২৮ নভেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিচারপতি নিয়োগে কেন্দ্রের গড়িমসি, হাইকোর্টে জমে আছে ২ লক্ষ মামলার পাহাড়

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১ মে ২০২২, রবিবার
  • / 287

আসিফ রেজা আনসারীঃ আইন সবার জন্য সমান। সময়ের মধ্যে ন্যায় বিচার পাওয়া একজন নাগরিকের অধিকার। এখানে সকলের সমান সুযোগের অধিকারও নিশ্চিত করেছে সংবিধান। কিন্তু ন্যায় বিচার দেবেন কে? কলকাতা হাইকোর্টে বর্তমানে যা পরিস্থিতি, তাতে ঠিক এমনই প্রশ্ন উঠছে আইনজীবী মহলে। কেননা জেলা বা মহকুমা আদালত বাদ দিয়ে, শুধু কলকাতা হাইকোর্টেই প্রায় ২ লাখ মামলা ঝুলে আছে। হচ্ছে না সময় মতো শুনানি। ফলে দেরি হচ্ছে বিচার প্রক্রিয়াতেও।

জানা গিয়েছে, শুধু কলকাতা হাইকোর্টেই ৭২টি বিচারপতি পদ রয়েছে। কিন্তু পর্যাপ্ত বিচারপতি নেই। কলকাতায় বর্তমানে বিচারপতি রয়েছেন মাত্র ৩৯জন। প্রায় অর্ধেক আসনই ফাঁকা। ফলে বিচার প্রক্রিয়া ব্যহত হচ্ছে। রাজ্যের তরফ থেকে অবশ্য এই শূন্যতা পূরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু কেন্দ্রের গড়িমসিতে তা থমকে আছে। কিছুদিন আগেও হাইকোর্ট কলেজিয়াম থেকে ১১ জনের নাম পাঠানো হয়। অভিযোগ, কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রক এখনও তা আটকে রেখেছে।

আরও পড়ুন: গাড়ির যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানায় অগ্নিকাণ্ড, আগুন নিয়ন্ত্রনে দমকলের ছটি ইঞ্জিন

সূত্রের খবর, ১১ জন সার্ভিস জাজের নামও পাঠানো হয়েছিল। এখানেও গড়িমসি করছে কেন্দ্র। আইনমন্ত্রক বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়া আটকে রেখেছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের এমন কাজে আইনজীবীরাও ক্ষুব্ধ। তাঁদের একাংশ মনে করছেন নিজেদের পছন্দ মতো বিচারপতি না পাওয়ায় কেন্দ্র সরকার গড়িমসি করছে। এতে সাধারণ মানুষের ক্ষতি হচ্ছে। অনেক বিচারাধীন বন্দি জেলেই কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন সম্ভাব্য সাজার মেয়াদের থেকেও বেশিদিন। এ নিয়ে রাজ্য বার কাউন্সিলের সদস্য ও প্রবীণ আইনজীবী আনসার মণ্ডল বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বারবার অনুরোধ করছে, তাতে কাজ হচ্ছে না। আসলে বিচার ব্যবস্থা নিয়ে কেন্দ্রের হেলদোল নেই। তাঁর আরও অভিযোগ, আরএসএস বা সেই ভাবধারায় লোককে ঢোকাতে চাইছে বিজেপি। বাংলার প্যানেল থেকে বাঙালি বিচারপতি নিয়োগ হোক এমনটাই চায় রাজ্যের আইনজীবীরা। তাতে কেন্দ্র সায় দিচ্ছে না বলেও অন্যদের অভিমত।

আরও পড়ুন: কলকাতার রাজপথে এসআইআর বিরোধী মহামিছিলে মমতা-অভিষেক

নবান্ন সূত্রে খবর, তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর বিচারব্যবস্থাকে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। বিগত এই ১১ বছরে হাইকোর্টের একটি নতুন সার্কিট বেঞ্চ চালু হয়েছে। এ ছাড়াও ৬টি সিবিআই কোর্ট, ৮৮টি ফাস্টট্র্যাক কোর্ট, ৪১টি মহিলা, ১৯টি মানবাধিকার, ৪টি কমার্শিয়াল ও ১৯টি শিশুবান্ধন কোর্ট তৈরি হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের ফান্ডে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট তৈরি হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না, তাই রাজ্য সরকারকেই ৮৮টি আদালত চালাতে হচ্ছে।

আরও পড়ুন: SIR-এ বাংলার ১ কোটি ভুয়ো ভোটার বাদ যাবে: শুভেন্দু

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

বিচারপতি নিয়োগে কেন্দ্রের গড়িমসি, হাইকোর্টে জমে আছে ২ লক্ষ মামলার পাহাড়

আপডেট : ১ মে ২০২২, রবিবার

আসিফ রেজা আনসারীঃ আইন সবার জন্য সমান। সময়ের মধ্যে ন্যায় বিচার পাওয়া একজন নাগরিকের অধিকার। এখানে সকলের সমান সুযোগের অধিকারও নিশ্চিত করেছে সংবিধান। কিন্তু ন্যায় বিচার দেবেন কে? কলকাতা হাইকোর্টে বর্তমানে যা পরিস্থিতি, তাতে ঠিক এমনই প্রশ্ন উঠছে আইনজীবী মহলে। কেননা জেলা বা মহকুমা আদালত বাদ দিয়ে, শুধু কলকাতা হাইকোর্টেই প্রায় ২ লাখ মামলা ঝুলে আছে। হচ্ছে না সময় মতো শুনানি। ফলে দেরি হচ্ছে বিচার প্রক্রিয়াতেও।

জানা গিয়েছে, শুধু কলকাতা হাইকোর্টেই ৭২টি বিচারপতি পদ রয়েছে। কিন্তু পর্যাপ্ত বিচারপতি নেই। কলকাতায় বর্তমানে বিচারপতি রয়েছেন মাত্র ৩৯জন। প্রায় অর্ধেক আসনই ফাঁকা। ফলে বিচার প্রক্রিয়া ব্যহত হচ্ছে। রাজ্যের তরফ থেকে অবশ্য এই শূন্যতা পূরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু কেন্দ্রের গড়িমসিতে তা থমকে আছে। কিছুদিন আগেও হাইকোর্ট কলেজিয়াম থেকে ১১ জনের নাম পাঠানো হয়। অভিযোগ, কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রক এখনও তা আটকে রেখেছে।

আরও পড়ুন: গাড়ির যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানায় অগ্নিকাণ্ড, আগুন নিয়ন্ত্রনে দমকলের ছটি ইঞ্জিন

সূত্রের খবর, ১১ জন সার্ভিস জাজের নামও পাঠানো হয়েছিল। এখানেও গড়িমসি করছে কেন্দ্র। আইনমন্ত্রক বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়া আটকে রেখেছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের এমন কাজে আইনজীবীরাও ক্ষুব্ধ। তাঁদের একাংশ মনে করছেন নিজেদের পছন্দ মতো বিচারপতি না পাওয়ায় কেন্দ্র সরকার গড়িমসি করছে। এতে সাধারণ মানুষের ক্ষতি হচ্ছে। অনেক বিচারাধীন বন্দি জেলেই কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন সম্ভাব্য সাজার মেয়াদের থেকেও বেশিদিন। এ নিয়ে রাজ্য বার কাউন্সিলের সদস্য ও প্রবীণ আইনজীবী আনসার মণ্ডল বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বারবার অনুরোধ করছে, তাতে কাজ হচ্ছে না। আসলে বিচার ব্যবস্থা নিয়ে কেন্দ্রের হেলদোল নেই। তাঁর আরও অভিযোগ, আরএসএস বা সেই ভাবধারায় লোককে ঢোকাতে চাইছে বিজেপি। বাংলার প্যানেল থেকে বাঙালি বিচারপতি নিয়োগ হোক এমনটাই চায় রাজ্যের আইনজীবীরা। তাতে কেন্দ্র সায় দিচ্ছে না বলেও অন্যদের অভিমত।

আরও পড়ুন: কলকাতার রাজপথে এসআইআর বিরোধী মহামিছিলে মমতা-অভিষেক

নবান্ন সূত্রে খবর, তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর বিচারব্যবস্থাকে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। বিগত এই ১১ বছরে হাইকোর্টের একটি নতুন সার্কিট বেঞ্চ চালু হয়েছে। এ ছাড়াও ৬টি সিবিআই কোর্ট, ৮৮টি ফাস্টট্র্যাক কোর্ট, ৪১টি মহিলা, ১৯টি মানবাধিকার, ৪টি কমার্শিয়াল ও ১৯টি শিশুবান্ধন কোর্ট তৈরি হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের ফান্ডে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট তৈরি হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না, তাই রাজ্য সরকারকেই ৮৮টি আদালত চালাতে হচ্ছে।

আরও পড়ুন: SIR-এ বাংলার ১ কোটি ভুয়ো ভোটার বাদ যাবে: শুভেন্দু