০১ অক্টোবর ২০২৫, বুধবার, ১৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কি করেছে কেষ্ট?অনুব্রতর পাশে মমতা

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ১৪ অগাস্ট ২০২২, রবিবার
  • / 78

পুবের কলম প্রতিবেদক: কি করেছে কেষ্ট? কেন কেষ্টকে গ্রেফতার করা হল? অনুব্রত মণ্ডলের পাশে দাঁড়িয়ে বিজেপিকে নিশানা করে এই প্রশ্নই ছুঁড়ে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

 

আরও পড়ুন: Chetla Agrani Club: চেতলা অগ্রণীর পুজো মণ্ডপে আগুন

কি করেছে কেষ্ট?অনুব্রতর পাশে মমতা

আরও পড়ুন: দিল্লিতে ED অফিসে হাজিরা দিলেন মিমি চক্রবর্তী

রবিবার বেহালার ম্যান্টনের সভা থেকে মমতার মন্তব্য থেকে কেষ্টর প্রতি তাঁর স্নেহ বারবার প্রকাশ পেয়েছে। মমতা বলেন, ‘সত্যি একটা দু’টো কেস নিয়ে আপনারা এজেন্সি করুন আমার আপত্তি নেই। যদি সত্যি কেউ অন্যায় করে। আইন আইনের পথে চলবে। পরশুদিন কেষ্টকে গ্রেফতার করলেন কেন? কী করেছিল কেষ্ট? যতবার ভোট হয়েছে ওকে আপনারা ঘরবন্দি করে রেখে দিয়েছেন। একটা ভোটেও ওকে বেরোতে দেননি। আসানসোলের ভোটে আমাদের বিধায়ককে বেরোতে দেয়নি। তবু ওর কেন্দ্র থেকে ১ লক্ষ ভোটে শত্রুঘ্ন সিনহা জিতেছেন। কেষ্টকে তো আটকে রেখে দেয়। কেষ্টকে জেলে আটকালে কী হবে? কেষ্টরা ভয় করে না। একটা কেষ্টকে ধরলে লক্ষ কেষ্ট রাস্তায় নামবে।’

আরও পড়ুন: betting app case: অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তীকে ইডির তলব

কি করেছে কেষ্ট?অনুব্রতর পাশে মমতা

কেষ্ট সম্পর্কে মমতা আরও বলেন, ‘ছেলেটা গত দু’বছর কষ্ট পেয়েছে। আমি জানি। ওর বউ ক্যানসারে মারা গেছে। প্রতিদিন কলকাতা আর বোলপুর করত। এমনকী গতবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় ওর বউ হাসপাতালে ভর্তি। অপারেশন হচ্ছে। আমাকে একদিন কেষ্ট বলল, ‘দিদি জানো তো তোমার বউমা বলছে আমাকে দেখতে হবে না, যাও দলের কাজ কর’।’’

 

পদের প্রতি কেষ্টর কোনও মোহ নেই বোঝাতে মমতা বলেন, ‘আমি একদিন কেষ্টকে জিজ্ঞাসা করলাম, তুই তো কিছুই চাস না। ওকে এমএলএ হতে বলুন, হবে না। ওকে এমপি হতে বলুন হবে না। আমি ওকে অনেকবার বলেছি, রাজ্যসভায় যা। এখন তো আমাদের ক্ষমতা আছে রাজ্যসভায় পাঠানোর। যেমন শুভাশিসকে আমরা এখান থেকে পাঠিয়েছি। কেষ্ট বলে, না দিদি।

 

মমতার কথায়, ‘ওদের এজেন্সির কিছু লোক রয়েছে, তাদের টাকা দিয়ে পোষে। মাঝরাতে কেন সিবিআই বাড়িতে ঢুকছে?’ কেষ্টর বাড়িতে সিবিআই তাণ্ডব চালিয়েছে বলেও দাবি করেন মমতা।

 

উল্লেখ্য, গরু পাচার মামলায় বৃহস্পতিবার বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করে সিবিআই। এই প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘সব খবর সূত্রের মাধ্যমে জানা গেছে। হোয়াট ইজ সূত্র। সূত্র কী মলমূত্র?’ গরু পাচার নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে নিশানা করে তৃণমূল নেত্রীর প্রশ্ন, গরু পাচার, কয়লা পাচার ঠেকানোর দায়িত্ব কেন্দ্রের।

 

কেন্দ্রীয় বাহিনীই দেশের সীমান্ত দেখভাল করে। কয়লার ব্যাপারটা ওরাই দেখে। পুরোটাই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীন। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও কীভাবে সীমান্ত দিয়ে গরু পাচার হয়েছে? কয়লা পাচারই কীভাবে হল? তোমরা ঠিকমতো দায়িত্ব পালন না করলে দায় কী আমাদের? সিপিএম আমলে দুর্নীতির ফাইল পুড়িয়ে দিয়েছে। কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরোচ্ছে, ব্যাঙ্ক লুট হচ্ছে।

 

তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ২০২৪ সালে নরেন্দ্র মোদি জিতবেন না। মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করবেই। অনেক দিন চুপ করে ছিলাম। কিন্তু, আর নয়। এবার আরও বড় আন্দোলন শুরু হবে। এরপরই মমতা বলেন, ১৫ অগাস্ট স্বাধীনতা দিবস। তার পর দিনই ‘খেলা হবে দিবস’। সে দিন থেকেই শুরু হবে নতুন রাজনৈতিক লড়াই। নতুন করে আর একটা রাজনৈতিক লড়াই শুরু হবে। দুপুর ৩টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত নাগাড়ে মিছিল করুন। বিজেপিকে নিশানা করে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার দেশের ইতিহাস পাল্টে দিচ্ছে। আমি যাতে প্রতিবাদ করতে না পারি তাই ভয় দেখাচ্ছে। মরে যাব, কিন্তু মাথা নত করব না। কতজনকে গ্রেফতার করবে? আমি জেলভারে আন্দোলনের ডাক দেব। আমাদের পারধীন করে রেখে দিয়েছে, ভাঙতে হবে শিকল।

কি করেছে কেষ্ট?অনুব্রতর পাশে মমতা

দুপুর ৩টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত নাগাড়ে মিছিল করুন। একাধিক রাজ্যে চক্রান্ত করে সরকার ভেঙেছে বিজেপি। সেই কাজ বাংলাতেও করার চেষ্টা করছে। ওরা বাংলা ভাঙার চেষ্টা করছে। তৃণমূলকে দুর্বল করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু পারবে না। এখানে ওসব চলে না। শুধু তৃণমূল নয়, আমাদের অপিসারদেরও ভয় দেখাচ্ছে। আমার ৮জন অপিসারকে ডেকে পাঠিয়েছে।

 

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দিল্লিতে বৈঠক প্রসঙ্গে মমতা বলেন, সিপিএমের ইয়েচুরি প্রধানমন্ত্রীর কাছে গেলে সেটিং হয় না। আমি গেলে সেটিং হয়? প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো মেনে বৈঠক হয়েছে। দিল্লি গিয়ে রাজ্যের প্রাপ্য টাকা চাইব না?

কি করেছে কেষ্ট?অনুব্রতর পাশে মমতা

রাজ্যের থেকেই তো টাকা তুলে নিয়ে যায়। সেই টাকাই চাইতে গিয়েছিলাম। অনুব্রত মণ্ডল নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার-বিজেপিকে তুলোধনা করলেও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘গড়’ বেহালায় দাড়িয়ে পার্থ সম্পর্কে একটি কথাও বলেননি মমতা।

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

কি করেছে কেষ্ট?অনুব্রতর পাশে মমতা

আপডেট : ১৪ অগাস্ট ২০২২, রবিবার

পুবের কলম প্রতিবেদক: কি করেছে কেষ্ট? কেন কেষ্টকে গ্রেফতার করা হল? অনুব্রত মণ্ডলের পাশে দাঁড়িয়ে বিজেপিকে নিশানা করে এই প্রশ্নই ছুঁড়ে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

 

আরও পড়ুন: Chetla Agrani Club: চেতলা অগ্রণীর পুজো মণ্ডপে আগুন

কি করেছে কেষ্ট?অনুব্রতর পাশে মমতা

আরও পড়ুন: দিল্লিতে ED অফিসে হাজিরা দিলেন মিমি চক্রবর্তী

রবিবার বেহালার ম্যান্টনের সভা থেকে মমতার মন্তব্য থেকে কেষ্টর প্রতি তাঁর স্নেহ বারবার প্রকাশ পেয়েছে। মমতা বলেন, ‘সত্যি একটা দু’টো কেস নিয়ে আপনারা এজেন্সি করুন আমার আপত্তি নেই। যদি সত্যি কেউ অন্যায় করে। আইন আইনের পথে চলবে। পরশুদিন কেষ্টকে গ্রেফতার করলেন কেন? কী করেছিল কেষ্ট? যতবার ভোট হয়েছে ওকে আপনারা ঘরবন্দি করে রেখে দিয়েছেন। একটা ভোটেও ওকে বেরোতে দেননি। আসানসোলের ভোটে আমাদের বিধায়ককে বেরোতে দেয়নি। তবু ওর কেন্দ্র থেকে ১ লক্ষ ভোটে শত্রুঘ্ন সিনহা জিতেছেন। কেষ্টকে তো আটকে রেখে দেয়। কেষ্টকে জেলে আটকালে কী হবে? কেষ্টরা ভয় করে না। একটা কেষ্টকে ধরলে লক্ষ কেষ্ট রাস্তায় নামবে।’

আরও পড়ুন: betting app case: অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তীকে ইডির তলব

কি করেছে কেষ্ট?অনুব্রতর পাশে মমতা

কেষ্ট সম্পর্কে মমতা আরও বলেন, ‘ছেলেটা গত দু’বছর কষ্ট পেয়েছে। আমি জানি। ওর বউ ক্যানসারে মারা গেছে। প্রতিদিন কলকাতা আর বোলপুর করত। এমনকী গতবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় ওর বউ হাসপাতালে ভর্তি। অপারেশন হচ্ছে। আমাকে একদিন কেষ্ট বলল, ‘দিদি জানো তো তোমার বউমা বলছে আমাকে দেখতে হবে না, যাও দলের কাজ কর’।’’

 

পদের প্রতি কেষ্টর কোনও মোহ নেই বোঝাতে মমতা বলেন, ‘আমি একদিন কেষ্টকে জিজ্ঞাসা করলাম, তুই তো কিছুই চাস না। ওকে এমএলএ হতে বলুন, হবে না। ওকে এমপি হতে বলুন হবে না। আমি ওকে অনেকবার বলেছি, রাজ্যসভায় যা। এখন তো আমাদের ক্ষমতা আছে রাজ্যসভায় পাঠানোর। যেমন শুভাশিসকে আমরা এখান থেকে পাঠিয়েছি। কেষ্ট বলে, না দিদি।

 

মমতার কথায়, ‘ওদের এজেন্সির কিছু লোক রয়েছে, তাদের টাকা দিয়ে পোষে। মাঝরাতে কেন সিবিআই বাড়িতে ঢুকছে?’ কেষ্টর বাড়িতে সিবিআই তাণ্ডব চালিয়েছে বলেও দাবি করেন মমতা।

 

উল্লেখ্য, গরু পাচার মামলায় বৃহস্পতিবার বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করে সিবিআই। এই প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘সব খবর সূত্রের মাধ্যমে জানা গেছে। হোয়াট ইজ সূত্র। সূত্র কী মলমূত্র?’ গরু পাচার নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে নিশানা করে তৃণমূল নেত্রীর প্রশ্ন, গরু পাচার, কয়লা পাচার ঠেকানোর দায়িত্ব কেন্দ্রের।

 

কেন্দ্রীয় বাহিনীই দেশের সীমান্ত দেখভাল করে। কয়লার ব্যাপারটা ওরাই দেখে। পুরোটাই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীন। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও কীভাবে সীমান্ত দিয়ে গরু পাচার হয়েছে? কয়লা পাচারই কীভাবে হল? তোমরা ঠিকমতো দায়িত্ব পালন না করলে দায় কী আমাদের? সিপিএম আমলে দুর্নীতির ফাইল পুড়িয়ে দিয়েছে। কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরোচ্ছে, ব্যাঙ্ক লুট হচ্ছে।

 

তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ২০২৪ সালে নরেন্দ্র মোদি জিতবেন না। মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করবেই। অনেক দিন চুপ করে ছিলাম। কিন্তু, আর নয়। এবার আরও বড় আন্দোলন শুরু হবে। এরপরই মমতা বলেন, ১৫ অগাস্ট স্বাধীনতা দিবস। তার পর দিনই ‘খেলা হবে দিবস’। সে দিন থেকেই শুরু হবে নতুন রাজনৈতিক লড়াই। নতুন করে আর একটা রাজনৈতিক লড়াই শুরু হবে। দুপুর ৩টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত নাগাড়ে মিছিল করুন। বিজেপিকে নিশানা করে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার দেশের ইতিহাস পাল্টে দিচ্ছে। আমি যাতে প্রতিবাদ করতে না পারি তাই ভয় দেখাচ্ছে। মরে যাব, কিন্তু মাথা নত করব না। কতজনকে গ্রেফতার করবে? আমি জেলভারে আন্দোলনের ডাক দেব। আমাদের পারধীন করে রেখে দিয়েছে, ভাঙতে হবে শিকল।

কি করেছে কেষ্ট?অনুব্রতর পাশে মমতা

দুপুর ৩টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত নাগাড়ে মিছিল করুন। একাধিক রাজ্যে চক্রান্ত করে সরকার ভেঙেছে বিজেপি। সেই কাজ বাংলাতেও করার চেষ্টা করছে। ওরা বাংলা ভাঙার চেষ্টা করছে। তৃণমূলকে দুর্বল করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু পারবে না। এখানে ওসব চলে না। শুধু তৃণমূল নয়, আমাদের অপিসারদেরও ভয় দেখাচ্ছে। আমার ৮জন অপিসারকে ডেকে পাঠিয়েছে।

 

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দিল্লিতে বৈঠক প্রসঙ্গে মমতা বলেন, সিপিএমের ইয়েচুরি প্রধানমন্ত্রীর কাছে গেলে সেটিং হয় না। আমি গেলে সেটিং হয়? প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো মেনে বৈঠক হয়েছে। দিল্লি গিয়ে রাজ্যের প্রাপ্য টাকা চাইব না?

কি করেছে কেষ্ট?অনুব্রতর পাশে মমতা

রাজ্যের থেকেই তো টাকা তুলে নিয়ে যায়। সেই টাকাই চাইতে গিয়েছিলাম। অনুব্রত মণ্ডল নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার-বিজেপিকে তুলোধনা করলেও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘গড়’ বেহালায় দাড়িয়ে পার্থ সম্পর্কে একটি কথাও বলেননি মমতা।