১৪ অক্টোবর ২০২৫, মঙ্গলবার, ২৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অসমে চলমান উচ্ছেদ ও ধ্বংসযজ্ঞ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে, দাবী জামাআতের কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি মালিক মোতাসিম খানের

মোক্তার হোসেন মন্ডল
  • আপডেট : ১৭ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার
  • / 167

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: জামাআতে ইসলামী হিন্দ-এর সহ সভাপতি মালিক মোতাসিম খান অসমে ধর্মীয় বিদ্বেষপ্রসূত বুলডোজার অভিযানকে তীব্র নিন্দা জানিয়ে পুনর্বাসন, ন্যায়বিচার ও সংবিধানসম্মত শাসনের দাবি জানিয়েছেন।

জামাআতে ইসলামী হিন্দ-এর সহসভাপতি মালিক মোতাসিম খান অসমে ব্যাপক উচ্ছেদ ও ঘরবাড়ি ধ্বংসের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও নিরপেক্ষভাবে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। এই অভিযান হাজার হাজার বাঙালি বংশোদ্ভূত মুসলিম পরিবারকে গৃহহীন করেছে এবং গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও সামাজিক স্থাপনা ধ্বংস করেছে। গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “জুন-জুলাই ২০২৫-এর মধ্যে শুধুমাত্র গোলপাড়া জেলাতেই প্রায় ৪০০০টি ঘরবাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে বলে স্থানীয় পর্যায়ের সমীক্ষায় উঠে এসেছে। এর আগেও পঞ্চরত্ন, কুর্শাপাখরি, বান্দরমাঠা এবং অংঠিহারা-গৌরনগর এলাকায় এই ধরনের অভিযান হয়েছে। গোলপাড়া, ধুবড়ি ও নলবাড়ি জেলার মিলিত হিসাব অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০০০-এর বেশি পরিবার এই অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধর্মীয় স্থাপনাও রেহাই পায়নি—কমপক্ষে ২০টি মসজিদ, ৪০টি মক্তব/মাদ্রাসা এবং একাধিক ঈদগাহ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। নদীভাঙন ও প্রশাসনিক অবহেলায় বারবার বাস্তুচ্যুত হওয়া এই জনগোষ্ঠীর উপর এই অভিযান আরও গভীর মানসিক ক্ষতের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।”

তিনি আরও বলেন, “এই অভিযান মানবতা, সংবিধান ও ন্যায়বিচারের সব নীতিকে লঙ্ঘন করেছে। যারা ৭০–৮০ বছর ধরে সেখানে বসবাস করছে এবং বৈধ ভোটার কার্ড, আধার কার্ডসহ নানা নথিপত্র রয়েছে, তাদের কোনো নোটিশ ছাড়াই উচ্ছেদ করা হয়েছে। মুসলিম-অধ্যুষিত বসতিগুলোকে লক্ষ্য করে এই অভিযান চালানো হয়েছে, অথচ অন্য সম্প্রদায়ের একই ধরনের বসতিগুলো অক্ষত রয়েছে—এটি একটি গভীরভাবে পক্ষপাতদুষ্ট ধর্মীয় মনোভাবের ইঙ্গিত দেয়, যা একটি সাংবিধানিক গণতন্ত্রে একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। বহু বাসিন্দাকে এমনকি সরকার থেকে পাওয়া পট্টা জমি থেকেও উচ্ছেদ করা হয়েছে, যা বড় ধরনের প্রক্রিয়াগত অনিয়মের প্রমাণ। কৃষিকাজে নিযুক্ত ভূমিহীন স্থানীয়দের পুনর্বাসন না করে সেই জমি বেসরকারি বা শিল্প উদ্যোক্তাদের দেওয়া হচ্ছে—এটি জনআস্থার উপর আঘাত।”

আরও পড়ুন: উরিয়াম ঘাটে উচ্ছেদে সাময়িক স্থগিতাদের গৌহাটি হাইকোর্টের

মালিক মোতাসিম আরো বলেন, “আমরা অসমের নিপীড়িত মানুষের পাশে আছি এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, সংখ্যালঘু কমিশন ও সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটিগুলিকে অনুরোধ জানাচ্ছি যেন তারা অবিলম্বে ঘটনাস্থলে তদন্তে যান এবং দায়িত্ব নির্ধারণ করেন। যখন বুলডোজারই শাসনের মুখ হয়ে ওঠে, তখন গণতন্ত্র ও সংবিধান মার খায়। রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো পুনর্বাসন, ন্যায়বিচার এবং মানবিক শাসন—দুর্বল জনগোষ্ঠীর উপর সামষ্টিক শাস্তি নয়।”

আরও পড়ুন: অসমেও ৪০ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ দেবে, আশঙ্কা সুস্মিতা দেবের

আরও পড়ুন: উচ্ছেদ: আদালত অবমাননা নিয়ে অসমকে নোটিশ শীর্ষ কোর্টের

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

অসমে চলমান উচ্ছেদ ও ধ্বংসযজ্ঞ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে, দাবী জামাআতের কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি মালিক মোতাসিম খানের

আপডেট : ১৭ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: জামাআতে ইসলামী হিন্দ-এর সহ সভাপতি মালিক মোতাসিম খান অসমে ধর্মীয় বিদ্বেষপ্রসূত বুলডোজার অভিযানকে তীব্র নিন্দা জানিয়ে পুনর্বাসন, ন্যায়বিচার ও সংবিধানসম্মত শাসনের দাবি জানিয়েছেন।

জামাআতে ইসলামী হিন্দ-এর সহসভাপতি মালিক মোতাসিম খান অসমে ব্যাপক উচ্ছেদ ও ঘরবাড়ি ধ্বংসের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও নিরপেক্ষভাবে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। এই অভিযান হাজার হাজার বাঙালি বংশোদ্ভূত মুসলিম পরিবারকে গৃহহীন করেছে এবং গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও সামাজিক স্থাপনা ধ্বংস করেছে। গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “জুন-জুলাই ২০২৫-এর মধ্যে শুধুমাত্র গোলপাড়া জেলাতেই প্রায় ৪০০০টি ঘরবাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে বলে স্থানীয় পর্যায়ের সমীক্ষায় উঠে এসেছে। এর আগেও পঞ্চরত্ন, কুর্শাপাখরি, বান্দরমাঠা এবং অংঠিহারা-গৌরনগর এলাকায় এই ধরনের অভিযান হয়েছে। গোলপাড়া, ধুবড়ি ও নলবাড়ি জেলার মিলিত হিসাব অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০০০-এর বেশি পরিবার এই অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধর্মীয় স্থাপনাও রেহাই পায়নি—কমপক্ষে ২০টি মসজিদ, ৪০টি মক্তব/মাদ্রাসা এবং একাধিক ঈদগাহ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। নদীভাঙন ও প্রশাসনিক অবহেলায় বারবার বাস্তুচ্যুত হওয়া এই জনগোষ্ঠীর উপর এই অভিযান আরও গভীর মানসিক ক্ষতের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।”

তিনি আরও বলেন, “এই অভিযান মানবতা, সংবিধান ও ন্যায়বিচারের সব নীতিকে লঙ্ঘন করেছে। যারা ৭০–৮০ বছর ধরে সেখানে বসবাস করছে এবং বৈধ ভোটার কার্ড, আধার কার্ডসহ নানা নথিপত্র রয়েছে, তাদের কোনো নোটিশ ছাড়াই উচ্ছেদ করা হয়েছে। মুসলিম-অধ্যুষিত বসতিগুলোকে লক্ষ্য করে এই অভিযান চালানো হয়েছে, অথচ অন্য সম্প্রদায়ের একই ধরনের বসতিগুলো অক্ষত রয়েছে—এটি একটি গভীরভাবে পক্ষপাতদুষ্ট ধর্মীয় মনোভাবের ইঙ্গিত দেয়, যা একটি সাংবিধানিক গণতন্ত্রে একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। বহু বাসিন্দাকে এমনকি সরকার থেকে পাওয়া পট্টা জমি থেকেও উচ্ছেদ করা হয়েছে, যা বড় ধরনের প্রক্রিয়াগত অনিয়মের প্রমাণ। কৃষিকাজে নিযুক্ত ভূমিহীন স্থানীয়দের পুনর্বাসন না করে সেই জমি বেসরকারি বা শিল্প উদ্যোক্তাদের দেওয়া হচ্ছে—এটি জনআস্থার উপর আঘাত।”

আরও পড়ুন: উরিয়াম ঘাটে উচ্ছেদে সাময়িক স্থগিতাদের গৌহাটি হাইকোর্টের

মালিক মোতাসিম আরো বলেন, “আমরা অসমের নিপীড়িত মানুষের পাশে আছি এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, সংখ্যালঘু কমিশন ও সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটিগুলিকে অনুরোধ জানাচ্ছি যেন তারা অবিলম্বে ঘটনাস্থলে তদন্তে যান এবং দায়িত্ব নির্ধারণ করেন। যখন বুলডোজারই শাসনের মুখ হয়ে ওঠে, তখন গণতন্ত্র ও সংবিধান মার খায়। রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো পুনর্বাসন, ন্যায়বিচার এবং মানবিক শাসন—দুর্বল জনগোষ্ঠীর উপর সামষ্টিক শাস্তি নয়।”

আরও পড়ুন: অসমেও ৪০ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ দেবে, আশঙ্কা সুস্মিতা দেবের

আরও পড়ুন: উচ্ছেদ: আদালত অবমাননা নিয়ে অসমকে নোটিশ শীর্ষ কোর্টের