৩১ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘মিধিলি’ ঝড়ে ক্ষতি ধানে, ঋণ পরিশোধের দুশ্চিন্তায় সুন্দরবনের কৃষকরা

ইনামুল হক, বসিরহাট: বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া অকাল ঘূর্ণিঝড় মিধিলির সরাসরি প্রভাব বঙ্গে না পড়লেও ঘূর্ণিঝড়ের জেরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপে জেরবার

সুন্দরবনে মুখ্যমন্ত্রী: জঙ্গলের পাশে শতাব্দী প্রাচীন বনবিবির থান মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাকা করার দাবি জানাবেন পরান

ইনামুল হক, বসিরহাট:  নব্বুই  ছুঁই ছুই এর বৃদ্ধের চোখ মুখের চামড়া গুটিয়ে গেছে। জঙ্গল থেকে কুড়ি ফুট দূরেই থাকেন পরান

সুন্দরবন বাসীদের স্বপ্নের ক্যানিং ঝড়খালি রেলপথ সম্প্রসারনের কাজ আদৌ কি শেষ হবে, সন্দিহান সুন্দরবন বাসী

      উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়,সুন্দরবন : সুন্দরবনের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পথের ক্যানিং থেকে ঝড়খালি রেললাইন সম্প্রসারণ কি আদৌ শেষ হবে

সুন্দরবনে দুই খুদের তৈরি এক ফুটের দুর্গা নজর কাড়লো জঙ্গল পারে

ইনামুল হক, বসিরহাটঃ বসিরহাটের হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের সুন্দরবনের পথের দাবীর দুই ছাত্র তথা দুই ভাই অষ্টম শ্রেণী ছাত্র সায়ন মল্লিক. সপ্তম

কুলতলির গ্রামে বাঘের পায়ের ছাপ! আতঙ্কে রাত জাগল গ্রামবাসীরা

উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, কুলতলি: আবারও বাঘের ভয়ে রাত জাগল সুন্দরবনের মানুষ। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত কুলতলি ব্লকের লোকালয়ে বারংবার বাঘের আতঙ্ক গ্রাস করেছে গ্রামবাসীদের।

বাঘের কামড় মৎসজীবির ঘাড়ে, শেষ রক্ষা হল না

উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, কুলতলি: আবারও সুন্দরবনে বাঘের সঙ্গে লড়াই করে এক মৎস্যজীবীকে ফিরিয়ে আনলেও পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। সুন্দরবনের কুলতলি থানার গোপালগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছারি বাজার নস্কর পাড়ার লখাই নস্কর, গত সোমবার দুপুরে আরও দু’জন সঙ্গীকে নিয়ে নদী পথে নৌকায় চেপে কাঁকড়া ধরতে যায় সুন্দরবনে। সাথে ছিল দুই সঙ্গী লক্ষণ সরদার ও সমীর সর্দার।  বৃহস্পতিবার সকালে যখন তাঁরা কাঁকড়া ধরছিল সেই সময় আচমকাই ধীবরদের দেখতে পেয়েই কালীবয়রা জঙ্গল থেকে তেড়ে বেরিয়ে আসে একটি পুর্ণবয়স্ক বাঘ। সরাসরি হামলা চালায় লখাই নস্করের উপর। বাঘটি তাঁর ঘাড়ে কামড় বসিয়ে টেনে নিয়ে যেতে চায় জঙ্গলে। সঙ্গে থাকা দুই সঙ্গী নৌকায় থাকা লাঠি, বৈঠা নিয়ে বাঘের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে নিজেদের অদম্য সাহস নিয়ে। কোনোক্রমে বাঘের মুখ থেকে উদ্ধার করে লখাইকে নিয়ে আসা হয় কুলতলির কৈখালী ঘাটে।  সেখান থেকে কুলতলি ব্লকের জামতলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।ওই ধীবরের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকায় সাথে সাথে কলকাতার পিজি হাসপাতালে রেফার করে দেন চিকিৎসকরা। সেখানে এদিন বিকালেই ওই মৎস্যজীবির মৃত্যু ঘটে বলে জানা গেল। বারবার বাঘের আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলায় উদ্বিগ্ন মৎস্যজীবীরা। এই নিয়ে এ বছরে এখনো পর্যন্ত  বাঘে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ২৯। গত বছরেও আক্রান্ত ২৯ ছিল। 

সুন্দরবনের শতাব্দী প্রাচীন নৌকাবাইচ গৌড়েশ্বর নদীতে

ইনামুল হক, বসিরহাট: সুন্দরবনে গৌড়েশ্বর নদীতে নৌকা বাইচ আজও প্রাচীন ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রশিক্ষিত নৌকা বাইচের প্রতিযোগীরা হাজির হয় এখানে। উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জ ব্লক ১ নম্বর স্যান্ডেলের বিল গ্রামে গৌড়েশ্বর নদীতে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে প্রায় ৫ কিলোমিটার নদীবক্ষে ১৬ দলের নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতায় নামেন। আর এই দেখতে সুন্দরবনের দুই প্রান্তের মানুষ নদীর পাড়ে ভিড় জমায়। 

সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে আবার বাঘের কামড় মৎস্যজীবিকে

উজ্জ্বল বন্দোপাধ্যায়, কুলতলি: সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের হামলায় আবার জখম হলেন কুলতলির এক মৎস্যজীবী। ভাই ও গ্রামের অপর এক মৎস্যজীবীর সঙ্গে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে ভয়ঙ্কর বিপদের মুখে পড়তে হল ওই ধীবরকে। সেখানেই বাঘের হামলায় গুরুতর জখম হয় ওই মৎসজীবি l সোমবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে সুন্দরবনের বেণীফেলি জঙ্গল লাগোয়া নদীর খাড়িতে।  কুলতলি থানার দেউলবাড়ি দেবীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা সৌমিত্র সাফুঁইয়ের নৌকায় করে দাদা লখিন্দর ও প্রতিবেশি ইব্রাহিম শেখ সোমবার সকালে রওনা দিয়েছিল কাঁকড়া ধরতে। দুপুরের পর কাঁকড়া ধরার দোন (চার) ফেলে খাওয়া-দাওয়া সেরে নৌকাতেই যখন তাঁরা বিশ্রাম নিচ্ছিল ঠিক সেই সময় আচমকাই ম্যানগ্রোভ জঙ্গলের ভেতর থেকে একটি বাঘ ঝাঁপিয়ে পড়ে একেবারে লক্ষিন্দরের ওপর। তাকে রীতিমত জখম করে ফেলে।   চোখের সামনে বাঘের হামলা হতে দেখে বাকি দুইজন নৌকায় থাকা লাঠি সোটা ও বৈঠা নিয়ে বাঘের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তুললে বাঘ ভয়ে শিকার ছেড়ে প্রাণ বাঁচাতে জঙ্গলের মধ্যে পালিয়ে যায়। এরপর রক্তাক্ত অবস্থায় লখিন্দরকে উদ্ধার করে রাতে নিয়ে আসা হয় কুলতলি ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকায় রাতেই চিকিৎসকরা সেখান থেকে স্থানান্তরিত করে কলকাতার চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে। এদিকে ওই দলটি কুলতলি বিট অফিস থেকে বৈধ অনুমতি নিয়ে কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিল বলে দাবি ওই মৎস্যজীবীদের দলটির। এদিকে বাঘের হামলার ঘটনাটি নিষিদ্ধ এলাকায়, না অনুমোদনপ্রাপ্ত এলাকায় হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে বনদপ্তর।  

বাঘের আক্রমণে আবার মৃত্যু এক মৎস্যজীবির

উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, কুলতলি: সুন্দরবনে বাঘের হানায় অনেকের মৃত্যু হয়েছে। বাঘের হানায় আবারো মৃত্যু হল এক মৎস্যজীবীর।পুলিশ ও স্থানীয় সূএে জানা গেল, কুলতলির মৈপীঠ উপকূল থানার কিশোরী মোহনপুরের শ্রীকান্ত পল্লীর বাসিন্দা শ্রীনিবাস মন্ডল(৫২), গোপাল বেরা ও নকুল মন্ডল সোমবার কিশোরী মোহনপুরের ঘাট থেকে নৌকা নিয়ে সুন্দরবনের জঙ্গলে রওনা দেয় কাঁকড়া ধরতে।  মঙ্গলবার দুপুরে নদীতে জঙ্গলের কাছে খাওয়া দাওয়ার পর তিনজনই ঘুমিয়ে পড়ে নৌকাতে, আর সেই সময় তাদের অজান্তেই আচমকা জঙ্গল থেকে বেরিয়ে একটি বাঘ এসে শ্রীনিবাসের ঘাড়ে আক্রমণ করে। তাঁর দুই সঙ্গী নৌকার বৈঠা নিয়ে বাঘকে আক্রমন করলে বাঘ শ্রীনিবাসকে ফেলে পালায়। তবে ততক্ষনে শ্রীনিবাসের অত্যাধিক রক্ত ক্ষরনে ঘটনাস্থলেই মারা যায়।  মৃত অবস্থায় তার সঙ্গীরা তাকে গ্রামে ফিরিয়ে আনে। মৃতার বাড়িতে স্ত্রী দূর্গা মন্ডল ও ১৭ বছরের এক ছেলে অমিত আছে।  বিকল্প কোনো কাজ না থাকায় সংসারের একমাএ উপার্জনকারী শ্রীনিবাস জঙ্গলে গিয়েছিল মাছ ও কাঁকড়া ধরতে। মৃতদেহ কুলতলি ব্লক হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে মৈপিঠ উপকূল থানার পুলিশ।এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।এদিকে বারবার বাঘের কামড়ে মৃত্যুর পরেও গরীব এইসব মৎস্যজীবি পরিবার সরকারি কোন সাহায্য পায় না। তাই এদের দ্রুত ক্ক্ষতি পূরনের দাবি জানালো এপিডিআর। 

নৌকাতে বাঘে-মানুষে লড়াই, তারপর কি হল!

সামিম আহমেদ, পাথরপ্রতিমা: নৌকার উপরে প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে চলল বাঘে মানুষে রুদ্ধশ্বাস লড়াই। লড়াইয়ের অস্ত্র শুধু লাঠি আর গাতি। সেই লড়াইয়ে শেষমেষ হার মানলো বাঘ। সঙ্গীদের নিয়ে বাঘের উপর ঝাপিয়ে পড়ে স্ত্রীকে বাঁচালেন স্বামী। আঘাত সহ্য করতে না পেরে শিকার ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয় বাঘ। গুরুতর জখম স্ত্রীকে তড়িঘড়ি নৌকা করে দ্রুত নিয়ে আসা হয় পাথরপ্রতিমা ব্লক হাসপাতালে। জানা গিয়েছে, রবিবার পাথর প্রতিমার জি প্লট গ্রাম পঞ্চায়েতের সত্যদাসপুর গ্রামের ৬ জন মৎস্যজীবী কলস দ্বীপের জঙ্গল লাগোয়া বাঘের খালে ছিপ, দোন ফেলে মাছ ও কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিল। ভোর রাতে নৌকোতে খাওয়া দাওয়া করার সময় আচমকা জঙ্গল থেকে একটি বাঘ ঝাঁপিয়ে পড়ে নৌকার ধারে বসে থাকা বছর চল্লিশের কাজলের ওপর। থাবা বসিয়ে দেয় তার মাথায় ও গালে। তারপর টানতে টানতে নৌকা থেকে টেনে-হিঁচড়ে জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কাজলের স্বামী সুবল মল্লিক লাঠি দিয়ে বাঘের উপর আক্রমণ শুরু করে। অন্যেরা বাঘের পিঠে লাঠি ও কাঁকড়া ধরার গাতি দিয়ে মারতে থাকে। আঘাত সহ্য করতে না পেরে শিকার ছেড়ে নৌকা থেকে লাফ দিয়ে পালায় বাঘটি। বাঘের থাবার আঘাতে অচৈতন্য হয়ে পড়ে কাজল। তড়িঘড়ি তাকে নিয়ে আসা হয় পাথরপ্রতিমা ব্লক হাসপাতালে। সোমবার দুপুরের পর জ্ঞান ফেরে কাজলের। কাঁপা গলায় কাজল জানায়, অভাবের সংসার। স্বামীর আয়ে সংসার চলে না। তাই আমিও স্বামীর সঙ্গে গভীর জঙ্গলে মাছ ধরতে যাই। বাঘটা যেভাবে আমাকে ধরেছিল সেটা মনে উঠলেই শরীর কাঁপছে। আমার স্বামী ও বাকি সঙ্গীরা যেভাবে বাঘের সঙ্গে লড়াই করে আমাকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে এল, তা বলে বোঝানো যাবে না।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder