১৯ অক্টোবর ২০২৫, রবিবার, ১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভাঙড়ে তৃণমূল নেতা রাজ্জাক খাঁ খুনে নতুন মোড়, গ্রেপ্তার আরও তিন জন

আফিয়া‌‌ নৌশিন
  • আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২৫, সোমবার
  • / 157

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ভাঙড়ে তৃণমূল নেতা রাজ্জাক খাঁ-র খুনের ঘটনায় ফের বড়সড় সাফল্য পুলিশের হাতে। এবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরও তিন জনকে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন তৃণমূল নেতা ও পানাপুকুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য আজহারউদ্দিন মোল্লা, জাহান আলি খান ও রাজু মোল্লা। উত্তর কাশীপুর থানার পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেছে। এই নিয়ে রাজ্জাক খাঁ খুনে মোট চার জনকে গ্রেপ্তার করা হলো, যার মধ্যে দু’জন শাসকদলের নেতা-কর্মী বলে জানা গিয়েছে।


ধৃত আজহারউদ্দিন মোল্লা একসময় আইএসএফ করলেও, ২০২৩ সালের জুলাই মাসে শওকত মোল্লার হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেন। তার পরেই এই ধরনের ঘটনায় নাম জড়ানোয় অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। প্রথমে ধৃত মোফাজ্জল মোল্লার বয়ান এবং ফোনের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করেই আজহারউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয় পোলেরহাটা থানা এলাকা থেকে।

তদন্তে উঠে এসেছে, এলাকার দখল নিয়ে রাজনৈতিক বিবাদের জেরেই রাজ্জাক খাঁ-কে খুন করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ভাড়াটে খুনির মাধ্যমে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়। ধৃত রাজু মোল্লা পেশায় একজন ভাড়াটে খুনি এবং জাহান আলি খান পরিচিত একজন টিপার। পুলিশ সূত্রে অনুমান, মূল অভিযুক্তদের সঙ্গে এদের যোগাযোগ ছিল এবং তারা সক্রিয় ভাবে খুনের ছক বাস্তবায়নে অংশ নেয়।

আরও পড়ুন: ভাঙড়ে, খেলা হবে দিবসে শিক্ষককে মারধর


গত বৃহস্পতিবার রাতে বিজয়গঞ্জ বাজারের কাছে দলীয় কর্মসূচি সেরে বাড়ি ফেরার সময় রাজ্জাক খাঁ-র উপর হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁকে পাঁচ রাউন্ড গুলি করা হয় এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। পরদিন থেকেই উত্তর কাশীপুর থানার পুলিশ তদন্তে নামে।

আরও পড়ুন: ভিন রাজ্যে বাঙালিদের উপর হামলার প্রতিবাদে ভাঙড়ে তৃণমূল মিছিল

প্রথমে মোফাজ্জল মোল্লাকে অসঙ্গতিপূর্ণ বয়ানের ভিত্তিতে আটক করে আদালতে তোলা হয়। বারুইপুর মহকুমা আদালত তাঁকে ৮ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠায়। এরপর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার আজহারউদ্দিন, রাজু এবং জাহান আলিকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবারই তাদের আদালতে পেশ করা হবে।

আরও পড়ুন: নিহত রাজ্জাক খাঁ-র পরিবারের পাশে ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লা, মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে স্ত্রী পেলেন চাকরির আশ্বাস


পুলিশের অনুমান, এই খুনে আরও কেউ যুক্ত থাকতে পারে। ইতিমধ্যেই একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ, মোবাইল কল রেকর্ড এবং সন্দেহভাজনদের গতিবিধি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তে নতুন তথ্য উঠে আসতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি এই খুনকে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল বলে মন্তব্য করেছেন। বিপরীতে, ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক এবং তৃণমূল পর্যবেক্ষক শওকত মোল্লা দাবি করেছেন, এই ঘটনার পিছনে আইএসএফের ষড়যন্ত্র রয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে আগামী ১৬ জুলাই ভাঙড় ব্রিজ থেকে ‘ধিক্কার মিছিল’-এর ডাক দিয়েছেন নওশাদ সিদ্দিকি। রাজ্য রাজনীতিতে এই খুন নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ভাঙড়ে তৃণমূল নেতা রাজ্জাক খাঁ খুনে নতুন মোড়, গ্রেপ্তার আরও তিন জন

আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২৫, সোমবার

পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ভাঙড়ে তৃণমূল নেতা রাজ্জাক খাঁ-র খুনের ঘটনায় ফের বড়সড় সাফল্য পুলিশের হাতে। এবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরও তিন জনকে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন তৃণমূল নেতা ও পানাপুকুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য আজহারউদ্দিন মোল্লা, জাহান আলি খান ও রাজু মোল্লা। উত্তর কাশীপুর থানার পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেছে। এই নিয়ে রাজ্জাক খাঁ খুনে মোট চার জনকে গ্রেপ্তার করা হলো, যার মধ্যে দু’জন শাসকদলের নেতা-কর্মী বলে জানা গিয়েছে।


ধৃত আজহারউদ্দিন মোল্লা একসময় আইএসএফ করলেও, ২০২৩ সালের জুলাই মাসে শওকত মোল্লার হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেন। তার পরেই এই ধরনের ঘটনায় নাম জড়ানোয় অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। প্রথমে ধৃত মোফাজ্জল মোল্লার বয়ান এবং ফোনের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করেই আজহারউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয় পোলেরহাটা থানা এলাকা থেকে।

তদন্তে উঠে এসেছে, এলাকার দখল নিয়ে রাজনৈতিক বিবাদের জেরেই রাজ্জাক খাঁ-কে খুন করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ভাড়াটে খুনির মাধ্যমে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়। ধৃত রাজু মোল্লা পেশায় একজন ভাড়াটে খুনি এবং জাহান আলি খান পরিচিত একজন টিপার। পুলিশ সূত্রে অনুমান, মূল অভিযুক্তদের সঙ্গে এদের যোগাযোগ ছিল এবং তারা সক্রিয় ভাবে খুনের ছক বাস্তবায়নে অংশ নেয়।

আরও পড়ুন: ভাঙড়ে, খেলা হবে দিবসে শিক্ষককে মারধর


গত বৃহস্পতিবার রাতে বিজয়গঞ্জ বাজারের কাছে দলীয় কর্মসূচি সেরে বাড়ি ফেরার সময় রাজ্জাক খাঁ-র উপর হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁকে পাঁচ রাউন্ড গুলি করা হয় এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। পরদিন থেকেই উত্তর কাশীপুর থানার পুলিশ তদন্তে নামে।

আরও পড়ুন: ভিন রাজ্যে বাঙালিদের উপর হামলার প্রতিবাদে ভাঙড়ে তৃণমূল মিছিল

প্রথমে মোফাজ্জল মোল্লাকে অসঙ্গতিপূর্ণ বয়ানের ভিত্তিতে আটক করে আদালতে তোলা হয়। বারুইপুর মহকুমা আদালত তাঁকে ৮ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠায়। এরপর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার আজহারউদ্দিন, রাজু এবং জাহান আলিকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবারই তাদের আদালতে পেশ করা হবে।

আরও পড়ুন: নিহত রাজ্জাক খাঁ-র পরিবারের পাশে ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লা, মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে স্ত্রী পেলেন চাকরির আশ্বাস


পুলিশের অনুমান, এই খুনে আরও কেউ যুক্ত থাকতে পারে। ইতিমধ্যেই একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ, মোবাইল কল রেকর্ড এবং সন্দেহভাজনদের গতিবিধি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তে নতুন তথ্য উঠে আসতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি এই খুনকে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল বলে মন্তব্য করেছেন। বিপরীতে, ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক এবং তৃণমূল পর্যবেক্ষক শওকত মোল্লা দাবি করেছেন, এই ঘটনার পিছনে আইএসএফের ষড়যন্ত্র রয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে আগামী ১৬ জুলাই ভাঙড় ব্রিজ থেকে ‘ধিক্কার মিছিল’-এর ডাক দিয়েছেন নওশাদ সিদ্দিকি। রাজ্য রাজনীতিতে এই খুন নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে।