০২ অক্টোবর ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১৫ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলায় ফিরছে কেরোসিনের পুরাতন বরাদ্দ

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ৩ এপ্রিল ২০২৩, সোমবার
  • / 134

পুবের কলম প্রতিবেদক: অবশেষে বাংলার দাবি মেনে নিতেই হল কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির সরকারকে। বাংলায় ফিরছে রেশনে কেরোসিনের পুরাতন বরাদ্দের পরিমাণ। তবে বরাদ্দ বাড়লেও কতটা কেরোসিন ব্যবহার করা যাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। কেননা কেন্দ্র যেভাবে দফায় দফায় কেরোসিনের দাম বাড়ানো হচ্ছে তাতে অনেক গরীব মানুষই রেশন থেকে কেরোসিন কিনতে পাচ্ছেন না। কয়েক মাস আগে এক লিটার কেরোসিনের দাম ১০০টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এখন অবশ্য দাম কিছুটা কমেছে। তা হলেও দাম ৭০ টাকার আশপাশেই থাকছে। এই বিপুল দাম দিয়ে বাংলার ঠিক কতজন রেশন গ্রাহক কেরোসিন কিনতে পারবেন তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। তবে বাংলার এই দাবি মেনে নেওয়া বা এ রাজ্যের কেরোসিনের পুরাতন বরাদ্দ ফিরে আসার নেপথ্যে যে মানুষটির নাম না করলেই নয়, তিনি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর দেওয়া রায়ের জেরেই বাংলায় ফিরছে কেরোসিনের পুরাতন বরাদ্দ।

মোদি সরকার সব রাজ্যের কেরোসিন বরাদ্দ ২০১৬ সাল থেকেই কমাতে শুরু করে দিয়েছিল। কিন্তু বাংলার ক্ষেত্রে সেই কাজ তাঁরা করতে পারেনি। নেপথ্য ছিল কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হওয়া একটি মামলা। বাংলার কেরোসিন হোলসেলারদের সংগঠন ওই মামলা করেছিল। সেই মামলার জন্যই কেন্দ্র সরকার প্রতি ত্রৈমাসিকে বাংলাকে ১ লক্ষ ৭৬ হাজার কিলোলিটার কেরোসিন পাঠাতে বাধ্য ছিল। কিন্তু গত বছরের জুলাই মাসে সেই মামলা প্রত্যাহার করে নিতে আবেদন জানান ওই সংগঠনের শীর্ষ নেতা। কলকাতা হাইকোর্ট তা মঞ্জুরও করে। আর তারপরে পরেই দেখা যায় গতবছর সেপ্টেম্বর মাসে রাজ্যের ত্রৈমাসিক কেরোসিনের বরাদ্দ এক ঝটকায় কমিয়ে ৮৮ হাজার ৩২২ কিলোলিটার করে দেয় কেন্দ্র। জানুয়ারি মাসে বরাদ্দ আরও কমিয়ে মাত্র ২২ হাজার ৩৫৬ কিলোলিটার করা হয়েছিল। কার্যত বাংলার মানুষকে কেরোসিন থেকে সম্পূর্ণ ভাবে বঞ্চিত করতেই মোদি সরকার এই পদক্ষেপ করেছিল বলেই অনেকের মনে হয়।

এই অবস্থায় বাংলার কেরোসিন হোলসেলারদের সংগঠনের অন্য কয়েকজন পদাধিকারী মামলা প্রত্যাহারের বিরোধিতা করে কলকাতা হাইকোর্টে ফের আবেদন করেন। সেই মামলার শুনানি শেষে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মামলা প্রত্যাহার সংক্রান্ত নির্দেশটি ‘অকার্যকর’ করার রায় দেন। ফলে পশ্চিমবঙ্গে কেরোসিন বরাদ্দ কমানো যাবে না বলে যে স্থগিতাদেশ ছিল, সেটাই পুনরায় কার্যকরী হয়। তার আগেই অবশ্য রাজ্য সরকারের তরফে কেন্দ্রকে চিঠি লিখে বরাদ্দ না কমানোর আবেদন করা হয়েছিল। কেন্দ্র তা শোনেনি। কিন্তু এখন কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পর কেরোসিনের বরাদ্দ বাড়াতে বাধ্য হল কেন্দ্র।

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

বাংলায় ফিরছে কেরোসিনের পুরাতন বরাদ্দ

আপডেট : ৩ এপ্রিল ২০২৩, সোমবার

পুবের কলম প্রতিবেদক: অবশেষে বাংলার দাবি মেনে নিতেই হল কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির সরকারকে। বাংলায় ফিরছে রেশনে কেরোসিনের পুরাতন বরাদ্দের পরিমাণ। তবে বরাদ্দ বাড়লেও কতটা কেরোসিন ব্যবহার করা যাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। কেননা কেন্দ্র যেভাবে দফায় দফায় কেরোসিনের দাম বাড়ানো হচ্ছে তাতে অনেক গরীব মানুষই রেশন থেকে কেরোসিন কিনতে পাচ্ছেন না। কয়েক মাস আগে এক লিটার কেরোসিনের দাম ১০০টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এখন অবশ্য দাম কিছুটা কমেছে। তা হলেও দাম ৭০ টাকার আশপাশেই থাকছে। এই বিপুল দাম দিয়ে বাংলার ঠিক কতজন রেশন গ্রাহক কেরোসিন কিনতে পারবেন তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। তবে বাংলার এই দাবি মেনে নেওয়া বা এ রাজ্যের কেরোসিনের পুরাতন বরাদ্দ ফিরে আসার নেপথ্যে যে মানুষটির নাম না করলেই নয়, তিনি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর দেওয়া রায়ের জেরেই বাংলায় ফিরছে কেরোসিনের পুরাতন বরাদ্দ।

মোদি সরকার সব রাজ্যের কেরোসিন বরাদ্দ ২০১৬ সাল থেকেই কমাতে শুরু করে দিয়েছিল। কিন্তু বাংলার ক্ষেত্রে সেই কাজ তাঁরা করতে পারেনি। নেপথ্য ছিল কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হওয়া একটি মামলা। বাংলার কেরোসিন হোলসেলারদের সংগঠন ওই মামলা করেছিল। সেই মামলার জন্যই কেন্দ্র সরকার প্রতি ত্রৈমাসিকে বাংলাকে ১ লক্ষ ৭৬ হাজার কিলোলিটার কেরোসিন পাঠাতে বাধ্য ছিল। কিন্তু গত বছরের জুলাই মাসে সেই মামলা প্রত্যাহার করে নিতে আবেদন জানান ওই সংগঠনের শীর্ষ নেতা। কলকাতা হাইকোর্ট তা মঞ্জুরও করে। আর তারপরে পরেই দেখা যায় গতবছর সেপ্টেম্বর মাসে রাজ্যের ত্রৈমাসিক কেরোসিনের বরাদ্দ এক ঝটকায় কমিয়ে ৮৮ হাজার ৩২২ কিলোলিটার করে দেয় কেন্দ্র। জানুয়ারি মাসে বরাদ্দ আরও কমিয়ে মাত্র ২২ হাজার ৩৫৬ কিলোলিটার করা হয়েছিল। কার্যত বাংলার মানুষকে কেরোসিন থেকে সম্পূর্ণ ভাবে বঞ্চিত করতেই মোদি সরকার এই পদক্ষেপ করেছিল বলেই অনেকের মনে হয়।

এই অবস্থায় বাংলার কেরোসিন হোলসেলারদের সংগঠনের অন্য কয়েকজন পদাধিকারী মামলা প্রত্যাহারের বিরোধিতা করে কলকাতা হাইকোর্টে ফের আবেদন করেন। সেই মামলার শুনানি শেষে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মামলা প্রত্যাহার সংক্রান্ত নির্দেশটি ‘অকার্যকর’ করার রায় দেন। ফলে পশ্চিমবঙ্গে কেরোসিন বরাদ্দ কমানো যাবে না বলে যে স্থগিতাদেশ ছিল, সেটাই পুনরায় কার্যকরী হয়। তার আগেই অবশ্য রাজ্য সরকারের তরফে কেন্দ্রকে চিঠি লিখে বরাদ্দ না কমানোর আবেদন করা হয়েছিল। কেন্দ্র তা শোনেনি। কিন্তু এখন কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পর কেরোসিনের বরাদ্দ বাড়াতে বাধ্য হল কেন্দ্র।