১০ মে ২০২৫, শনিবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাম মন্দির নিয়ে ভাবাবেগকে ক্ষীণ করে মেরুকরণের রাজনীতি করা হচ্ছে, মন্তব্য ফিরহাদের

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ১৯ জানুয়ারী ২০২৪, শুক্রবার
  • / 18

পুবের কলম প্রতিবেদক: ২২ জানুয়ারি রাম মন্দির উদ্বোধন করা হবে। তবে তার আগে, গোটা দেশের একটা বড় অংশের সংবাদমাধ্যমের কাছে রাম মন্দিরই মূখ্য খবর হয়ে উঠেছে। উদ্বোধনের অনেক আগে থেকেই সারাদিন ধরে দেখানো হচ্ছে রাম মন্দির সংক্রান্ত বিবিধ খবর। এতেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। শুক্রবার পুরনিগমের মাসিক অধিবেশন শেষ হওয়ার পর এক সাংবাদিক সম্মেলনে মন উজাড় করে জানান নিজের ক্ষোভের কথা। এমনকি, কথা বলতে বলতে কণ্ঠরোধ হয়ে আসে তাঁর। চোখে কোণে ধরা পড়ে জলের রেখা। সিক্ত হয়ে আসে কন্ঠস্বর।

 

আরও পড়ুন: পহেলগাঁও জঙ্গি হামলায় নিহত সমীর ও বিতানের বাড়িতে ফিরহাদ ও অরূপ, দেওয়া হল আর্থিক সাহায্য

মেয়র বলেন, আমি একজন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছেলে। বাবরি মসজিদ ভাঙ্গা এটা আমাদের কাছে কষ্টের ব্যাপার ছিল। আমাদের কাছে নয়, সারা ভারতে যত ধর্ম নিরপেক্ষ মানুষ আছেন, তাঁদের সবার কাছে কষ্টের ছিল। তাও, সবাই মিলে মেনে নিয়েছিলাম কারণ সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল। সবাই মুখ বুজে মেনে নিয়েছিল। কেউ কোনও প্রতিবাদ করিনি। রাম মন্দির হতেও কোনও আপত্তি নেই কিন্তু সেটাকে নিয়ে একটা সূক্ষ চাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। অর্থাৎ সারাদিন ধরে রাম মন্দির দেখানো হচ্ছে। আমাদের কোনও আপত্তি নেই। হোক রাম মন্দির। আমরা কোনও প্রশ্ন করছি না কিন্তু, কোথাও একটা বার বার করে দেখানো হচ্ছে যে, বাবরি মসজিদে তুমি হেরে গেছো আজকে রাম মন্দির হচ্ছে।

আরও পড়ুন: কলকাতার সমস্ত রুফটপ রেস্তোরাঁ বন্ধের নির্দেশ পুরনিগমের

 

আরও পড়ুন: Pahalgam Terror Attack: ভূ-স্বর্গে প্রাণ হারানো সমীর গুহ-র বাড়িতে এল কফিন সঙ্গে শোকস্তব্ধ স্ত্রী ও কন্যা

তিনি আরও বলেন, রাম মন্দির যারা রাম ভক্ত তাঁরা করুন কিন্তু, বাংলার থেকে ক’জন জানে? বাংলায় তো আমাদের রীতিনীতি হচ্ছে আমরা দূর্গাপূজা করি, আমরা কালিপূজা করি। এখন পাশে জগন্নাথ পূজাও করি। রাম পূজা তো আমরা কখনও করি না। ঠিক আছে, এখানে অনেক অবাঙ্গালী মানুষ আছেন তাঁরা রাম পূজা করছেন। ৫০০ বছরের আন্দোলন করছেন। আমাদের কোনও আপত্তি নেই কিন্তু যেভাবে বুকের মধ্যে তীর মারা হচ্ছে তা মেনে নেওয়া যায় না। যেখানে চারজনের মধ্যে তিনজন শঙ্করাচার্য বিরোধিতা করেছেন, যেখানে হিন্দু মহাসভা যাচ্ছে না, সেখানে বিজেপি এখানে একটা মেরুকরণের পরিবেশ তৈরি করছে।

 

তিনি আরও বলেন, আমি তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে মার খেয়েছি। সেটা আমার কাছে গর্ব। আমাকে যদি চোর, ডাকাত, খুনি বলে মারা হয় আমার খুব দুঃখ হবে কিন্তু, আমাকে যদি কোনওদিন কেউ মুসলমান বলে চড় মারে আমার যে বিশ্বাস, আমার যে ভারতের অধিকার, আমার যে ভারতের প্রতি আবেগ সেটা চুরমার হয়ে ভেঙ্গে যাবে। (অশ্রুসিক্ত কন্ঠে বলেন) আমি ভারতীয়। এই দেশ আমার। এই দেশে ধর্মের অধিকার সবার আছে। কাউকে শুধু ছোট করে ভাবাবেগকে ক্ষীণ করে রাজনৈতিক কারণে ব্যবহার করা ঠিক নয়। পুরোটাই মেরুকরণের রাজনীতি চলছে। সবটাই হচ্ছে নাটক। সবটাই হচ্ছে বিজেপির সার্কাস। আর এস এস এবং মুসলিম লীগ ভারতবর্ষকে ভেঙে দিয়েছিল। তাঁর মতে, আমরা রাজনীতিবিদ। আমি রামের ভরসায় আর আল্লাহর ভরসায় রাজনীতি করব কেন?

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

রাম মন্দির নিয়ে ভাবাবেগকে ক্ষীণ করে মেরুকরণের রাজনীতি করা হচ্ছে, মন্তব্য ফিরহাদের

আপডেট : ১৯ জানুয়ারী ২০২৪, শুক্রবার

পুবের কলম প্রতিবেদক: ২২ জানুয়ারি রাম মন্দির উদ্বোধন করা হবে। তবে তার আগে, গোটা দেশের একটা বড় অংশের সংবাদমাধ্যমের কাছে রাম মন্দিরই মূখ্য খবর হয়ে উঠেছে। উদ্বোধনের অনেক আগে থেকেই সারাদিন ধরে দেখানো হচ্ছে রাম মন্দির সংক্রান্ত বিবিধ খবর। এতেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। শুক্রবার পুরনিগমের মাসিক অধিবেশন শেষ হওয়ার পর এক সাংবাদিক সম্মেলনে মন উজাড় করে জানান নিজের ক্ষোভের কথা। এমনকি, কথা বলতে বলতে কণ্ঠরোধ হয়ে আসে তাঁর। চোখে কোণে ধরা পড়ে জলের রেখা। সিক্ত হয়ে আসে কন্ঠস্বর।

 

আরও পড়ুন: পহেলগাঁও জঙ্গি হামলায় নিহত সমীর ও বিতানের বাড়িতে ফিরহাদ ও অরূপ, দেওয়া হল আর্থিক সাহায্য

মেয়র বলেন, আমি একজন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছেলে। বাবরি মসজিদ ভাঙ্গা এটা আমাদের কাছে কষ্টের ব্যাপার ছিল। আমাদের কাছে নয়, সারা ভারতে যত ধর্ম নিরপেক্ষ মানুষ আছেন, তাঁদের সবার কাছে কষ্টের ছিল। তাও, সবাই মিলে মেনে নিয়েছিলাম কারণ সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল। সবাই মুখ বুজে মেনে নিয়েছিল। কেউ কোনও প্রতিবাদ করিনি। রাম মন্দির হতেও কোনও আপত্তি নেই কিন্তু সেটাকে নিয়ে একটা সূক্ষ চাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। অর্থাৎ সারাদিন ধরে রাম মন্দির দেখানো হচ্ছে। আমাদের কোনও আপত্তি নেই। হোক রাম মন্দির। আমরা কোনও প্রশ্ন করছি না কিন্তু, কোথাও একটা বার বার করে দেখানো হচ্ছে যে, বাবরি মসজিদে তুমি হেরে গেছো আজকে রাম মন্দির হচ্ছে।

আরও পড়ুন: কলকাতার সমস্ত রুফটপ রেস্তোরাঁ বন্ধের নির্দেশ পুরনিগমের

 

আরও পড়ুন: Pahalgam Terror Attack: ভূ-স্বর্গে প্রাণ হারানো সমীর গুহ-র বাড়িতে এল কফিন সঙ্গে শোকস্তব্ধ স্ত্রী ও কন্যা

তিনি আরও বলেন, রাম মন্দির যারা রাম ভক্ত তাঁরা করুন কিন্তু, বাংলার থেকে ক’জন জানে? বাংলায় তো আমাদের রীতিনীতি হচ্ছে আমরা দূর্গাপূজা করি, আমরা কালিপূজা করি। এখন পাশে জগন্নাথ পূজাও করি। রাম পূজা তো আমরা কখনও করি না। ঠিক আছে, এখানে অনেক অবাঙ্গালী মানুষ আছেন তাঁরা রাম পূজা করছেন। ৫০০ বছরের আন্দোলন করছেন। আমাদের কোনও আপত্তি নেই কিন্তু যেভাবে বুকের মধ্যে তীর মারা হচ্ছে তা মেনে নেওয়া যায় না। যেখানে চারজনের মধ্যে তিনজন শঙ্করাচার্য বিরোধিতা করেছেন, যেখানে হিন্দু মহাসভা যাচ্ছে না, সেখানে বিজেপি এখানে একটা মেরুকরণের পরিবেশ তৈরি করছে।

 

তিনি আরও বলেন, আমি তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে মার খেয়েছি। সেটা আমার কাছে গর্ব। আমাকে যদি চোর, ডাকাত, খুনি বলে মারা হয় আমার খুব দুঃখ হবে কিন্তু, আমাকে যদি কোনওদিন কেউ মুসলমান বলে চড় মারে আমার যে বিশ্বাস, আমার যে ভারতের অধিকার, আমার যে ভারতের প্রতি আবেগ সেটা চুরমার হয়ে ভেঙ্গে যাবে। (অশ্রুসিক্ত কন্ঠে বলেন) আমি ভারতীয়। এই দেশ আমার। এই দেশে ধর্মের অধিকার সবার আছে। কাউকে শুধু ছোট করে ভাবাবেগকে ক্ষীণ করে রাজনৈতিক কারণে ব্যবহার করা ঠিক নয়। পুরোটাই মেরুকরণের রাজনীতি চলছে। সবটাই হচ্ছে নাটক। সবটাই হচ্ছে বিজেপির সার্কাস। আর এস এস এবং মুসলিম লীগ ভারতবর্ষকে ভেঙে দিয়েছিল। তাঁর মতে, আমরা রাজনীতিবিদ। আমি রামের ভরসায় আর আল্লাহর ভরসায় রাজনীতি করব কেন?