০৬ অগাস্ট ২০২৫, বুধবার, ২১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নবম দশম শ্রেণির শিক্ষক- গ্রুপ ডি নিয়োগ  মামলায় রায়দান স্থগিত রাখলো ডিভিশন বেঞ্চ

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, সোমবার
  • / 31

পারিজাত মোল্লাঃ  সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে দুটি আপিল পিটিশনের শুনানি চলে।দিনভর শুনানি শেষে ডিভিশন বেঞ্চ রায়দান স্থগিত রেখেছে। তবে পৃথক দুই সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশে কোনও স্থগিতাদেশ জারি করেনি ডিভিশন বেঞ্চ। নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ মামলায়  রায়দান স্থগিত রাখল কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, -‘আপাতত সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ের উপর নতুন কোনও নির্দেশ দেওয়া হবে না’।

জানা গেছে , বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং বিচারপতি বিশ্বজিত বসুর নির্দেশের প্রেক্ষিতে আলাদা আলাদা করে রায় জানাবে ডিভিশন বেঞ্চ।

আরও পড়ুন: সন্দেশখালি কান্ডে সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ককে নি:শর্ত জামিন দিল ডিভিশন বেঞ্চ

কলকাতা হাইকোর্টে স্কুল সার্ভিস কমিশন জানিয়েছে, -‘ তাদের কাছে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষার ওএমআর শিটের কোনও হার্ড কপি সংরক্ষণ করা নেই। ডিজিটাল মাধ্যমে উত্তরপত্র সংরক্ষিত রয়েছে’।এই ওএমআর শিটের বরাত দেওয়া হয়েছিল  উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের একটি সংস্থাকে।

আরও পড়ুন: যৌথ তদন্তে অনাস্থা, ফের সিবিআই চেয়ে ডিভিশন বেঞ্চে ইডি

নাইসা নামের সেই সংস্থার কাছ থেকে ওএমআর শিট সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা  সিবিআই।সিবিআইয়ের  দাবি, -‘ ওএমআর শিটে ব্যাপক কারচুপি করা হয়েছে। কম নম্বর পাওয়া পরীক্ষার্থীদের পাশ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওএমআর শিটে কেউ পেয়েছেন ৪, কেউ পেয়েছেন ২৬, অথচ তাঁদের সকলকে ৫৩ নম্বর দিয়ে পাশ করানো হয়েছে’।

আরও পড়ুন: চাকরিহারাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে চায় ডিভিশন বেঞ্চ

ওএমআর শিটে কারচুপির অভিযোগ উঠেছে এসএসসির পরীক্ষায় বসা  ৯৫২ জন চাকরিপ্রার্থীর বিরুদ্ধে। সিবিআইয়ের অভিযোগের পর এসএসসি তথ্য খতিয়ে দেখে কারচুপির কথা স্বীকারও করে নিয়েছে। তারা জানায় ৮০৫ জনের উত্তরপত্রে কারচুপি হয়েছে। এর পরেই কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ নির্দেশ দেয়,-‘ স্কুল সার্ভিস  কমিশন নিজ ক্ষমতা প্রয়োগ করে ওই ৮০৫ জনের চাকরি বাতিল করুক’।

এই প্রক্রিয়া ৭ দিনের মধ্যে শুরু করার নির্দেশও দেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু।সিঙ্গল বেঞ্চের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেন চাকরি হারানো শিক্ষকেরা।

সোমবার তাঁদের আইনজীবীরা সওয়াল-জবাবে জানান,  শুধুমাত্র সিবিআইয়ের দেওয়া ওএমআর শিট থেকেই চাকরি বাতিল করতে পারে না এসএসসি। কারণ, স্কুল সার্ভিস কমিশন জানিয়েছে, আসল ওএমআর শিট নষ্ট করা হয়েছে। এর ফলে সিবিআই যে ওএমআর শিট উদ্ধার করেছে তা ‘মিরর ইমেজ’। অর্থাত্‍, এটি মূল নথি নয়’।

ডিভিশন বেঞ্চে আবেদনকারীদের প্রশ্ন,  স্কুল সার্ভিস কমিশনের এমন ভুল কীভাবে হল? কাদের জন্য এই ভুল হল? এত পরীক্ষার্থী কী ভুল করলেন?’ এর পাশাপাশি  ডিভিশন বেঞ্চে তাঁদের আবেদন, -‘সুপারিশপত্র বাতিলের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হোক’।

অপরদিকে  এসএসসি-র আইনজীবী হাইকোর্ট কে জানান,  এই তদন্তে তারা সব রকম সাহায্য করতে প্রস্তুত। এই ৯৫২ জনের উত্তরপত্র  খতিয়ে দেখা হয়েছে। ডিজিটাল ভাবে সংরক্ষণ করার পরেই আসল ওএমআর শিট নষ্ট করা হয়েছে। এর ফলে ডিজিটালে যা আছে তা আসল ওএমআর শিটের প্রতিলিপি। কোনও প্রার্থীর এতে আপত্তি থাকলে তিনি প্রাপ্ত নম্বর যাচাই করে দেখতে পারেন’।

মামলকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং ফিরদৌস শামিমের প্রশ্ন তোলেন, ‘ এই ৯৫২ জনের কেউ কি জোর দিয়ে বলতে পারবেন যে, যে সব ওএমআর শিট ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে তা তাঁদের নয়?  এত দিন কিছু না বলে চাকরি যাওয়ার মুখে কেন ওএমআর শিট নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা?

ওএমআর শিটের হার্ড কপি না থাকলেও তথ্যগুলো সব রয়েছে। তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে ৯৫২ জনের ওএমআর শিট উদ্ধার হয়েছে। তদন্ত আরও এগোলে সংখ্যা ১৯৫২ ছাড়িয়ে যাবে’।

স্কুলের চাকরি বাতিল নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং বিচারপতি বিশ্বজিত্‍ বসুর নির্দেশে এখনই স্থগিতাদেশ দিল না হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। এই দুই বিচারপতির নির্দেশে স্কুলের প্রায় তিন  হাজার শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের উপর তাকিয়ে অনেকেই।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

নবম দশম শ্রেণির শিক্ষক- গ্রুপ ডি নিয়োগ  মামলায় রায়দান স্থগিত রাখলো ডিভিশন বেঞ্চ

আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, সোমবার

পারিজাত মোল্লাঃ  সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে দুটি আপিল পিটিশনের শুনানি চলে।দিনভর শুনানি শেষে ডিভিশন বেঞ্চ রায়দান স্থগিত রেখেছে। তবে পৃথক দুই সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশে কোনও স্থগিতাদেশ জারি করেনি ডিভিশন বেঞ্চ। নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ মামলায়  রায়দান স্থগিত রাখল কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, -‘আপাতত সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ের উপর নতুন কোনও নির্দেশ দেওয়া হবে না’।

জানা গেছে , বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং বিচারপতি বিশ্বজিত বসুর নির্দেশের প্রেক্ষিতে আলাদা আলাদা করে রায় জানাবে ডিভিশন বেঞ্চ।

আরও পড়ুন: সন্দেশখালি কান্ডে সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ককে নি:শর্ত জামিন দিল ডিভিশন বেঞ্চ

কলকাতা হাইকোর্টে স্কুল সার্ভিস কমিশন জানিয়েছে, -‘ তাদের কাছে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষার ওএমআর শিটের কোনও হার্ড কপি সংরক্ষণ করা নেই। ডিজিটাল মাধ্যমে উত্তরপত্র সংরক্ষিত রয়েছে’।এই ওএমআর শিটের বরাত দেওয়া হয়েছিল  উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের একটি সংস্থাকে।

আরও পড়ুন: যৌথ তদন্তে অনাস্থা, ফের সিবিআই চেয়ে ডিভিশন বেঞ্চে ইডি

নাইসা নামের সেই সংস্থার কাছ থেকে ওএমআর শিট সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা  সিবিআই।সিবিআইয়ের  দাবি, -‘ ওএমআর শিটে ব্যাপক কারচুপি করা হয়েছে। কম নম্বর পাওয়া পরীক্ষার্থীদের পাশ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওএমআর শিটে কেউ পেয়েছেন ৪, কেউ পেয়েছেন ২৬, অথচ তাঁদের সকলকে ৫৩ নম্বর দিয়ে পাশ করানো হয়েছে’।

আরও পড়ুন: চাকরিহারাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে চায় ডিভিশন বেঞ্চ

ওএমআর শিটে কারচুপির অভিযোগ উঠেছে এসএসসির পরীক্ষায় বসা  ৯৫২ জন চাকরিপ্রার্থীর বিরুদ্ধে। সিবিআইয়ের অভিযোগের পর এসএসসি তথ্য খতিয়ে দেখে কারচুপির কথা স্বীকারও করে নিয়েছে। তারা জানায় ৮০৫ জনের উত্তরপত্রে কারচুপি হয়েছে। এর পরেই কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ নির্দেশ দেয়,-‘ স্কুল সার্ভিস  কমিশন নিজ ক্ষমতা প্রয়োগ করে ওই ৮০৫ জনের চাকরি বাতিল করুক’।

এই প্রক্রিয়া ৭ দিনের মধ্যে শুরু করার নির্দেশও দেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু।সিঙ্গল বেঞ্চের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেন চাকরি হারানো শিক্ষকেরা।

সোমবার তাঁদের আইনজীবীরা সওয়াল-জবাবে জানান,  শুধুমাত্র সিবিআইয়ের দেওয়া ওএমআর শিট থেকেই চাকরি বাতিল করতে পারে না এসএসসি। কারণ, স্কুল সার্ভিস কমিশন জানিয়েছে, আসল ওএমআর শিট নষ্ট করা হয়েছে। এর ফলে সিবিআই যে ওএমআর শিট উদ্ধার করেছে তা ‘মিরর ইমেজ’। অর্থাত্‍, এটি মূল নথি নয়’।

ডিভিশন বেঞ্চে আবেদনকারীদের প্রশ্ন,  স্কুল সার্ভিস কমিশনের এমন ভুল কীভাবে হল? কাদের জন্য এই ভুল হল? এত পরীক্ষার্থী কী ভুল করলেন?’ এর পাশাপাশি  ডিভিশন বেঞ্চে তাঁদের আবেদন, -‘সুপারিশপত্র বাতিলের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হোক’।

অপরদিকে  এসএসসি-র আইনজীবী হাইকোর্ট কে জানান,  এই তদন্তে তারা সব রকম সাহায্য করতে প্রস্তুত। এই ৯৫২ জনের উত্তরপত্র  খতিয়ে দেখা হয়েছে। ডিজিটাল ভাবে সংরক্ষণ করার পরেই আসল ওএমআর শিট নষ্ট করা হয়েছে। এর ফলে ডিজিটালে যা আছে তা আসল ওএমআর শিটের প্রতিলিপি। কোনও প্রার্থীর এতে আপত্তি থাকলে তিনি প্রাপ্ত নম্বর যাচাই করে দেখতে পারেন’।

মামলকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং ফিরদৌস শামিমের প্রশ্ন তোলেন, ‘ এই ৯৫২ জনের কেউ কি জোর দিয়ে বলতে পারবেন যে, যে সব ওএমআর শিট ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে তা তাঁদের নয়?  এত দিন কিছু না বলে চাকরি যাওয়ার মুখে কেন ওএমআর শিট নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা?

ওএমআর শিটের হার্ড কপি না থাকলেও তথ্যগুলো সব রয়েছে। তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে ৯৫২ জনের ওএমআর শিট উদ্ধার হয়েছে। তদন্ত আরও এগোলে সংখ্যা ১৯৫২ ছাড়িয়ে যাবে’।

স্কুলের চাকরি বাতিল নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং বিচারপতি বিশ্বজিত্‍ বসুর নির্দেশে এখনই স্থগিতাদেশ দিল না হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। এই দুই বিচারপতির নির্দেশে স্কুলের প্রায় তিন  হাজার শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের উপর তাকিয়ে অনেকেই।