২২ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

একুশের মঞ্চে মমতার সঙ্গে দেখা করতে কলকাতায় উত্তম কুমার

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ২০ জুলাই ২০২৫, রবিবার
  • / 37

পুবের কলম প্রতিবেদক : কলকাতায় এলেন উত্তরকুমার ব্রজবাসী। আজন্ম পশ্চিমবঙ্গবাসী তিনি । কিন্তু তা সত্ত্বেও তার হাতে এনআরসি নোটিশ পাঠিয়েছে অসম সরকার। সাম্প্রতিক সময়ে তিনিই প্রথম  বঙ্গবাসী যাঁকে এনআরসি নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। সেই উত্তমকুমার  ব্রজবাসী একুশে জুলাই নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতা শুনতে উত্তরবঙ্গ থেকে কলকাতায় এসেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে কথা বলতে চান তিনি। উত্তরবঙ্গের জেলা নেতৃত্ব সূত্রে খবব, আজ  উত্তমকুমার ব্রজবাসীকে দেখা যাবে একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে। একুশে জুলাইযের সমাবেশে উত্তমকুমার জানাবেন হেনস্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা। অসম সরকারের কোপে জীবনের আশঙ্কার কথা। একই সঙ্গে শ্রদ্ধা জানাবেন তিনি শহিদদের।

রবিবার রাতে উত্তরবঙ্গ থেকে যে দলটি এসে কলকাতায় পৌঁছয়, সেখানে উত্তমকুমার ব্রজবাসীকে নিয়ে ছিল তুমুল উচ্ছ্বাস। কলকাতার করুণাময়ী বাসস্ট্যান্ডে যেখানে উত্তরবঙ্গ থেকে আসা সমর্থকরা ক্যাম্প করা হয়েছে, সেখানেই ছিলেন উত্তমকুমার। কীভাবে তিনি এনআরসি নোটিশ পেয়ে হায়রানির শিকার হয়েছেন, সেকথা তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে জানাতে চান। তাঁর পাড়ার সঙ্গীরাও চান মুখ্যমন্ত্রীকে কাছে থেকে দেখতে।

আরও পড়ুন: ফের নিম্নচাপের ভ্রুকুটি, কলকাতা সহ একাধিক জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের আভাস 

উল্লেখ্য, এবছর জানুয়ারি মাসে দিনহাটার চৌধুরীহাটের বাসিন্দা  উত্তমকুমারকে এনআরসি নোটিশ পাঠিয়েছিল অসমের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল। উত্তমকুমারের দাবি, তিনি কস্মিনকালেও অসমে যাননি। এমনকী তাঁর বাবার জন্মও কোচবিহারে। অথচ বিজেপি শাসিত অসম সরকারের পাঠানো নথিতে উত্তমকুমারের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের পরে কোনও বৈধ নথি ছাড়াই অসম সীমান্ত দিয়ে এদেশে ঢুকে পড়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। এই নোটিশ পাওয়ার পরে পুরো পরিবার আতঙ্কে ছিলেন। ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে তাঁকে অসমের বিশেষ আদালতে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল। এরপর উকিলকে দিয়ে সব নথি অসমে পাঠিয়েছেন উত্তমকুমার ব্রজবাসীর পরিবার। এই সময় তৃণমূলের নেতারা উত্তমকুমার ব্রজবাসীর পাশে এসে দাঁড়ায়। তৃণমূলের আহ্বানে এবং  আশ্বাসেই একুশে জুলাইয়ের সমাবেশে এসেছেন বলে জানান উত্তমকুমার ব্রজবাসী।

আরও পড়ুন: বাংলায় অনুপ্রবেশ বাড়ছে, মোদি-শাহর বক্তব্য খণ্ডন করল নীতি আয়োগের রিপোর্টই

দিঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের সময়েই মুখ্যমন্ত্রী আশঙ্কা প্রকাশ  করেছিলেন ভোটার তালিকা সংশোধনের নামে কৌশলে এনআরসি চালু করার চেষ্টা করছে না তো বিজেপি সরকার? উত্তমকুমার ব্রজবাসীর ঘটনা সামনে আসার পরে বোঝা যায় মমতার আশঙ্কা সত্যি হতে চলেছে। এনআরসি-এর নাম করে দেশের একাংশের নাগরিকত্ব কেড়ে নিতে চাইছে। এই ইস্যুতে নিয়ে দিল্লিতে সংসদের বাইরে এবং ভিতরে এনআরসি ইস্যুত ঝড় তুলেছিলেন তৃণমূল সাংসদরা। উত্তমকুমার ব্রজবাসীকে এনআরসি নোটিশ ধরানোর প্রতিবাদে এক্স হ্যান্ডেলে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রের সরকার ও ডাবল ইঞ্জিন রাজ্যের সরকারগুলি রাজ্যে রাজ্যে যেভাবে হেনস্থা করে চলেছে তার উদাহরণ উত্তমকুমার ব্রজবাসী।

আরও পড়ুন: কেন্দ্রের গাফিলতি, বৃষ্টিতে বিধ্বস্ত পশ্চিমবঙ্গ: মানস ভুঁইঞা

অজ সোমবার এনআরসি ইস্যু, বাংলা ভাষা এ বাঙালির অপমান নিয়ে ঝড় উঠতে পারে একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে। কেন্দ্রের সরকারকে বার্তা দেবেন, তোমরা তোমরা নোটিশ পাঠাতে পারো, কিন্তু বাদ দিতে পারবে না বঙ্গবাসীর নাম।  এই প্রতিবাদে সামিল হতেই উত্তমকুমার ব্রজবাসীও আজ কলকাতায়। এবছর একুশে জুলাইয়ে এনআরসি ইস্যুতে ‘লাইভ মডেল’ হয়ে উঠবেন উত্তমকুমার ব্রজবাসী।

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

একুশের মঞ্চে মমতার সঙ্গে দেখা করতে কলকাতায় উত্তম কুমার

আপডেট : ২০ জুলাই ২০২৫, রবিবার

পুবের কলম প্রতিবেদক : কলকাতায় এলেন উত্তরকুমার ব্রজবাসী। আজন্ম পশ্চিমবঙ্গবাসী তিনি । কিন্তু তা সত্ত্বেও তার হাতে এনআরসি নোটিশ পাঠিয়েছে অসম সরকার। সাম্প্রতিক সময়ে তিনিই প্রথম  বঙ্গবাসী যাঁকে এনআরসি নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। সেই উত্তমকুমার  ব্রজবাসী একুশে জুলাই নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতা শুনতে উত্তরবঙ্গ থেকে কলকাতায় এসেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে কথা বলতে চান তিনি। উত্তরবঙ্গের জেলা নেতৃত্ব সূত্রে খবব, আজ  উত্তমকুমার ব্রজবাসীকে দেখা যাবে একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে। একুশে জুলাইযের সমাবেশে উত্তমকুমার জানাবেন হেনস্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা। অসম সরকারের কোপে জীবনের আশঙ্কার কথা। একই সঙ্গে শ্রদ্ধা জানাবেন তিনি শহিদদের।

রবিবার রাতে উত্তরবঙ্গ থেকে যে দলটি এসে কলকাতায় পৌঁছয়, সেখানে উত্তমকুমার ব্রজবাসীকে নিয়ে ছিল তুমুল উচ্ছ্বাস। কলকাতার করুণাময়ী বাসস্ট্যান্ডে যেখানে উত্তরবঙ্গ থেকে আসা সমর্থকরা ক্যাম্প করা হয়েছে, সেখানেই ছিলেন উত্তমকুমার। কীভাবে তিনি এনআরসি নোটিশ পেয়ে হায়রানির শিকার হয়েছেন, সেকথা তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে জানাতে চান। তাঁর পাড়ার সঙ্গীরাও চান মুখ্যমন্ত্রীকে কাছে থেকে দেখতে।

আরও পড়ুন: ফের নিম্নচাপের ভ্রুকুটি, কলকাতা সহ একাধিক জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের আভাস 

উল্লেখ্য, এবছর জানুয়ারি মাসে দিনহাটার চৌধুরীহাটের বাসিন্দা  উত্তমকুমারকে এনআরসি নোটিশ পাঠিয়েছিল অসমের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল। উত্তমকুমারের দাবি, তিনি কস্মিনকালেও অসমে যাননি। এমনকী তাঁর বাবার জন্মও কোচবিহারে। অথচ বিজেপি শাসিত অসম সরকারের পাঠানো নথিতে উত্তমকুমারের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের পরে কোনও বৈধ নথি ছাড়াই অসম সীমান্ত দিয়ে এদেশে ঢুকে পড়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। এই নোটিশ পাওয়ার পরে পুরো পরিবার আতঙ্কে ছিলেন। ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে তাঁকে অসমের বিশেষ আদালতে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল। এরপর উকিলকে দিয়ে সব নথি অসমে পাঠিয়েছেন উত্তমকুমার ব্রজবাসীর পরিবার। এই সময় তৃণমূলের নেতারা উত্তমকুমার ব্রজবাসীর পাশে এসে দাঁড়ায়। তৃণমূলের আহ্বানে এবং  আশ্বাসেই একুশে জুলাইয়ের সমাবেশে এসেছেন বলে জানান উত্তমকুমার ব্রজবাসী।

আরও পড়ুন: বাংলায় অনুপ্রবেশ বাড়ছে, মোদি-শাহর বক্তব্য খণ্ডন করল নীতি আয়োগের রিপোর্টই

দিঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের সময়েই মুখ্যমন্ত্রী আশঙ্কা প্রকাশ  করেছিলেন ভোটার তালিকা সংশোধনের নামে কৌশলে এনআরসি চালু করার চেষ্টা করছে না তো বিজেপি সরকার? উত্তমকুমার ব্রজবাসীর ঘটনা সামনে আসার পরে বোঝা যায় মমতার আশঙ্কা সত্যি হতে চলেছে। এনআরসি-এর নাম করে দেশের একাংশের নাগরিকত্ব কেড়ে নিতে চাইছে। এই ইস্যুতে নিয়ে দিল্লিতে সংসদের বাইরে এবং ভিতরে এনআরসি ইস্যুত ঝড় তুলেছিলেন তৃণমূল সাংসদরা। উত্তমকুমার ব্রজবাসীকে এনআরসি নোটিশ ধরানোর প্রতিবাদে এক্স হ্যান্ডেলে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রের সরকার ও ডাবল ইঞ্জিন রাজ্যের সরকারগুলি রাজ্যে রাজ্যে যেভাবে হেনস্থা করে চলেছে তার উদাহরণ উত্তমকুমার ব্রজবাসী।

আরও পড়ুন: কেন্দ্রের গাফিলতি, বৃষ্টিতে বিধ্বস্ত পশ্চিমবঙ্গ: মানস ভুঁইঞা

অজ সোমবার এনআরসি ইস্যু, বাংলা ভাষা এ বাঙালির অপমান নিয়ে ঝড় উঠতে পারে একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে। কেন্দ্রের সরকারকে বার্তা দেবেন, তোমরা তোমরা নোটিশ পাঠাতে পারো, কিন্তু বাদ দিতে পারবে না বঙ্গবাসীর নাম।  এই প্রতিবাদে সামিল হতেই উত্তমকুমার ব্রজবাসীও আজ কলকাতায়। এবছর একুশে জুলাইয়ে এনআরসি ইস্যুতে ‘লাইভ মডেল’ হয়ে উঠবেন উত্তমকুমার ব্রজবাসী।