পথবাতি প্রকল্পে সুন্দরবনের রাস্তা সেজে উঠল আলোর সাজে

- আপডেট : ৩০ জুলাই ২০২৫, বুধবার
- / 33
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : অবশেষে আলোর পথ দেখল দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এক গ্রাম। বহু প্রতিক্ষীত সময়ের পর কার্যকরী হল এই পথবাতি প্রকল্প। আগে রাস্তাঘাট ছিল খানাখন্দে ভরা, দুর্গম এই এলাকায় গ্রামের রাস্তাঘাট ছিল একদম কাঁচা রাস্তা, বছরের পর বছর কাদা, জল আর ভাঙ্গা পথে নিত্যযাত্রার দুর্ভোগ ছিল নিত্যসঙ্গী। কিন্তু এবার সেই ছবি বদলাচ্ছে।
কার্যত এর আগে সন্ধ্যা নামার সাথে সাথেই শুনশান হয়ে যেত রাস্তাঘাট। অন্ধকারের জন্য সন্ধ্যার পরে খুব একটা বাইরে কেউ বের হত না। এখন অবশ্য সুন্দরবনের এই গ্রামে এসেছে আলো। রাস্তাঘাট পেয়েছে পথবাতি। গ্রামের পুরো রাস্তা আলোয় মুড়ে গিয়েছে। আর এই আনন্দে স্থানীয় মানুষজন অনেক রাত পর্যন্ত রাস্তায় ভিড় করে দাঁড়িয়েছিল।
সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান আগে সন্ধ্যার পর তাদের খুব সমস্যা হত। বাড়ির মা-বোনেরা তো রাতে বাড়ির বাইরে পা দেওয়ার কথা ভাবতেই পারতো না। এমনকি বাড়ির মেয়েদের দূরে কোথাও টিউশন পড়ার জন্য ছাড়তেও ভয় পেতেন বাবা-মায়েরা। আর তাই দ্রুত সহযোগিতার সাথে প্রতিটি রাস্তায় বসানো হয়েছে পথবাতি। পুরো বদলে গিয়েছে গ্রামটি। আগের কুলতলির সাথে এখনকার কুলতলির কোন মিলই নেই।
গ্রামের মহিলারা এখন অনেকটাই নিশ্চিন্ত, নিজেদের মেয়েদেরকে নিয়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, আগে কলকাতায় গিয়ে লাইট দেখতাম, সুন্দরবনের রাস্তায় রাতে কখনও আলো জ্বলবে এমনটা ভাবতেই পারিনি। এটা যেন স্বপ্ন মনে হচ্ছে। আমাদের নিরাপত্তাও বাড়ল অনেকটা।
মহিলাদের পাশাপাশি গ্রামের পুরুষরাও খুবই নিশ্চিন্ত। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায় যে, এর আগে আলোর অভাবে রাস্তাঘাটে চলাচলে অসুবিধা হত। কোনকিছুই দেখা যেত না ঠিক করে। এছাড়াও সন্ধ্যা নামলেই চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ভয় ছিল। কিন্তু এইবার সেই ভয় কমল। আমরা এবার নিশ্চিন্তে বাইরে বেরোতে পারব।
প্রশাসনের এই উদ্যোগে পুরো এলাকায় এখন খুশির মহল। কারণ তাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত আকাঙ্ক্ষা আজ পূর্ণ হয়েছে। কুলতলির বিধায়ক গণেশচন্দ্র মণ্ডল এই প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছেন যে, ২০১১ সালে যখন মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেছেন তারপর থেকেই ওনার নেতৃত্বে গোটা রাজ্য জুড়ে উন্নয়নের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। তারই এক প্রতিফলন আজ এখানে দেখা গেল। তিনি আরও জানান যে, আগামী দিনে আরও কাজ হবে, এবং সুন্দরবনের মত পিছিয়ে থাকা বিস্তীর্ণ এলাকায় উন্নয়ন করে এক দৃষ্টান্ত গড়ে তোলা হবে।