২৭ জুলাই ২০২৫, রবিবার, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পুর্ব মেদিনীপুরের স্কুলের জন্য বরাদ্দ ৬ কোটি ৯১ হাজার

পুবের কলম প্রতিবেদক, পুর্ব মেদিনীপুর: বিগত আমফান, ইয়াস ও অতি বর্ষণ সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ রাজ্যের স্কুল গুলির পাশাপাশি মাদ্রাসাগুলিও সরকারি অর্থবরাদ্দ পাবে।ইতিমধ্যে রাজ্যের ৬,৬৪৮ টি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মেরামতির জন্য ১০৯ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে।  পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ৪২৭ টি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের মেরামতির জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ প্রায় ৬ কোটি ৯১ হাজার টাকা। রাজ্যের ৬১৪ টি মাদ্রাসার জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ১০ কোটি টাকা। জেলার ১৮ টি হাই মাদ্রাসা ও সিনিয়র মাদ্রাসার জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৩২ লক্ষ টাকা। তবে এই বরাদ্দকৃত অর্থ করোনা লকডাউন জনিত কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় পরিকাঠামো সংষ্কারের কাজে ব্যবহৃত হবে।

সমবায় সমিতির নির্বাচনে প্রার্থী দিতে পারল না শুভেন্দু

পুবের কলম প্রতিবেদক, রামনগর: রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের পর পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় প্রথম সমবায় সমিতির নির্বাচনে প্রার্থী দিতে পারল না বিজেপি তথা  বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । ৫১টি আসনের সব কটি আসনেই বিনা নির্বাচনে জয়ী হল তৃণমূল প্রার্থীরা। বিজেপি একে তৃণমূলের সন্ত্রাসের জন্য বলে দাবি করছে। রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল অবশ্য দাবি করেছে মানুষ বিজেপির সাথে নেই, সেটা আরও একবার পরিষ্কার হয়ে গেছে। তাই সমবায় সমিতির নির্বাচনেও ওদের হয়ে কেউ প্রার্থী হতে চায় না। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রামনগর ২ ব্লকের দেপাল গ্রাম পঞ্চায়েতের দেপাল সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির সোমবার ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। এই সমবায় সমিতির মোট ৫১ টি আসন। আগামী ১২ নভেম্বর এই আসনগুলিতে নির্বাচন হওয়ার দিন স্থির ছিল। কিন্তু ৫১ টি আসনের একটিতেও সিপিএম, বিজেপি, কংগ্রেস কিংবা অন্য কোনো বিরোধী দল প্রার্থী দিতে না পারায় আর নির্বাচন হবে না। ফলে সব কটি আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হল তৃণমূল প্রার্থীরা বিজেপির তরফে দাবি করা হয়েছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা নানাভাবে ধমক চমক দেওয়ায় প্রার্থী হতে চায়নি কেউ। সেই অভিযোগ উড়িয়েছে তৃণমূল। 

কথা রাখলেন মমতা, তাজপুরের মুকুটে নতুন পালক

পুবের কলম প্রতিবেদক, পুর্ব মেদিনীপুর: তাজপুরে গ্রীনফিল্ড বন্দর তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করল রাজ্য সরকার। এক হাজার একর জমির ওপর গড়ে উঠবে তাজপুর বন্দর। তবে এর জন্য রাজ্য সরকারকে কোনরকম জমি অধিগ্রহণ করতে হবে না। সেই জমি রাজ্যের হাতেই রয়েছে। জমির চিহ্নিতকরণের কাজ ইতিমধ্যেই করে ফেলেছে রাজ্য। তাজপুর বন্দর তৈরীর জন্য সোমবার গ্লোবাল টেন্ডার ডেকেছে রাজ্য সরকার। এরফলে তাজপুরে গভীর সমুদ্রবন্দর নিয়ে আরো এক ধাপ এগোল রাজ্য সরকার। বন্দর নির্মাণের জন্য দরপত্র চেয়ে পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিগম বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে আবেদনপত্র জমা দেওয়া যাবে। ১৬ হাজার কোটি টাকার গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পে প্রথম পর্যায়ের জন্য ১০ হাজার কোটি টাকা এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের জন্য ৬ হাজার কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে। এতে প্রত্যক্ষভাবে ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। প্রথম পর্যায়ে ৬টি বার্থ ও পরের পর্যায়ে আরো ৯ টি বার্থ তৈরি হবে এই বন্দরে। ৯৯ বছরের লিজ দেওয়া হবে। এই বন্দর এর সঙ্গে নিকটতম জাতীয় সড়ক এবং রেলপথের যোগাযোগের ব্যবস্থা করবে রাজ্য সরকার। ৩৫০ মিটার প্রস্থ এবং প্রায় ১৬ মিটার নাব্যতা থাকায় তাজপুর একটি গভীর সমুদ্র বন্দর হিসেবে কাজ করতে পারবে।  ২০১৯ সালে এই বন্দর তৈরীর কথা প্রথম বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি তাজপুর বন্দর এর সাইটের উদ্বোধন করেছিলেন। তখন ঠিক হয়েছিল কেন্দ্র এবং রাজ্য যৌথ উদ্যোগে এই বন্দর তৈরি করবে। এমনকি রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নিজেদের অধিকাংশ শেয়ারও কেন্দ্রকে দিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের টালবাহানায় শেষ পর্যন্ত ২০২০ সালের শেষ দিকে রাজ্য নিজেই এই বন্দর তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গভীর সমুদ্রবন্দরের জন্য তাজপুর ছাড়াও আরও দুটি  প্রস্তাবিত জায়গার নাম নবান্নে পাঠানো হয়েছিল। তার মধ্যে একটি দাদনপাত্রবাড় এবং অপরটি কাঁথির শৌলা সংলগ্ন এলাকা। যদিও নবান্ন, তাজপুরের সাইটটিকে প্রস্তাবিত বন্দরের জন্য চূড়ান্ত করে। এই বন্দর আগামী দিনে উত্তর-পূর্ব ভারতের গেটওয়ে হয়ে উঠবে বলে প্রশাসনের আধিকারিকদের দাবি।  পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, পলি পড়ে যাওয়ার কারণে হলদিয়া বন্দরে বড় জাহাজ ঢুকতে পারছে না। এর জন্য মাঝ সমুদ্রে ‘শিপ টু শিপ’ ট্রান্সলোডিং করতে হচ্ছে। ফলে খরচ বাড়ছে। কিন্তু গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরি হলে তাজপুরে সরাসরি বড় জাহাজ ঢুকে যাবে। ট্রান্সলোডিং এর হয়রানি থাকবে না। তাতে অর্থনৈতিকভাবেও সাশ্রয় হবে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা থেকে প্রতিবছর ৫-৬ হাজার কোটি টাকার মাছ ও চিংড়ি বিদেশে রপ্তানি হয়। তাজপুরে বন্দর হলে মাছ ও চিংড়ি রপ্তানিতে অনেক সুবিধা হবে। বীরভূমের পাচামি থেকে কয়লা অনায়াসে তাজপুর বন্দর দিয়ে বাইরে পাঠানো যাবে। এছাড়া আকরিক লোহা পেট্রোপণ্য প্রভৃতি নানাবিধ জিনিসপত্র তাজপুর বন্দর থেকেই নানা দেশে আমদানি-রপ্তানি করা যাবে। কলকাতা ও হলদিয়া বন্দর নাব্যতার সমস্যায় ভুগছে। তাই বড় জাহাজ গুলি ঢুকতে পারছে না।  তাজপুর বন্দর প্রকল্প টি রূপায়িত হলে ভবিষ্যতে পূর্ব মেদিনীপুরের আর্থসামাজিক চেহারাই বদলে যাবে। বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। সম্প্রতি জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বেশ কয়েকবার তাজপুর সমুদ্র বন্দরের প্রস্তাবিত এলাকা পরিদর্শন করেন। রাজ্য থেকেও বিশেষজ্ঞ টিম গিয়ে একাধিকবার ওই এলাকা ঘুরে দেখেছে। উপকূল থেকে কয়েক কিমি গভীরে গড়ে উঠেছে বন্দর। এর মাঝে তৈরি হবে সেতু। সেখান থেকে মালপত্র সড়ক ও রেলপথে নানা প্রান্তে রওনা দেবে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder