২৭ নভেম্বর ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

একশ দিনের কাজের বকেয়া তালিকায় নামই নেই পশ্চিমবঙ্গের

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ২৫ জুলাই ২০২৫, শুক্রবার
  • / 363

পুবের কলম প্রতিবেদক : কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল ১লা আগস্ট থেকে রাজ্যে ১০০ দিনের কাজ পুরো চালু করতে হবে কেন্দ্রকে। আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল কেন্দ্র নজরদারি চালাতে পারে, শর্ত  দিতে পারে কিন্তু কাজ বন্ধ রাখা আইন সংগত নয়। আদালতের এই পর্যবেক্ষণের সূত্র ধরেই রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়ান কেন্দ্রীয় গ্রামের মন্ত্রকের কাছে জানতে চেয়েছিলেন ২০২৪- ২৫ অর্থবর্ষ পর্যন্ত একশ দিনের কাজ প্রকল্পে কোন রাজ্যের কত বকেয়া রয়েছে?

এই প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকদের তথ্য তুলে ধরেছেন সেখানে। ৩৩ টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নাম থাকলেও পশ্চিমবঙ্গের নামই নেই। তালিকায় এই নাম না থাকা নিয়ে আবার নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও ব্রায়ান তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, বাংলা কি ভারতের মানচিত্রের বাইরে? উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তালিকা থেকে বাদ দেওয়াকে রাজনৈতিক অবরোধ হিসেবে দেখছে তৃণমূল।

আরও পড়ুন: Supreme Court on VC Appointment: ১২ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগে সায় ললিত কমিটির

দলের তরফে বলা হয়েছে এটা শুধু প্রশাসনিক অবহেলা নয়, রাজ্যবাসীকে অপমানও। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি কেন্দ্র ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে বাংলার প্রায় ৭০০ কোটি টাকা আটকে রেখেছে। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে, এই নিয়ে জব কার্ড  দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে আন্দোলন করা হয়েছে।রাজ্য সরকারের তরফে একাধিকবার কেন্দ্রকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারপরেও কোন ফল হয়নি।
বঞ্চনা প্রসঙ্গে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন এটা কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি হিংসা রাজনীতি। বাংলা থেকে পরাজিত হয়ে প্রতিশোধ নিচ্ছে বিজেপি। বারে বারে বাংলাকে অপমান করার জবাব বাংলার মানুষ ভোট বাক্সে দেব্‌ মন্তব্য করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন: দক্ষিণবঙ্গের পাঁচ জেলায় ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি

রাজনৈতিক মহলের মতে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতে মোদির এই অবস্থান মানুষের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে।
ডেরেক ও ব্রায়ানের প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক যে তথ্য দিয়েছে সেখানে বলা হয়েছে, ২০২৪ -২৫ অর্থবর্ষে একুশে জুলাই পর্যন্ত মানবাধায় রাজ্যগুলিকে মোট ৪৪, ৪৭৯. ৭৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এবং কোনো রাজ্যের কোনো বকেয়া নেই। কিন্তু এই জবাবি রিপোর্টে পশ্চিমবঙ্গের কোনও নামই উল্লেখ করা হয়নি।

আরও পড়ুন: Breaking: ১১৭ দিনের মাথায় প্রকাশিত রাজ্য জয়েন্টের ফলাফল

 

কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে বাংলার নাম তো উল্লেখ করা হয়নি, সেই সঙ্গে তথ্যগত ভুল রয়েছে বলেও দাবি করছে তৃণমূল। এই প্রসঙ্গে ডেরেক ও ব্রায়ান বলেন, গত অর্থবর্ষের তুলনায় চলতি অর্থবর্ষে সারা দেশের শ্রমিকের সংখ্যা ৮ কোটি ৩৪ লক্ষ থেকে কমে সাত কোটি ৮৮ লক্ষ হয়েছে। সেই সঙ্গে কমেছে গড় কর্ম দিবসের পরিমাণ, ৫২ থেকে কমে তা ৫০ হয়েছে। কেন্দ্রীয় গ্রামউন্নয়নমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান যে তালিকা প্রকাশ করেছেন সেখানে বাংলাকে কোনো জায়গাই দেওয়া হয়নি।

শুক্রবার কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের উত্তরের পরে কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করেছেন রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন এইভাবে গায়ের জোরে ক্ষমতার জোরে বাংলার নাম তালিকা থেকে বাদ দিতে পারেন না। আপনারা কিন্তু মনে রাখবেন আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বাংলার মানুষ বিজেপিকে ব্রাত্য করবে।।

অন্যদিকে রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক কুনাল ঘোষ আরও স্পষ্ট করে দেন কেন্দ্রের নির্লজ্জতা। তিনি বলেন বিজেপি পুরোদস্তুর বঞ্চনা করছে পশ্চিমবঙ্গকে। আদালতে বললেও কোন কাজ হচ্ছে না। বাংলা থেকে করের টাকা তুলে নিয়ে যাচ্ছে। অথচ অনিয়মের দোহাই দিয়ে বাংলাকে প্রাপ্য টাকা দিচ্ছে না। উত্তরপ্রদেশের ব্যাপক দুর্নীতি, টাকা থাকতেও সেই টাকা তারা পেয়ে যাচ্ছে।

বাংলার শাসকদলের পাশাপাশি বিজেপির নির্লজ্জ তালিকা প্রকাশ নিয়ে সরব হয়েছে ইন্ডিয়া জোটের সদস্য কংগ্রেসও। কংগ্রেসের দলীয় মুখপাত্র জয়রাম রমেশ বলেন একমাত্র পশ্চিমবঙ্গের নামই তালিকায় নেই। এটা অত্যন্ত অসাংবিধানিক।

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

একশ দিনের কাজের বকেয়া তালিকায় নামই নেই পশ্চিমবঙ্গের

আপডেট : ২৫ জুলাই ২০২৫, শুক্রবার

পুবের কলম প্রতিবেদক : কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল ১লা আগস্ট থেকে রাজ্যে ১০০ দিনের কাজ পুরো চালু করতে হবে কেন্দ্রকে। আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল কেন্দ্র নজরদারি চালাতে পারে, শর্ত  দিতে পারে কিন্তু কাজ বন্ধ রাখা আইন সংগত নয়। আদালতের এই পর্যবেক্ষণের সূত্র ধরেই রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়ান কেন্দ্রীয় গ্রামের মন্ত্রকের কাছে জানতে চেয়েছিলেন ২০২৪- ২৫ অর্থবর্ষ পর্যন্ত একশ দিনের কাজ প্রকল্পে কোন রাজ্যের কত বকেয়া রয়েছে?

এই প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকদের তথ্য তুলে ধরেছেন সেখানে। ৩৩ টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নাম থাকলেও পশ্চিমবঙ্গের নামই নেই। তালিকায় এই নাম না থাকা নিয়ে আবার নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও ব্রায়ান তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, বাংলা কি ভারতের মানচিত্রের বাইরে? উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তালিকা থেকে বাদ দেওয়াকে রাজনৈতিক অবরোধ হিসেবে দেখছে তৃণমূল।

আরও পড়ুন: Supreme Court on VC Appointment: ১২ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগে সায় ললিত কমিটির

দলের তরফে বলা হয়েছে এটা শুধু প্রশাসনিক অবহেলা নয়, রাজ্যবাসীকে অপমানও। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি কেন্দ্র ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে বাংলার প্রায় ৭০০ কোটি টাকা আটকে রেখেছে। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে, এই নিয়ে জব কার্ড  দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে আন্দোলন করা হয়েছে।রাজ্য সরকারের তরফে একাধিকবার কেন্দ্রকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারপরেও কোন ফল হয়নি।
বঞ্চনা প্রসঙ্গে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন এটা কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি হিংসা রাজনীতি। বাংলা থেকে পরাজিত হয়ে প্রতিশোধ নিচ্ছে বিজেপি। বারে বারে বাংলাকে অপমান করার জবাব বাংলার মানুষ ভোট বাক্সে দেব্‌ মন্তব্য করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন: দক্ষিণবঙ্গের পাঁচ জেলায় ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি

রাজনৈতিক মহলের মতে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতে মোদির এই অবস্থান মানুষের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে।
ডেরেক ও ব্রায়ানের প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক যে তথ্য দিয়েছে সেখানে বলা হয়েছে, ২০২৪ -২৫ অর্থবর্ষে একুশে জুলাই পর্যন্ত মানবাধায় রাজ্যগুলিকে মোট ৪৪, ৪৭৯. ৭৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এবং কোনো রাজ্যের কোনো বকেয়া নেই। কিন্তু এই জবাবি রিপোর্টে পশ্চিমবঙ্গের কোনও নামই উল্লেখ করা হয়নি।

আরও পড়ুন: Breaking: ১১৭ দিনের মাথায় প্রকাশিত রাজ্য জয়েন্টের ফলাফল

 

কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে বাংলার নাম তো উল্লেখ করা হয়নি, সেই সঙ্গে তথ্যগত ভুল রয়েছে বলেও দাবি করছে তৃণমূল। এই প্রসঙ্গে ডেরেক ও ব্রায়ান বলেন, গত অর্থবর্ষের তুলনায় চলতি অর্থবর্ষে সারা দেশের শ্রমিকের সংখ্যা ৮ কোটি ৩৪ লক্ষ থেকে কমে সাত কোটি ৮৮ লক্ষ হয়েছে। সেই সঙ্গে কমেছে গড় কর্ম দিবসের পরিমাণ, ৫২ থেকে কমে তা ৫০ হয়েছে। কেন্দ্রীয় গ্রামউন্নয়নমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান যে তালিকা প্রকাশ করেছেন সেখানে বাংলাকে কোনো জায়গাই দেওয়া হয়নি।

শুক্রবার কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের উত্তরের পরে কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করেছেন রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন এইভাবে গায়ের জোরে ক্ষমতার জোরে বাংলার নাম তালিকা থেকে বাদ দিতে পারেন না। আপনারা কিন্তু মনে রাখবেন আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বাংলার মানুষ বিজেপিকে ব্রাত্য করবে।।

অন্যদিকে রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক কুনাল ঘোষ আরও স্পষ্ট করে দেন কেন্দ্রের নির্লজ্জতা। তিনি বলেন বিজেপি পুরোদস্তুর বঞ্চনা করছে পশ্চিমবঙ্গকে। আদালতে বললেও কোন কাজ হচ্ছে না। বাংলা থেকে করের টাকা তুলে নিয়ে যাচ্ছে। অথচ অনিয়মের দোহাই দিয়ে বাংলাকে প্রাপ্য টাকা দিচ্ছে না। উত্তরপ্রদেশের ব্যাপক দুর্নীতি, টাকা থাকতেও সেই টাকা তারা পেয়ে যাচ্ছে।

বাংলার শাসকদলের পাশাপাশি বিজেপির নির্লজ্জ তালিকা প্রকাশ নিয়ে সরব হয়েছে ইন্ডিয়া জোটের সদস্য কংগ্রেসও। কংগ্রেসের দলীয় মুখপাত্র জয়রাম রমেশ বলেন একমাত্র পশ্চিমবঙ্গের নামই তালিকায় নেই। এটা অত্যন্ত অসাংবিধানিক।