যের উজালা গ্যাস কেন ৪০০ টাকা করে উপভোক্তাদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছিল? এ প্রশ্ন করলে নীরব থাকেন অভিযুক্ত নেত্রী প্রতিমা মন্ডল। 

গরু খুটান উৎসবে নাচলেন মন্ত্রী, আর বিধায়ক কি করলেন

কার্তিক ঘোষ, বাঁকুড়া: বাঁধনা পরব উপলক্ষ্যে বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের খাতড়ার কুরকুটিয়া গ্রামে গরু খুটানোর আসর আক্ষরিক অর্থেই উৎসব মুখর হয়ে ওঠে। এখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের খাদ্য দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি এবং পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের বিধায়ক রাজীব সরেন। আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত এই দুই জনকে পেয়ে সমাজের উৎসব অন্য মাত্রায় পৌঁছে যায়। 

কেন্দ্রীয় সরকারের পেনশন নীতি, প্রতিবাদে লাগাতার শ্রমিক আন্দোলন

কার্তিক ঘোষ, বাঁকুড়া: কেন্দ্রীয় সরকার ধারাবাহিকভাবে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি লঙ্ঘন করে চলেছে। একের পর এক অডিয়েন্স জারি করে শ্রমিকদের ভাতে মারার চেষ্টা করছে। যার প্রতিবাদে ডিভিসির এমটিপিএস প্রকল্পের কর্মরত শ্রমিকরা গত ১ নভেম্বর থেকে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। শ্রমিকদের দাবি পুরানো পেনশন নীতি ফিরিয়ে আনা হোক।  এই প্রকল্পের জমিহারা, বাস্তুহারা ৫২০ টি পরিবার থেথে গ্রুপ সি/ডি ও আপগ্রেডেশন গ্রুপ বি কর্মীরা গলায় প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে চিফ ইঞ্জিনিয়ারের অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। আন্দোলনরত কর্মীরা প্রত্যেকদিন অফিসে হাজিরা দেন এবং যারা শিফটিং ডিউটি করেন তারা বেলা ১১ টা থেকে একসাথে মিলিত হয়ে ১ ঘন্টা চিফ ইঞ্জিনিয়ারের অফিস বিদ্যুৎ ভবনে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন। তাদের দাবি অবিলম্বে সকল ভূমিহারা পরিবার থেকে ডিভিসিতে স্থায়ী চাকরি পাওয়া কর্মীদের পুরানো পেনশন স্কিমের আওতায় আনতে হবে। প্রয়োজনে তারা পেন ডাউন করে কর্মবিরতিতে যেতে বাধ্য হবেন।   আন্দোলনকারীদের আহ্বায়ক দেবাশীষ মুখার্জী জানালেন গত শতাব্দীর আটের দশকের শেষে ডিভিসি এমটিপিএসের নির্মাণ কাজ শুরু করে। কারখানা করতে এখানকার বেশ কয়েকটি গ্রামের চাষ জমি ও বাস্তু বাড়ি অধিগ্রহণ করার ব্যবস্থা করে দেয় রাজ্য সরকার। জমি ও বাস্তুহারাদের দাবি মত ১৯৯৪ সালে ক্ষতিগ্রস্তদের নিয়ে ডিভিসি ও রাজ্য  সরকারের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক চুক্তির পর ৫২০ জন ভূমিহারাকে ডিভিসিতে স্থায়ী চাকরি দেওয়া হবে। লিখিত চুক্তিতে বলা হয় প্রকল্পের ৩ নম্বর ইউনিট চালু হওয়ার সাথে সাথে এই সমস্ত ভূমিহারাদের নিয়োগ করা হবে।  ১৯৯৮ সালে ডিভিসির ৩ টি ইউনিট থেকেই বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করলেও ভূমিহারা পরিবার থেকে সকলকে নিয়োগ করা হয়নি। ২০০৪ সালের আগে পর্যন্ত ২৮০ জনকে নিয়োগ করা হলেও বাকিদের নিয়োগ হয় ২০০৮ সালে। ইতিমধ্যে ভারত সরকার একটি সার্কুলার প্রকাশ করে জানান ১ জানুয়ারি, ২০০৪ সালের পরে যারা কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থায় নিয়োগ হয়েছেন তারা পেনশন প্রকল্প থেকে বাদ যাবেন। দেবাশিসবাবু আরো বলেন, পরে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ফের কেন্দ্রীয় সরকারের আরেকটি সার্কুলারে বলা হয় ১ জানুয়ারি ২০০৪ এর আগে যাদের ইন্টারভিউ হয়ে প্যানেল ভুক্ত হয়ে আছেন তারা পেনশন আওতার সুযোগ পাবেন। আন্দোলনকারী কর্মী প্রশান্ত মন্ডলের দাবি, তারা সকলেই চুক্তিমত ১৯৯৪ সাল থেকেই প্যানেল ভুক্ত। ডিভিসি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্যানেলের অর্ধেক চাকরি প্রার্থীকে নিয়োগ করে বাকিদের বঞ্চিত করেছে।  ডিভিসিতে জমি দিয়ে এক শরিককে ১৯৯৬ সালে চাকরি দেওয়া হয় অন্য শরিককে দেওয়া হল ২০০৮ সালে। প্রথম জন পেনশন পাবেন অথচ দ্বিতীয় জন কেন পাবেন না এই নিয়েই আমাদের আন্দোলন। এদের সকলেরই ২০০৪ সালের আগে ডিভিসি নিয়মানুযায়ী ইন্টারভিউ নিয়ে তালিকা ভুক্ত করেছে। নিয়োগ না করে ওদের চাকরির মেয়াদ যেমন কমেছে তেমনি পেনশন থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে। এটা অনৈতিক ও নিয়ম বিরুদ্ধ। 

হস্ত শিল্পীদের শিল্পকর্ম নিয়ে প্রদর্শনী ও প্রতিযোগিতা

পুবের কলম প্রতিবেদক, বাঁকুড়া: বাঁকুড়া জেলা শিল্প কেন্দ্রের উদ্যোগে ঘোষণা অনুযায়ী জেলার হস্তশিল্পীদের শিল্পকর্ম নিয়ে প্রতিযোগিতার আসর বসেছিল  এডওয়ার্ড হলে। এই প্রদর্শনী ও প্রতিযোগিতায় হস্তশিল্পীদের শিল্পকর্মের মধ্যে  টেরাকোটা, ডোকরা, বালুচরী, বাঁশ, কাঠ ও পাথরের শিল্প সকলের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। জেলাস্তরে এই প্রতিযোগিতা থেকে এবার ৪ টি বিভাগে প্রথম, দ্বিতীয় ও বিশেষ পুরস্কার মিলিয়ে ১২ টি শিল্পকর্ম যাবে রাজ্যস্তরের প্রতিযোগিতায়।  মঙ্গলবার বিজয়ীদের শিল্পকর্ম ও শিল্পীর নাম ঘোষণা করা হয়। জেলা শিল্প কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার প্রসূন নায়ক বলেন, এবার টেরাকোটা শিল্পের পোড়ামাটির ‘লক্ষ্মীর ঝাঁপি’ তৈরি করে প্রথম পুরস্কার ছিনিয়ে নিয়েছেন স্যান্দড়া গ্রামের রঞ্জিত কুম্ভকার। প্যাঁচার আদলে নির্মিত ‘লক্ষ্মীর ঝাঁপি’ সঞ্চয়ের প্রতীক হিসেবে সমাজের কাছে বার্তা বহন করছে বলেও বিচারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তেমনি এক ডোকরা শিল্পী ‘যুদ্ধরত অর্জুনের রথ’ তৈরি করে  বিশ্ব শান্তির শ্লোগান-‘যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই’-কে সামনে রেখে কৃষ্ণের কাছে ক্ষমা প্রার্থনাকারী অর্জুনের যুদ্ধ করবেন না বলে কাতরতার ছবি ফুটিয়ে তুলেছেন। টেরাকোটার কাজে পাঁচমুড়ার ভূতনাথ কুম্ভকার পোড়ামাটির কোদাল তৈরি করে বিশেষ পুরস্কার পেয়েছেন। তাঁর দাবি তিনি এই কোদালের মধ্যে যে শিল্পকর্ম ফুটিয়ে তুলেছেন সেগুলি হল ‘চল কোদাল চালাই, ভুলে মানের বালাই’। 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder