২৮ জুলাই ২০২৫, সোমবার, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
‘যে কোনও নথিই জাল হতে পারে’

আধার ,ভোটার কার্ডকেও পরিচয়পত্রের তালিকায় রাখুন, SIR নিয়ে বলল সুপ্রিম কোর্ট

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২৫, সোমবার
  • / 14

নয়াদিল্লি :  SIR নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে বড় ধাক্কা খেল নির্বাচন কমিশন।  সোমবার শীর্ষ আদালত সাফ জানায়, যে কোনও নথিপত্রই জাল করা যেতে পারে। তাই আধার কার্ড এবং ভোটার কার্ড-দু’টোকেই বিশেষ নিবিড় সংশোধনীতে গ্রহণযোগ্য় নথি হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।  যদিও এই মর্মে আগেও পরামর্শ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। কিন্তু সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে কমিশন। বলা বাহুল্য, বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ চলছে। এই প্রক্রিয়ার পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন বা সংক্ষেপে SIR।  বিহারে SIR নিয়ে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। সেগুলি একত্র করে শুনানি শুরু হয়েছে বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির বেঞ্চে। শুনানিতে আজ বিচারপতি সুর্যকান্ত জানিয়ে দেন যে, “যে কোনও নথিই নকল করা সম্ভব। তাই বলে কী আপনারা আধার বা এপিক কার্ডকে গ্রহণযোগ্য মানবেন না?”

বিহারে নিবিড় ভোটার তালিকা সংশোধনের বিরুদ্ধে সোমবারের শুনানিতে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশে কোনও স্থগিতাদেশ দিতে রাজি হলেন না বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি। আগস্টের প্রথম দিনে এই খসড়া তালিকা প্রকাশ করার কথা নির্বাচন কমিশনের।

আরও পড়ুন: বিহারে রাতারাতি ১.২৬ কোটি ভোটার মুছে দিল নির্বাচন কমিশন: সাকেত

তবে বিচারপতিরা আধার কার্ড এবং ভোটার কার্ডকে বৈধ নথি হিসেবে গ্রহণ করতে বলেন কমিশনের কৌঁসুলিকে। তখন কৌঁসুলি রাকেশ দ্বিবেদী বলেন, আধার এবং ভোটার কার্ড প্রচুর জাল হচ্ছে। এর আগে বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়াও ১০ জুলাই বলেছিলেন একই কথা। তখনও কমিশনের কৌঁসুলি জানান, আধার এবং ভোটার কার্ডকে বৈধ নথি মানা হলে অনেক জাল ভোটারের নাম থেকে যাবে।

আরও পড়ুন: কুকুরের নামে ভোটার কার্ড! কমিশনকে তোপ দাগলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

কমিশন ইতিমধ্যে শীর্ষ আদালতে যে হলফনামা পেশ করেছে তাতেও আধার এবং ভোটার কার্ডকে বৈধ নথি হিসেবে না মানার কথা বলা হয়েছে। এদিন বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, রেশন কার্ড জাল করা হচ্ছে, একথা মানি। কিন্তু আধার কার্ড এবং ভোটার কার্ডের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ করলে মুশকিল। এখনও এই দুই কার্ডের পবিত্রতা মানা হয়। জাল আধার কার্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পৃথিবীতে একটা জিনিসের নাম করুন, যেটার নকল নেই। সব জিনিসই জাল করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ছয় মাসে ২২ লক্ষ মৃত্যু? নির্বাচন কমিশনের পরিসংখ্যান ঘিরে বিস্ফোরক আরজেডির

 

জাল কার্ড ধরার পদ্ধতি বের করুন। করে ধরুন। প্রতিটি কার্ড ভালো করে যাচাই করুন। তাতে আপত্তি নেই। তবে বিচারপতির এই সব যুক্তির পরে কমিশনের কৌঁসুলি কিছু বলেননি। এদিন বিচারপতি সূর্য কান্তের সঙ্গে প্রধান বিচারপতি গাভাই এর পূর্ব নির্ধারিত বৈঠক থাকায় এই মামলার শুনানি বেশিক্ষণ চলেনি।

 

তবে বিচারপতি সূর্য কান্ত মামলাকারীদের আশ্বাস দিয়েছেন, আগামীকাল মঙ্গলবার বিশদে শুনানি হবে। তাতে যদি দরকার পড়ে কমিশনের পুরো প্রক্রিয়া খারিজ করে দেওয়া হবে। মঙ্গলবারই যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তা নেওয়া হবে। তবে অপ্রয়োজনীয় আদেশ দিয়ে লাভ নেই। আগে কমিশন খসড়া তালিকা প্রকাশ করুক। কমিশনের আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদীকে বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, গণহারে নাম বাদ না দিয়ে যত গণ হারে নাম তালিকায় যাতে অন্তর্ভুক্ত করা যায়, তা দেখুন।

এদিন অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (এডি আর) এর আইনজীবী বিচারপতিদের অনুরোধ করেন যে, খসড়া তালিকায় যাতে সংশোধনের সুযোগ থাকে তা দেখতে হবে। তখন বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, খসড়া মানেই তো চূড়ান্ত তালিকা নয়। সংশোধনের সুযোগ আলবাত থাকবে। কেন কোনও রকম স্থগিতাদেশ দেওয়া হল না, তাও ব্যাখ্যা করে বলেন, ১০ জুনের আবেদনে কোনও পক্ষ কিন্তু স্থগিতাদেশ চায়নি। এখন এইসব কথা উঠছে কেন?

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

‘যে কোনও নথিই জাল হতে পারে’

আধার ,ভোটার কার্ডকেও পরিচয়পত্রের তালিকায় রাখুন, SIR নিয়ে বলল সুপ্রিম কোর্ট

আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২৫, সোমবার

নয়াদিল্লি :  SIR নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে বড় ধাক্কা খেল নির্বাচন কমিশন।  সোমবার শীর্ষ আদালত সাফ জানায়, যে কোনও নথিপত্রই জাল করা যেতে পারে। তাই আধার কার্ড এবং ভোটার কার্ড-দু’টোকেই বিশেষ নিবিড় সংশোধনীতে গ্রহণযোগ্য় নথি হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।  যদিও এই মর্মে আগেও পরামর্শ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। কিন্তু সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে কমিশন। বলা বাহুল্য, বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ চলছে। এই প্রক্রিয়ার পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন বা সংক্ষেপে SIR।  বিহারে SIR নিয়ে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। সেগুলি একত্র করে শুনানি শুরু হয়েছে বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির বেঞ্চে। শুনানিতে আজ বিচারপতি সুর্যকান্ত জানিয়ে দেন যে, “যে কোনও নথিই নকল করা সম্ভব। তাই বলে কী আপনারা আধার বা এপিক কার্ডকে গ্রহণযোগ্য মানবেন না?”

বিহারে নিবিড় ভোটার তালিকা সংশোধনের বিরুদ্ধে সোমবারের শুনানিতে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশে কোনও স্থগিতাদেশ দিতে রাজি হলেন না বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি। আগস্টের প্রথম দিনে এই খসড়া তালিকা প্রকাশ করার কথা নির্বাচন কমিশনের।

আরও পড়ুন: বিহারে রাতারাতি ১.২৬ কোটি ভোটার মুছে দিল নির্বাচন কমিশন: সাকেত

তবে বিচারপতিরা আধার কার্ড এবং ভোটার কার্ডকে বৈধ নথি হিসেবে গ্রহণ করতে বলেন কমিশনের কৌঁসুলিকে। তখন কৌঁসুলি রাকেশ দ্বিবেদী বলেন, আধার এবং ভোটার কার্ড প্রচুর জাল হচ্ছে। এর আগে বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়াও ১০ জুলাই বলেছিলেন একই কথা। তখনও কমিশনের কৌঁসুলি জানান, আধার এবং ভোটার কার্ডকে বৈধ নথি মানা হলে অনেক জাল ভোটারের নাম থেকে যাবে।

আরও পড়ুন: কুকুরের নামে ভোটার কার্ড! কমিশনকে তোপ দাগলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

কমিশন ইতিমধ্যে শীর্ষ আদালতে যে হলফনামা পেশ করেছে তাতেও আধার এবং ভোটার কার্ডকে বৈধ নথি হিসেবে না মানার কথা বলা হয়েছে। এদিন বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, রেশন কার্ড জাল করা হচ্ছে, একথা মানি। কিন্তু আধার কার্ড এবং ভোটার কার্ডের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ করলে মুশকিল। এখনও এই দুই কার্ডের পবিত্রতা মানা হয়। জাল আধার কার্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পৃথিবীতে একটা জিনিসের নাম করুন, যেটার নকল নেই। সব জিনিসই জাল করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ছয় মাসে ২২ লক্ষ মৃত্যু? নির্বাচন কমিশনের পরিসংখ্যান ঘিরে বিস্ফোরক আরজেডির

 

জাল কার্ড ধরার পদ্ধতি বের করুন। করে ধরুন। প্রতিটি কার্ড ভালো করে যাচাই করুন। তাতে আপত্তি নেই। তবে বিচারপতির এই সব যুক্তির পরে কমিশনের কৌঁসুলি কিছু বলেননি। এদিন বিচারপতি সূর্য কান্তের সঙ্গে প্রধান বিচারপতি গাভাই এর পূর্ব নির্ধারিত বৈঠক থাকায় এই মামলার শুনানি বেশিক্ষণ চলেনি।

 

তবে বিচারপতি সূর্য কান্ত মামলাকারীদের আশ্বাস দিয়েছেন, আগামীকাল মঙ্গলবার বিশদে শুনানি হবে। তাতে যদি দরকার পড়ে কমিশনের পুরো প্রক্রিয়া খারিজ করে দেওয়া হবে। মঙ্গলবারই যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তা নেওয়া হবে। তবে অপ্রয়োজনীয় আদেশ দিয়ে লাভ নেই। আগে কমিশন খসড়া তালিকা প্রকাশ করুক। কমিশনের আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদীকে বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, গণহারে নাম বাদ না দিয়ে যত গণ হারে নাম তালিকায় যাতে অন্তর্ভুক্ত করা যায়, তা দেখুন।

এদিন অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (এডি আর) এর আইনজীবী বিচারপতিদের অনুরোধ করেন যে, খসড়া তালিকায় যাতে সংশোধনের সুযোগ থাকে তা দেখতে হবে। তখন বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, খসড়া মানেই তো চূড়ান্ত তালিকা নয়। সংশোধনের সুযোগ আলবাত থাকবে। কেন কোনও রকম স্থগিতাদেশ দেওয়া হল না, তাও ব্যাখ্যা করে বলেন, ১০ জুনের আবেদনে কোনও পক্ষ কিন্তু স্থগিতাদেশ চায়নি। এখন এইসব কথা উঠছে কেন?