তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাবনা এখনই নেই

- আপডেট : ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২, শুক্রবার
- / 30
পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : বিশেষ প্রতিবেদন যুদ্ধ শুরু করেছে রাশিয়া। আকাশ স্থল ও জলপথে দ্বিতীয় দিনের মতো হামলা চলছে ইউক্রেনে। দু’দিনেই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ও হতাহতের সংখ্যা কম নয়। কিন্তু এখন যে প্রশ্নটা বার বার উঠছে তা হল ইউক্রেন সংকট কি শেষ পর্যন্ত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের রুপ নেবে? পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে কয়েক মাসের উজেনার পর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ইউক্রেনে অভিযান শুরু করে রাশিয়া। হামলার জবাবে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো এখনও কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। শুধু ইউক্রেনের সেনারাই আক্রমণ প্রতিহত করতে ময়দানে নেমেছে।
প্রশ্ন উঠছে ইউক্রেনকে রক্ষায় পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোও কি যুদ্ধে নামবে? নাকি রাশিয়ার শুরি সামনে প্রথম দু’দিনেই হার স্বীকার করে নিল পশ্চিমা বিশ্ব? মার্কিন প্রেসিডেন্ট তো সেনা পাঠানোর সম্ভাবনা নেই বলেই জানিয়েছেন। রাশিয়ার আক্রমণে দেশটিতে বসবাসকারী মার্কিন নাগরিকদের উদ্ধারের জন্যও সেনা পাঠানো হবে না। তাহলে পশ্চিমারা কী করবে? আপাতত নিষেধাজ্ঞা দিয়েই রাশিয়াকে থামানোর ব্যর্থ চেষ্টা! বিশ্লেষকরা বলছেন রাশিয়াকে থামানোর মতো রসদ বা ক্ষমতা হয়তো ন্যাটোরও নেই। আর যদিও বা তা থাকে তাহলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামার অর্থ হবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরু! বাইডেন বলেছেন ‘আমরা সেনা পাঠালে সেটা বিশ্বযুদ্ধ হয়ে যাবে।
যদি আমেরিকান এবং রাশিয়ানরা একে অপরকে গুলি ছুড়তে শুরু করে তবে আমরা এক ভিন্ন পৃথিবী দেখব।’ রাশিয়া ইউক্রেনের ঠিক কতটা গভীর পর্যন্ত সেনা পাঠাবে তা শুধু পুতিন এবং তার ঘনিষ্ঠরাই জানেন। এখন রাজধানী কিয়েভ দখলের চেষ্টা করতে পারে রাশিয়া। কারণ কিয়েভের আশপাশে বিমান হামলার খবর পাওয়া যাচ্ছে। রাজধানীর অর্ধেক প্রায় খালি। মানুষ এদিক ওদিক ছুটছে। তাই ইউক্রেনে রাশিয়ার কব্জা করাটা সময়ের অপেক্ষা বলা যায়। অবশ্য পুতিনের ইচ্ছার ওপরই তা নির্ভর করছে।
আপাতত ইউক্রেন ন্যাটো দেশ নয়। তাই ইউরোপ রাশিয়ার হামলা থেকে সুরক্ষিত বলা চলে। ন্যাটোর সংবিধানের আর্টিকেল ৫-এ বলা হয়েছে তাদের কোনও সদস্য রাষ্ট্র আক্রমণের শিকার হলে তার প্রতিরক্ষায় সমগ্র পশ্চিমা জোট এগিয়ে আসতে বাধ্য থাকবে। কারণ এক সদস্যের ওপর হামলা মানে সবার ওপর হামলা। পুতিনও ইউক্রেনকে ন্যাটো নিয়ে সতর্ক করেছেন। প্রতিবেশী সীমান্তে ন্যাটো সেনার উপস্থিতির বিরুদ্ধে তিনি। মূলত ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদান ঠেকাতেই তিনি এ হামলার নির্দেশ দিয়েছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সোভিয়েত আমলে মস্কোর ক্ষমতাবলয়ে থাকা এস্তোনিয়া লাটভিয়া লিথুয়ানিয়া বা পোল্যান্ডের মতো পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলো এখন সবাই ন্যাটোর সদস্য। তারাও উদ্বিগ্ন যে রুশ বাহিনী হয়তো শুধু ইউক্রেনেই থেমে যাবে না বরং তাদের মতো বাল্টিক অঞ্চলের অন্যান্য দেশের জাতিগত রাশিয়ান সংখ্যালঘুদের ‘সহায়তা করতে’ এবং তাদের দেশে আক্রমণ করার জন্য কিছু অজুহাত খাড়া করতে পারে।
রাশিয়া এবং আমেরিকার কাছে বিপুল পরিমাণ পারমাণবিক বোমা রয়েছে। যেসব বোমা দিয়ে পুরো পৃথিবীকে কয়েকবার ধ্বংস করা যাবে। ফলে তারা এত সহজেই যুদ্ধে জড়াতে চাইবে না। ৩য় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে বিশ্লেষকরা বলছেন যতক্ষণ না রাশিয়া এবং ন্যাটোর মধ্যে সরাসরি সংঘর্ষ হচ্ছে ততক্ষণ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়া নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই।