ব্যবহার করে ফেলে দেওয়ার সংস্কৃতি প্রভাব ফেলেছে বৈবাহিক সম্পর্কে

- আপডেট : ১ সেপ্টেম্বর ২০২২, বৃহস্পতিবার
- / 18
পুবের কলম, ওয়েব ডেস্ক: একটি বিবাহ বিচ্ছেদের মামলার শুনানি করতে গিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছে কেরল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি এ মুহাম্মদ মুস্তাক এবং সোফি থমাস এর বেঞ্চ বিয়ে সম্পর্কে নতুন প্রজন্মের দৃষ্টিভঙ্গিকে কড়া ভাষায় অক্রমণ করেছে। বিচারপতিদের মতে, নতুন প্রজন্মের মনে বিবাহ সম্পর্কে নেতিবাচক ভাবনা রয়েছে। বিয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত দায়িত্ব এড়াতে তারা লিভ ইন সম্পর্ক বেছে নিচ্ছে। ‘ইউজ এন্ড থ্রো’ সংস্কৃতির প্রভাব পড়েছে বিবাহিত জীবনে। বিচারপতি মন্তব্য করেছেন, আগে ‘ওয়াইফ’ শধটিকে ‘ওয়াইজ ইনভেস্টমেন্ট ফর এভার’ অর্থাৎ চিরকালের জন্য বিনিয়োগ হিসেবে ব্যাখ্যা করা হত। অথচ নতুন প্রজন্ম ওয়াইফ শব্দটিকে ‘ওয়ারি ইনভাইটেড ফর এভার’ বা চিরকালের জন্য দুশ্চিন্তাকে আমন্ত্রণ জানানো হিসেবে ব্যাখ্যা করছে।
আলেপ্পুজার ৩৪ বছরের এক ব্যক্তি বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য আবেদন করেছিলেন। পারিবারিক আদালতে সেই মামলা খারিজ হয়ে গেলে তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। হাইকোর্টও এদিন তাঁর আবেদন খারিজ করে এই গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছে। ওই ব্যক্তির অভিযোগ ছিল, তাঁর স্ত্রীর আচরণগত সমস্যা রয়েছে। স্বামীর অন্য কোনো নারীর সঙ্গে সম্পর্ক আছে এই সন্দেহে সে ঝগড়া করত। এই অভিযোগ শোনার পর আদালত জানিয়েছে, সন্দেহের কারণ থাকলে যদি কেউ দুঃখ প্রকাশ করে বা ঝগড়া করে, তবে তা কখনই আচরণগত সমস্যা নয়। সেটা স্বাভাবিক মানবীয় আচরণ। ওই ব্যক্তির পরিবারসূত্রে জানা গেছে, তাঁর স্ত্রী ভালো মনের মানুষ। স্বামী এবং পরিবারের প্রতি যথেষ্ট যত্নশীল।
বিচারকরা বলেছেন, কেরল ‘ঈশ্বরের আপন দেশ’ হিসেবে পরিচিত। পারিবারিক বন্ধনের জন্য একসময় বিখ্যাত ছিল কেরল। কিন্তু বর্তমানে সংকীর্ণ স্বার্থপরতা, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে সন্তানদের ভবিষ্যত নষ্ট করে বিয়ে ভেঙে ফেলার প্রবণতা বাড়ছে। এই ধরণের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা সমাজের উপর খারাপ প্রভাব ফেলছে বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি।
আদালত জানিয়েছে, বিবাহ সমাজের ভিত্তি। আর সেই বিবাহ থেকে প্রাপ্ত পরিবার সমাজের মৌলিক একক। বিবাহ কোনোভাবেই যৌনাচারকে স্বীকৃতি দেওয়ার অন্তঃসারশূন্য অনুষ্ঠান নয়।