০১ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুবককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন, আটক ১

নসিবুদ্দিন সরকার, হুগলি: বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে যুবককে গলা কেটে খুন করার অভিযোগ উঠল। পুলিশ জানায়, মৃত যুবকের নাম অমিত কারক (২৬)। ওই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভদ্রেশ্বর থানার মানকুন্ডু লেকভিউ এলাকায়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত আটটা নাগাদ অমিতের বন্ধু সোমনাথ তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। অমিত বাড়িতে ফোন করে রাত ১১ টা নাগাদ পরিবারের লোকজনের সঙ্গে শেষ কথা বলে। শুক্রবার সকালে তাদের বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একটি পুকুর থেকে অমিতের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মৃতদেহ উদ্ধারের পর দেখা যায় অমিতের গলা কাটা ছিল। তার সারা শরীরে আঘাতের দাগ ছিল। দুষ্কৃতীরা অমিতকে খুন করার পর তার দেহ পুকুরে ফেলে ঠাকুরের কাঠামো ও গাছের গুড়ি দিয়ে ঢাকা দিয়ে দেয়।  অমিতের বাবা রঞ্জন কারক জানান বৃহস্পতিবার রাত আটটা নাগাদ অমিতকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় তার বন্ধু সোমনাথ। রাত এগারোটা নাগাদ অমিত ফোন করে জানায়, সে কিছুক্ষণের মধ্যেই বাড়ি ফিরবে। তারপর দু’ঘণ্টা কেটে গেলেও অমিত বাড়ি ফিরে আসেনি। রাত একটা নাগাদ অমিতের ফোনে ফোন করলে সুইচ অফ শব্দ শোনা যায়। শুক্রবার সকালে ওই পুকুরে অমিতের দেহ দেখতে পাওয়া যায়। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের পাঠায়। 

দরজা ভেঙে ঘুম ভাঙাল পুলিশ, গেল বিয়ে বাড়িতেও

নসিবুদ্দিন সরকার, হুগলি: ঘরের মধ্যে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন এক ব্যক্তি। ঘুম ভাঙাতে শেষ পর্যন্ত ভাঙতে হয় দরজা। বিস্ময়কর ওই ঘটনায়

স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের দৌলতে হতদরিদ্র লক্ষী নতুন জীবন ফিরে পেল

নসিবুদ্দিন সরকার, হুগলি: বাঁকুড়া জেলার কোতুলপুর থানার মশিনাপুর গ্রামের বাসিন্দা লক্ষী আহেড়ী। জন্ম থেকেই তার হৃদযন্ত্রে ছিদ্র ধরা পড়ে। বছরের অধিকাংশ সময় তাকে জ্বর-সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হতে হয়। লক্ষ্মী আহেড়ীর বাবা সরোজ আহেড়ী দিন আনা দিন খাওয়া একজন ছাপোষা মানুষ। কোনরকমে সংসার চলে। তবে অভাব-অনটন নিত্য তাড়া করে বেড়ায় সরোজ আহেড়ীকে। তার উপর ছোট্ট একরত্তি মেয়ে লক্ষ্মীর হৃদযন্ত্রের ব্যয়বহুল চিকিৎসা করানোর অর্থ নেই। দীর্ঘ কুড়িটা বছর অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে বিভিন্ন ডাক্তারের দুয়ারে দুয়ারে চিকিৎসার আর্জি নিয়ে ছুটে বেড়িয়েছেন। কিন্তু কেউই তাকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন নি।  অবশেষে গ্রামীণ চিকিৎসক গোলাম মোর্তজা সাহেব অসহায় লক্ষ্মীর চিকিৎসায় সাহায্য করার জন্য হুগলি জেলার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘আওয়ার অবলম্বন’ সংস্থার সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবের সঙ্গে চিঠির মাধ্যমে যোগাযোগ করেন। মুজিবুর রহমান দুর্গাপুরের মিশন হাসপাতালের ডাইরেক্টর সত্যজিৎ বোসের সঙ্গে লক্ষীর চিকিৎসার বিষয়ে সাহায্যের আর্জি জানান। মানবিক চিকিৎসক সত্যজিৎবাবুর সাহায্যে লক্ষ্মী আহেড়ীকে ওই মিশন হাসপাতালে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত হয়।  গত ২৮ অক্টোবর আওয়ার অবলম্বন সংস্থার অ্যাম্বুলেন্স করে নিখরচায় লক্ষ্মী আহিড়ীকে নিয়ে গিয়ে দুর্গাপুরে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসক সত্যজিৎ বোসের তত্ত্বাবধানে লক্ষীর হৃদযন্ত্রের অপারেশন করা হয়। তবে লক্ষ্মীর হৃদযন্ত্রের অপারেশন করতে একটি পয়সাও খরচ করতে হয়নি। রাজ্য সরকারের দেওয়া স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমেই চিকিৎসক সত্যজিৎবাবু সম্পূর্ণ নিখরচায় তার হার্টের অপারেশন করার অবস্থা করেন। গত ১২ নভেম্বর নতুন জীবন ফিরে পেয়ে লক্ষ্মী আহেড়ী দীর্ঘ কুড়ি বছরের যন্ত্রণার হাত থেকে মুক্তি পায়। বাবা-মায়ের সঙ্গে সেই আওয়ার অবলম্বন সংস্থার অ্যাম্বুলেন্সে করে নিখরচায় তাদের মশিনাপুর গ্রামের বাড়িতে ফিরে যায়। 

বেডে নয়, হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগী নর্দমায়

নসিবুদ্দিন সরকার, হুগলি: হাসপাতালের বেডে থাকার কথা রোগীর। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি এক রোগী নর্দমায় পড়ে বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার করছে। ওই রোগীকে উদ্ধার করে আবারও হাসপাতালের বেডে রাখা হয়। এমন আশ্চর্যজনক ঘটনায় হাসপাতালজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। সূত্রে জানা গেছে, বালির নিমতলা এলাকার এক রোগীকে চিকিৎসার জন্য উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতলে ভর্তি করা হয়েছিল। চিকিৎসা চলাকালীন বালির ওই রোগীর মৃত্যু হয়। মৃত রোগীর আত্মীয় পরিজন দেহ নিতে হাসপাতালে আসেন। তারা যখন হাসপাতালে ভিতরে প্রবেশ করেছিলেন সেই সময়ে তারা কোন এক ব্যক্তির বাঁচাও বাঁচাও আর্তনাদ শুনতে পান। মৃতদেহ নিতে আসা ব্যক্তিদের একজন হলেন প্রশান্ত মন্ডল। তিনি জানান, হাসপাতাল লাগোয়া নর্দমার দিক থেকে ওই আর্তনাদ আসছিল। সেই আর্তনাদ শুনে তারা ওই নর্দমার দিকে এগিয়ে যান। তারা দেখতে পান একজন ব্যক্তি ওই নর্দমায় পড়ে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করছে। তার হাতে স্যালাইনের চ্যানেল লাগানো রয়েছে। তখন তারাই তাকে রোগী ভেবে নর্দমা থেকে তুলে নিয়ে আসেন। তারা বিষয়টি হাসপাতালের কর্তব্যরত নার্সদের জানান। তাকে আবার হাসপাতালের মেইল ওয়ার্ডে নিয়ে গিয়ে রাখা হয়।

ট্রাকের ধাক্কায় ওসি ও এসআই মারাত্মকভাবে জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি

নসিবুদ্দিন সরকার, হুগলি: রাস্তায় নো-এন্ট্রি সামাল দিচ্ছিলেন থানার ওসি। হঠাৎ একটি ট্রাক দ্রুতগতিতে এসে ওসির গাড়িতে ধাক্কা মারে। ট্রাকের ধাক্কা এতটাই জোরে ছিল যে ওসির গাড়ি দুমড়ে-মুচড়ে নয়ানজুলিতে ছিটকে পড়ে। ওই ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হন গুড়াপ থানার ওসি পুষ্পেন্দু সান্যাল ও সাব ইন্সপেক্টর সমীর মুখোপাধ্যায়।  অন্যান্য পুলিশকর্মীরা তাদের গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। তাদেরকে বর্ধমানের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। সূত্রে জানা গেছে তাদের শারীরিক অবস্থা এতটাই খারাপ যে ওই নার্সিংহোমে চিকিৎসা করা সম্ভব নয় সেই জন্য তাদেরকে কলকাতার বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। চাঞ্চল্যকর ওই ঘটনাটি ঘটে গুড়াপ থানার বশিপুর এলাকায় দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপর।

হুগলি ইমামবাড়ার কিছুটা অংশ ভেঙে পড়ল

নসিবুদ্দিন সরকার, হুগলি: হাজী মহম্মদ মহসিনের স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক হুগলি ইমামবাড়ার পশ্চিম দিকের কিছুটা অংশ হঠাৎই ভেঙে পড়ল। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার, পুর প্রশাসক গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায় ও পূর্ত দফতরের এক প্রতিনিধি দল। বিধায়ক অসিত মজুমদার ওই বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে ফোনে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেন। খুব তাড়াতাড়ি ওই ভাঙা অংশের সংস্কারের কাজ শেষ করতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।  ইমামবাড়াটি হেরিটেজ কমিশনের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। ঐতিহাসিক ইমামবাড়া যদি ধ্বংস হয়ে যায় তাহলে একটা ইতিহাস বিলুপ্ত হয়ে যাবে। অতএব ওই ইমামবাড়া কোনভাবেই নষ্ট করা যাবে না। এমনটাই দাবি বিধায়কের। অসিত মজুমদারের মতে পিডব্লিউডি অথবা পুরসভাকে টাকা দিয়ে হেরিটেজ কমিশন কাজটা করানোর ব্যবস্থা করুক। ঘটনাটি তিনি রাজ্য সরকার, হেরিটেজ কমিশন ও পিডব্লিউডিকে চিঠি দিয়ে দ্রুত জানাবেন বলে জানান।  জেলাশাসক বলেন, টাকার ব্যবস্থা কোথা থেকে হয় দেখে সংস্কারের কাজটা করে দেওয়া হবে।ইমামবাড়ার ম্যানেজার গৌতম দাস জানান, ইতিমধ্যেই ১০ কোটি টাকার ডিপিআর জমা দেওয়া হয়েছে স্থানীয় হেরিটেজ কমিশনের কাছে। উল্লেখ্য, ১৮৪৬ সালে সৈয়দ কেরামত আলি চুঁচুড়ায় হুগলি ইমামবাড়া তৈরি করেন। ইমামবাড়া তৈরি করা হয়েছিল বিখ্যাত দানবীর হাজী মহম্মদ মহসিনের স্মৃতি রক্ষার্থে। জানা গেছে, ১৮৫২ সালে লন্ডন থেকে ১১,৭২১ টাকা দিয়ে বিখ্যাত ঘড়ি কিনে এনে ইমামবাড়ার দেওয়ালে লাগানো হয়। ঘড়ি সচল রাখতে প্রতি সপ্তাহে আধঘন্টা ধরে দম দিতে হয়। ঘড়ির চাবির ওজন ২০ কেজি। তাই দম দিতে দুজন লোক লাগে। ঘড়ির তিনটে কাঁটার ওজন ১৫০ কেজি। ওই ঘড়ি ১৬৯ বছর ধরে টিকটিক করে জনসাধারণের জন্য সময় দিয়ে চলেছে। এছাড়াও ইমামবাড়ায় রয়েছে সূর্য ঘড়িও। গঙ্গার দক্ষিণ পাড়ে এক মনোরম পরিবেশে ২২ বিঘা জমির উপর ইমামবাড়া অবস্থিত। 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder